শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
বৈশাখ এলে
সুমন রায়হান
বৈশাখ এলে বুকের ভেতর হাওয়া
অন্য সুখে, কেবল করে আসা-যাওয়া।
বৈশাখ এলে ঝড়ো হাওয়ায়
মেঘের মাদল ডানার পেখম মেলে...
বৈশাখ এলে ভালোবাসা অন্যরকম খেলে।
বৈশাখ এলে সূর্যরাঙা আম, গাছের ডালে ঝোলে...
বৈশাখ এলে ঝুলনখেলা অন্যদোলায় দোলে...
বৈশাখ এলে উষ্ণ বিরানভূমি
পলে পলে ভিজিয়ে যায় অন্যরকম জলে।
বৈশাখ এলে মন ছুটে যায় করিমগঞ্জের হাটে
পাতার বাঁশির সুরে...
রাঙা ধুলোর বায়, মুখর মেলার মাঠে।
বৈশাখ এলে নতুন সুখের আহ্বানে
সকল দুঃখ ভুলে, নতুন রঙে রাঙিয়ে হৃদয়
ভালোবাসা ছড়িয়ে যায় সকল প্রাণে প্রাণে...
শৈশব কুড়ানো বিকেল
এস এম কাইয়ুম
অবসান-অবক্ষয়ে ক্ষয়ে যায় বিগতের দেনা
তারি মাঝে আপনাকে চেনা।
খাঁ খাঁ দুপুর ছুঁয়ে যায় চাতকের কণ্ঠ
রুদ্র বাতাসে ওড়ে কিশোরীর মনÑ
আকাশে তৃষ্ণা শ্রাবণ
অচেনা আঙ্গিনায় বসে বৈশাখী মেলাÑ
শৈশব কুড়ানো বিকেল।
পৃথিবী পুড়ে গেলেও প্রেমিকারা বেঁচে থাকে
রিক্তা রিচি
পৃথিবী পুড়ে যাওয়ার পূর্বে
তুমি প্রেমিকাকে ছলনাময়ী আখ্যা দিয়েছিলে
ছলনাময়ী খেতাব নিয়ে সে মরে যায়নি
অথচ মৃত্যু হয়েছে তোমার।
প্রেমিকা ছলনাময়ী নয়
প্রেমিকা একটি নদী
প্রেমিকা একটি সমুদ্র
প্রেমিকা একটি প্রার্থনা
প্রেমিকা একটি কবিতা
তুমি প্রার্থনায় প্রেমিকাকে চাওনি
তাই প্রেমিকা হারিয়ে গ্যাছে
প্রেমিকারা যুগে যুগে প্রার্থনার
উত্তমপুরুষ হতে চায়।
পৃথিবী পুড়ে গেলেও প্রেমিকারা বেঁচে থাকে।
শেষ বিন্দু
খোদেজা মাহবুব আরা
বকুলবেলার স্মৃতি থেকে
টুকরো সুখ উড়তে থাকে
হলুদ গাছের মৃত জঠরে।
মুঠো মুঠো আলো চলে যায়।
পথে দাঁড়িয়ে থাকে প্রায় বিকল ধূসর বিকেল।
ষড়ঋতু বেয়ে এমনই অতিক্রমণের
যন্ত্রণাকাতর বিরহী বাতাস।
জীবনের পাশে পড়ে থাকে
ক্লান্ত জীবনের সুধা সঞ্চয়।
হঠাৎ রাত্রি নামে
ধারালো অস্ত্রের আঘাতের
নেতিয়ে পড়ে জীবনের
সুখ গল্পের সময়
সব আগের মত
শুধু জীবনের স্রোত নামে শেষ বিন্দু।
নগ্ন হানা
এমরুল হোসাইন
মানুষ মানুষকে জবাই করে!
কেমন করে?
জানতে ইচ্ছে করে, খুব জানতে ইচ্ছে করে!
কী দোষ ছিলো?
মারলে কেন?
অমনভাবে জবাই করে!
কী লাভ হলো?
মানুষ মেরে!
অমন করে, দিনদুপুরে!
পশুর চেয়েও নগ্ন হানা,
করলে যারা, কেমন করে শান্ত তারা?
অগোচরে! ঘাপটি মেরে!
পার কি পাবে?
বিচার তাদের হবেই হবে,
আজ বাদে কাল, রোজ হাশরে।
শেষ নেই এই কবিতার
মৃণ¥য় ম-ল
এই বসন্তে রক্তের আল্পনা দেখি সবুজ তৃণময়তায়
এখানে বসন্তের প্রেমে দ্রোহে জীবন সঙ্গীত নবছন্দে সুর ভাজে
এখানে বসন্তে রফিক শফিক জব্বার খতা বলে পরস্পর নিভৃতে
এখানে বসন্তে বিশ্বাসঘাতকতা লুকায় কারো কফিনে।
বকুল সকালে ফুরবালিকারা হেঁটে যায়; গৃহ ছেড়ে কোথা যায়!
কোথা যায় দামাল তরুণ তীরন্দাজ! ফাগুনে আগুন করে
কেউ কারে রুখতে নারেÑ ছুটে যায় স্মৃতির মিনারে
স্মৃতির মিনার মাটির মিনার হৃদয়ে গ্রোথিত অক্ষরে গড়া ভাষা ভাস্কর্য।
এখানে বসন্তে ভাষা মুক্তি পায় ফেব্রুয়ারি ফাগুন হয়ে যায়
এখানে বসন্তে একুশ বাংলায় কথা বলে জ্বলে আগুন শিমুল পলাশ অশোক চূড়ায়
এখানে বসন্তে বিশ্ব নত হয় শহিদের আত্মদানের স্মৃতির পাথরে
এখানে বসন্তে প্রাণের প্লাবনে ঝরঝর ঝরে ভালোবাসার যুবতী গোলাপ।
ভোরের সুষমা ভেজা ¯িœগ্ধতা দ্বিপ্রহারিক মৌন তপ্ততা বৈকালিক দখিনা মুগ্ধতা
রাতের জোছনা বিছানো আলোয় বাউলের আসরে গদ্য কবিতার মর্মভেদী ঋদ্ধতা
বাংলার বসন্ত কখনো প্রশান্ত কখনো অশান্ত কখনো প্রণয় কখনো প্রলয়
ভাঙাগড়া জীবন রক্ত ঝরা জীবনের কান্না হাঁসির ট্র্যাজিক প্লেজার।
এই বসন্তে বাংলায় লেখা হয় মুক্তির কবিতা অবিনাশী অনবদ্য
এই বসন্তে বজ্রকণ্ঠে বেজে ওঠে স্বাধীনতার মহাকাব্যিক আহ্বান
এই বসন্তে ঘরে ঘরে প্রস্তুতি শিকল ভাঙ্গার অসামান্য আয়োজন
এই বসন্তে মাঠে মাঠে উত্তাল জনতাÑ শ্লোগানÑ স্বাধীনতাÑ স্বাধীনতা।
শেষ নেই এই কবিতার প্রতি বসন্তে ফুলদলে লেখা থাকে নতুন নতুন বারতা
প্রতি বসন্তে আসে অতিথি পাখিফুল শিশু নারী কত সুর কত কথা স্মৃতিময় ব্যথা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।