শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
৯১৩. চাইলে খোদা কষ্ট বিষাদ যায় হয়ে আনন্দময়
চাইলে তিনি পায়ের শেকল, স্বাধীনতার সনদ হয়।
৯১৪. আগুন পানি বায়ূ মাটি ভাবছ ওদের জীবন নাই
ওরা চির অনুগত, যিন্দা ওরা খোদার ঠাঁই।
৯১৫. আশিক সম প্রতীক্ষমান অগ্নি সদা সর্বদাই
করলে হুকুম মাশুক খোদা পালন করে অমনি তাই।
৯১৬. পাথর লোহার ঘর্ষণে যে হয় আগুনের স্ফূরণ
তাহাও ওই মহামহিম খোদার হুকুম বিলক্ষণ।
৯১৭. যুলুমবাজির পাথর লোহা ঠোকা কভু উচিৎ নয়
নর-নারীর মিলন যথা পাপ-শিশু তায় জন্ম হয়।
৯১৮. বহ্নিশিখার কার্যকারণ- পাথর ও লৌহ ঘর্ষণ
ওই কারণের ঊর্ধ্ব কারণ খোঁজ সুধী, ঘুরাও মন।
৯১৯. দান করেছে অস্তি তো সেই মূল কারণ- এ কারণকেই
অন্যথা এ কারণ কভু নেয়নি জনম আপনাতেই।
৯২০. মূল কারণের প্রতি সদা নিবন্ধ চোখ আম্বিয়ার
প্রকাশ্য এই কার্যকারণ তাদের কাছে হীন্ অসার।
৯২১. প্রকাশ্য এই কারণগুলো মূল কারণের কার্যফল
কভু এরা সচল থাকে, কভু এরা হয় বিকল।
৯২২. প্রকাশ্য সব কার্যকারণ আয়ত্তাধীন জ্ঞান বোধির
ঊর্ধ্বতর সেই কারণের জ্ঞান আছে কেবল নবীর।
৯২৩. কূপের পানি তুলতে কূপে বালতি ঝুলায় রজ্জুটা
বালতি, রশি, উঠা-নামার কার্যকারণ চর্কিটা।
৯২৪. চর্কিটা যে ঘুরায় সে-ই সব কারণের আদ্যমূল
সে মূল কারণ না জানাটা, না চেনাটা মস্তভুল।
৯২৫. কার্যকারণ পরম্পরা সক্রিয়, ঠিক তা নিশ্চয়
কার্যকারণ স্বয়ংক্রিয়, এই ভাবনা সঠিক নয়।
৯২৬. এই কারণে মূল ভেবনা, মূল কারণের লওগো পাঠ
বুদ্ধি জ্ঞানে বানিওনা শুষ্ক অসার ‘মারাখ’ কাঠ।
৯২৭. অগ্নি কভু জল হয়ে যায়, জল কখনো অগ্নি হয়
খোদা-প্রেমের শরাব পিয়ে নেশায় তারা মত্ত রয়।
৯২৮. জল সবরের, অগ্নি ক্রোধের মহামহিম খোদার দান
তাঁর অবদান সর্বব্যাপীÑ তোমার মাঝেও বিদ্যমান।
৯২৯. বাতাস যদি নাই বুঝিত মুমিন কে আর কে কাফির
কেমনে ফরক*১ করল তবে ধ্বংস কালে আদ জাতির ?
আদজাতির পরে খোদায়ী গযব নাযিলের কাহিনী
৯৩০. করেছিল কওমে আদের মানুষ কুফর অহংকার
ঝঞ্ঝা বায়ু দিয়ে খোদা দিয়েছিলেন শাস্তি তার।
৯৩১. খোদার নবী হূদ সে সময় চারিদিকে মুমিনদের
একে দিলেন বৃত্ত রেখা, রইল সবাই মধ্যে এর।
৯৩২. প্রচন্ড সে ঝঞ্ঝা যখন আসত কাছে বৃত্তটির
বয়ে যেত মৃদুলয়ে, হয়ে যেত শান্ত ধীর।
৯৩৩. সেই বাতাসই রুদ্র রোষে করল বিনাশ কাফিরদের
মুছে দিল নাম নিশানা অহঙ্কারী সব আদের।
শায়বান রাই-এর বৃত্ত আঁকার ঘটনা
৯৩৪. শায়বান রাই খোদার ওলি মেষ চড়াতেন ময়দানে
বৃত্ত এঁকে রেখে দিতেন মেষগুলো তার মাঝখানে।
৯৩৫. চলে যেতেন জুমার নামায করতে আদায় মসজিদে
ইবাদতে দিন কাটাতেন প্রশান্তি ও খোশ হৃদে।
৯৩৬. মেষগুলো তাঁর বৃত্তরেখার যাইতনা বাইরে তখন
নেকড়েরাও বৃত্ত ভেঙে করত না মেষ আক্রমন।
৯৩৭. রুখে দিল নেকড়ে-ভেড়ার লোভ- আঁকা সে বৃত্তটাই
খোদার দেয়া শক্তি ’পরে আর কোনই শক্তি নাই।
৯৩৮. বহে যখন মরণ-বায়ূ ওপর দিয়ে আরিফদের
বহে যথা বয় কেনানে খোশবু নিয়ে ইউসুফের।
৯৩৯. ইবরাহীমের ওপরে দাঁত বসায়নিকো ক্ষুব্ধ নার
যেজন খোদার মনোনীত কেমনে ক্ষতি করবে তার ?
৯৪০. লোভ-লালসার বহ্ণি থাকে নিয়ন্ত্রণে দ্বীনদারের
ওই লালসা অতল তলে দেয় তলিয়ে অন্যদের।
৯৪১. সমুদ্র ঢেউ চিনল ঠিকই ফারাও এবং মূসার দল
রাস্তা হলো মূসার তরে ডুবল ফারাও সদলবল।
৯৪২. তেমনি মাটি পেল যখন হুকুম খোদার গ্রাস করার
মুহূর্তে সে ফেলল গিলে কারুনকে ও ধন তাহার।
৯৪৩. পানি, মাটি যখন পেল ‘ফু-খোরাক’ মসীহ ঈসার
উড়ল নভে পঙ্খী হয়ে বিস্তারি দুই পঙ্খ তার।
৯৪৪. তোমার মুখের তসবী’ সেতো বাতাস ছাড়া কিছুই নয়
হৃদয় ঢালি জপলে তা-ই ভেস্তবাগের পঙ্খী হয়।
৯৪৫. মূসার নূরের পরশ লভি নাচল গিরি- কোহিতুর
অচল গিরি বনল সুফী- জড়তা তার হইল দূর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।