শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
ভবদহ কিংবা জলাবদ্ধ জীবনের গল্প
সায়মন স্বপন
ভেসে গেছে বসতির খুঁটি, ডুবে যাওয়া স্বপ্নের শরীরে দাঁড়িয়ে খুঁজে ফেরে হারানো বেসাতি। দিন-ক্ষণ মেপে
শামুক-পায়ে হেঁটে যাচ্ছে দুঃখবতী সময়গুলো, সেই সাথে ভেসে যাচ্ছেÑ চ্যাপ্টাপেটের হাহাকার। দ্যাখো, জলবায়ুর জ্যামিতিক ছকে রোদেলা দিন আর বরষাদল পাশাপাশি শুয়ে আছে, চোখে চোখ রেখে।
অথচ, কানাই কিংবা করিমদের চোখের জলে লেখা নেই কোনো রঙের নাম। শুধু পথের ধারে সারি
সারি ভাসমান বসতির টংঘর আর সাদাকালো বাসনের সংসার। শুকনো মুখগুলোর দিকে তাকিয়ে দ্যাখো, আঁতুড়
জড়ানো অপেক্ষার চোখে জলহীন কান্নার ক্লেদ।
আমি
রাসেল আবদুর রহমান
আমি কিন্তু খুব সাধারণ
বনের পাখি যেমন
ডানায় তার উড়ন যাদু
কণ্ঠে মিষ্টি গান!
চাইলে আমি হতে পারি
গাইতে পারি সুখগান!
আমাকে নিয়ে ভাববে যদি বলিও
পাখির পাখার পালক যেমন তেমন কোমল হবো।
আমার আছে প্রেমের তরী ইচ্ছে যদি হয়
জীবনহাটে চলার পথে চড়িও আমার নায়।।
সুখের নদী খুলে দিব দুঃখ নদীর বহরে
সবুজ হৃদয় তুলে দিব মন ক্ষুধার আহারে!
যে চাঁদের অস্ত নেই
আরিফ রব্বানী
ঈদ-চাঁদের সুস্বাদু কিরণে মূলত কবিদের জন্ম হয়
শুধুই উদয়ের জন্য অস্তের জন্য নয়
তাই তো কবিরা মরে না প্রকৃত কবিদের মৃত্যু নেই
ওরা মিশে যায় আলো ছায়ায় প্রকৃতির মায়ায়
আকাশের নীল বাতাসের অন্তর দোলায়
ভেসে বেড়ায় বৃক্ষরাজি সাগর মরু পাহাড় পর্বত
মেঘ বৃষ্টি ফসলের মাঠ ঝিলবিল তরুলতায়
নদীনালা অন্তবিহীন গ্রহ নক্ষত্র তারকা মেলায়
কবিদের অবাধ বিচরণ মানুষের জন্য
অনাদি থেকে অনন্ত পর্যন্ত তাই তো তারা
অন্তরে মেখে সৃষ্টির অমিয় ধারা
মানবতার সন্নিবদ্ধ বসন ভূষণে সপ্রতিভ
কাব্যসমুদ্রে ডুব সাঁতার খেলতে খেলতে
অমরত্বের মখমল ঘাট ধরে অবশেষে
পলাপুঞ্জের ক্লান্ত গালিচায় একদিন ঘুমিয়ে পড়ে
লৌকিক জগত থেকে আড়ালে অচিন নক্ষত্রের দেশে।
চোরাবালি
মোহাম্মদ নূর আলম গন্ধী
জীবন বয়ে চলে বহতা নদীর মতো নিরবধি
কখনো জোয়ারের জলে প্লাবিত করে
ভাসায় দু’কূল,
কখনোবা ভাটার টানে ধু-ধু বালুচর!
জোয়ারের জলে হাওয়ার পালে ভাঙে কূল
কূল ভাঙা নদীর পাইনি যে কোন ঠিক ঠিকানা,
তবু সে বয়ে চলে, চলছে নিরন্তর আপন নিয়মে।
নদীর বুকে জমা বালুচর, কী যে শূন্যতা!
নেই তাতে সিক্ত এক বিন্দু জল,
শুধু ঝিকিমিকি বালু আর বালু।
স্বপ্ন আশার খেয়া ভাসাই জলে
চলে ঢেউয়ের তালে হেলেদুলে,
নিরন্তর বয়ে নিয়ে যাচ্ছে
শৈশব থেকে কৈশোর, যৌবন পেরিয়ে সামনে।
উদাস মন গাইলো গান কতো না উদাসী সুরে,
রবিÑশশি দিবাÑনিশি হলো অস্ত উদয়
রইলো দৃষ্টির অগোচরে-ই কেবলি।
লাভ লোকসান দেনা পাওনার হিসেব খাতা কষে
পেলাম শূন্য খালি!
বেলা শেষে সন্ধ্যা হলো চারিদিকে ঘোরঅন্ধকার অমানিশি,
দূর থেকে যা দেখে যে পথে পথ দিয়েছিলাম পাড়ি,
জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে দেখি, সবই ছিলো যেনÑ
অচেনা-অজানা এক চোরাবালি!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।