শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
১৫৫৭. কন্যা-রাণীকে দেখে নওশাহ্- দেখে তাকে ভিন্ জন
পরন্ত শুধু বর-সাথে হয় মিলন, সম্মিলন।
১৫৫৮. রূপ-সাজ বধূ দেখায় সবাকে, মেলে সকলের সনে
তবে নিরালায় মধুচন্দ্রিমা যাপে শুধু বর-কনে।
১৫৫৯. সুফীদের মাঝে ‘হালের’ ‘হালত’*৫ হয় অনেকের বটে
কিন্তু ‘মকাম’ লাভের নসীব কমই সুফীর ঘটে।
১৫৬০. বলেন তাহাকে ওমর বুঝিয়ে কোথা ছিল- রূহ-দিল্
ছিল কোথা কোথা সফর এবং কোথা, কোথা মন্যিল।
১৫৬১. সে কালের কথা শুনান তাহাকে-ছিলনা যখন কাল
জ্ঞাত করান সে মকাম যেথা- কেবল নূর-জালাল।
১৫৬২. রূহ্-সিমোরগ দেহ-পিঞ্জরে বন্দি হওয়ার আগে
যে নিঃসীম লোকে উড়িয়া বেড়াত উদ্ভাস অনুরাগে।
১৫৬৩. প্রত্যাশা, প্রেম, আসক্তি, মোহ থেকেও অধিকতর
আসক্তিময় যে উড্ডয়ন- বুঝান সেই সফর।
১৫৬৪. বিদেশী অচেনা লোককে ওমর পেলেন আপন করে
রহস্যঘন তত্তে¡ যে বেশ অনুরাগী অন্তরে।
১৫৬৫. শায়খ কামিল, শাগরেদও তাঁর যোগ্য মেধাবী অতি
আরোহী নিপুন বাহক অশ্ব তেমনি ক্ষিপ্রগতি।
১৫৬৬. শাগরেদ মাঝে যোগ্যতা গুণ দেখেন শেখ যখন
উর্বর ভূঁইয়ে মা’রেফতের করেন বীজ বপন।
১৫৬৭. আমীরুল মুমিনীনের নিকট দূতের প্রশ্ন
জিজ্ঞাসে দূত আমীরুল মুমিনীন-
১৫৬৮. ঊর্ধ্বনভের পঙ্খি এ রূহ- কী রূপে বলিয়া দিন
এলো এ ধরায়? দৈর্ঘ্য প্রস্থ কোনো কিছু নেই যার।
১৫৬৯. এমন পঙ্খি কি কারণে হলো বন্দি পিঞ্জিরার ?
বলিলেন : খোদা রূহের কর্ণে দিলেন মন্ত্র পড়ি
সে মহামন্ত্রে পিঞ্জরে রূহ ঠাঁই নিল তড়ি ঘড়ি।
১৫৭০. চোখ কান হীন সে পাক সত্তা মন্ত্র ফুকেন তাঁর
সে মহামন্ত্রে বিশ্বনিখিলে জোশ জাগে দুর্বার।
১৫৭১. সে মন্ত্র-তেজে তড়িঘড়ি করে অস্তিহীনেরা সব
প্রবেশ করিল অস্তি-কায়ায় করিয়া মহোৎসব।
১৫৭২. এরূপে যখন অস্তির কানে বাজান মন্ত্র-বীন
অস্তি তখন অস্তি হারিয়ে নিমেশেই হয় লীন।
১৫৭৩. মন্ত্র ফুকেন- হাসে আনন্দে ফুল ও ফুলবাগান
নিরেট পাথর হয় সে মন্ত্রে আকীক*১ মূল্যবান।
১৫৭৪. ফুকিল মন্ত্র- নিশ্চল দেহে নাচিয়া উঠিল প্রাণ
ফুকিল মন্ত্র- দিবাকর হল দীপ্র জ্যোতিস্মান।
১৫৭৫. পুনশ্চ সে মন্ত্র ও ইশারায়-
দেদীপ্যমান সূর্যের বুকে গ্রহণ লাগিয়া যায়।
১৫৭৬. বাঁশ হয়ে গেল মধুময় আখ দিতেই মন্ত্র ফুঁকে
জল কণা হল উজাল মুক্তা ঝিনুকের বুকে ঢুকে।
১৫৭৭. নীরোদের কানে করিল কী যেন মন্ত্র উ’চারণ
আখি হতে তার মশকের মত শুরু হল বরিষণ।
১৫৭৮. যমিনের কানে করিল কী যেন মন্ত্র উ’চারণ
হলো দরবেশ ধ্যান মগন অচল অটল তন।
১৫৭৯. কোনো কোনো জন দ্বিধা ও দ্ব’েদ্ব থাকে সদা পেরেশান
তার কানে দিছে হেন কথা যার মানেই দ্ব’দ্বমান।
১৫৮০.তাঁর ইচ্ছাতে দু’টি কল্পনা জাগে মনে একযোগে
কোনটি করিবে? হয় পেরেশান, দ্বিধা ও দ্ব’েদ্ব ভোগে।
১৫৮১. সেই দোটানায় দয়াময় প্রভু দেন যদি তাওফীক
প্রাধান্য দেয় একটিকে তার ভেবে গুণে সব দিক।
১৫৮২. দ্ব’দ্ব ও দ্বিধা থেকে যদি তুমি মুক্ত থাকিতে চাও
‘গায়রুল্লার’*২ তুলো কান থেকে বাহির করিয়া দাও।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।