শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
মাওলানা জালাল উদ্দীন রূমী রহ.
কাব্যানুবাদ : রূহুল আমীন খান
১৮৯. ভাবনা তোমার ভাবছি আমি তোমার কিবা ভাবনা আর
তোমার তরে আমার বুকে মমতা হাজার পিতার।
১৯০. রোগটি তোমার রাখবে গোপন সবার কাছে, খবরদার
শাহানশা’ খোদ শুধালেও বলবে নাকো নিকট তাঁর।
১৯১. কারো কাছে গোপন কথা, বলবে নাকো খবরদার
রাখবে মনে কুলুপ এটে, খুলবে নাকো রুদ্ধদ্বার।
১৯২. রাখতে গোপন পার যদি, গোপন কথা মনের মাঝ
পূরবে সকল আরজু দিলের, হবে সফল তোমার কাজ।
১৯৩. গোপন কথা গোপন করে রাখবে যে জন নিজ দিলে
রাসূল বলেন, অচিরেই পৌঁছিবে সে ঠিক মন্্যিলে।
১৯৪. শস্যদানা চুপটি মেরে থাকে যদি মাটির তল
সময় মত উঠবে হেসে কুঁড়ি মুকুল পুষ্পদল।
১৯৫. সোনা রূপা মাটির তলে না থাকিলে সংগোপন
হতোনা তা’ সুবর্ধিত মাত্র কিছু আর তখন।
১৯৬. হাকিমের এই দরদ ভরা প্রতিশ্রæতি সম্ভাষণ
ঘুচালো ভয়, গেল ভরে প্রশান্তিতে দাসীর মন।
১৯৭. সত্যপ্রতিশ্রæতি হলো হৃদয়গ্রাহী স্বস্তিকর
মিথ্যাপ্রতিশ্রæতি সে এক বিড়ম্বনা নিরন্তর।
১৯৮. মহৎলোকের প্রতিশ্রæতি মুদ্রাসম সুবর্ণের
দুর্বিষহ যন্ত্রণা দেয় প্রতিশ্রæতি দুর্জনের।
বাদশাকে রোগ সম্পর্কে অবহিতকরণ এবং স্বর্ণকারের নিকট দূত প্রেরণ
১৯৯. রুগীর নিকট হতে হাকিম গেলেন নিকট শাহানশার
স্বল্প কিছু হালত বাঁদির বলেন তিনি নিকট তাঁর।
২০০. বলেন যে, এই ক্রীতদাসীর স্বার্থে সঠিক চিকিৎসার
হোথায় নিয়ে আসতে হবে ভিন্্দেশী সেই স্বর্ণকার।
২০১. এনাম-খেলাত, পুরস্কারের দিয়ে নানা প্রলোভন
আনতে হবে শীঘ্র হেথায় ভুলিয়ে তার হৃদয়-মন।
২০২. বাদশা তখন উদ্দেশে তার দক্ষ দু’জন দূত পাঠান
যারা সুজন সুবিজ্ঞ ও আস্থাভাজন নিষ্ঠাবান।
২০৩. পৌঁছল সমরখন্দে তারা স্বর্ণকারের বসতঘর
জানিয়ে দিল নিকটে তার রাজকীয় সে খোশ্্খবর।
২০৪. বলল, তুমি এমন গুণী দক্ষ নিপুণ স্বর্ণকার
ছড়িয়েগেছে দেশ-বিদেশে খ্যাতি ও সুনাম তোমার।
২০৫. তোমার যশঃকীর্তি শুনে মোদের দেশের শাহানশার
জেগেছে এই ইচ্ছে মনে দিবেন তোমায় পুরষ্কার।
২০৬. এখন তুমি গ্রহণ করো রজত কনক খেলাত আর
রাজ-সমীপে পৌঁছলে হবে খাস সভাষদ রাজসভার।
২০৭. পেয়ে বিপুল বিত্ত, লোভে অন্ধ হলো দৃষ্টি তার
চলল সেথা, চলল ছেড়ে বন্ধু স্বজন নিজ শহর।
২০৮. চলল ধেয়ে দূতের সনে চিত্তে খুশীর বইছে বান
জানে না সে, বাদশা শেষে করবে হরণ তার যে জান।
২০৯. আরবী তাজী অশ্বে চেপে হচ্ছে বেগে রাস্তা পার
জানে না সে, মৃত্যুকেই ভাবছে খেলাত পুরষ্কার।
২১০. ভাবছে, পাবো রাজসভাতে উচ্চ আসন গৌরবের
কন আজ্রাইল, যাও এগিয়ে, ফল পাবেই এই লোভের।
২১১. সফর শেষে পৌঁছল গিয়ে রাজধানীতে স্বর্ণকার
উচ্ছ¡াসিত হৃদ-মাঝে তার স্বপন নাচে উচ্চাশার।
২১২. বিজ্ঞ হাকিম নিয়ে গেলেন সামনে তাকে স¤্রাটের
জ্বালাতে ওই পতঙ্গকে দীপ্ত শিখায় প্রদীপের।
২১৩. বাদশা তাকে দিলেন অনেক মর্যাদা ও সম্মান, আর
শাহান্শাহী স্বর্ণাগারও দিলেন সপে হস্তে তার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।