শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
৯৮৩. প্রস্তাবনা নিয়ে গেল সিংহ-পাশে একটি দল
বলল : রাজন! মানুন এটা পাব উভয় এর সুফল।
৯৮৪. চেষ্টা ছাড়াই এ রূপ আহার আপনি পাবেন প্রতিদিন
চরব মোরাও স্বাধীন সুখে উপত্যকায় শঙ্কাহীন।
৯৮৫. সিংহ বলে : মেনে নিলাম, ভুলিস না এ অঙ্গীকার
প্রতারণার শিকার আমি হয়েছি রে বারম্বার।
৯৮৬. প্রতারিত অনেক আমি হয়েছি লোকের কথায়
সাপ বিছাদের দংশনেতে মরছি বিষের যন্ত্রণায়।
৯৮৭. ভেতর থেকে ‘নফস’- ক্ষতির চেষ্টা চালায় নিরন্তর
হাজার অরির চাইতেও তার প্রতারণা ভয়ঙ্কর।
৯৮৮. মোমিন কভু এক বিবরে দেয় নাকো পা দোস্রা বার
স্মরণ রেখে চলি আমি এই উপদেশ মোস্তফার।
বনের পশুদের চেষ্টার উপরে তাওয়াক্কুলের অগ্রাধিকার দান
৯৮৯. বলল তারা : দিন ছেড়ে এই সাবধানতা, হে আমীর
সতর্কতায় হয়না বদল নির্ধারিত যে তকদীর।
৯৯০. বাড়ে কেবল দুঃখ-জ্বালা সতর্কতায়- তদবিরে
তাওক্কুলে* অটল থাকুন আস্থা রেখে তকদিরে*।
৯৯১. চাইনা লড়া ভাগ্য-সাথে যতই থাকুক শক্তি ঢের
শত লড়াই লড়লেও শেষ-বিজয় হবে তকদিরের।
৯৯২. পড়ে থাকুন খোদার রাহে অচল হয়ে মুর্দাবত
গযব যেন না হয় নাযিল প্রভাত-প্রভুর অকস্মাৎ।
সিংহের চেষ্টা ও তদবির কে তাওক্কুলের ওপর অগ্রাধিকার দান
৯৯৩. সিংহ বলে : হয় যদিও দিক-দিশারী তাওয়াক্কুল
কাজও করে যেতে হবে, এই কথাই কন রাসূল।
৯৯৪. এই কথাটি খোদার রাসূল বলে দিছেন পরিষ্কার
তাওয়াক্কুলের সাথে সাথে লও বাধিয়া উট তোমার।
৯৯৫. খোদার প্রিয় বন্ধু সে জন যে জন করে উপার্জন
তাওয়াক্কুলের দোহাই পেড়ে অলস না হও বৎসগণ।
৯৯৬. খোদার ’পরে ভরসা কর, কাজও কর কায় মনে
কেবল কাজই শেষ কথা নয়, ভরসাও চাই তার সনে।
৯৯৭. শ্রম দিয়ে যাও সাধ্যমত, সফলতার পথ এটাই
শ্রমে বিমুখ অলস জনের ভাগ্যে কোনো নেই ভালাই।
বনের পশুদের পুনঃ তাওয়াক্কুলকে অগ্রাধিকার প্রদান
৯৯৮. বলল, উপায় উপকরণ তারাই করে অণ্নেষণ
ছোট ছোট লোকমা যথা গ্রহণ করে রুগ্নজন।
৯৯৯. খোদার ’পরে ভরসা সম মহাউপায় কিছুই নাই
খোদায় পুরো সমর্পনই শ্রেষ্ঠ উপায় জানবে তাই।
১০০০. এক বিপদে বাঁচতে কেহ অন্যতে হয় গ্রেফতার
বাঁচতে গিয়ে সর্প থেকে মুখে পড়ে আসদাহার।
১০০১. মানুষ বাঁচার বুদ্ধি করে, নানা পথের নেয় উপায়
রক্ষা কবচ ভাবছে যাকে, জীবন-ঘাতক তাই ই হয়।
১০০২. শত্রু ভয়ে বন্ধ ফারাও করেছিল গৃহ দ্বার
অথচ সে জানত না যে, ঘরের মাঝেই শত্রু তার।
১০০৩. যেই মূসাকে মারতে করে লক্ষ শিশুর জীবন নাশ
সেই মূসাই সমাদরে নিজ ঘরে তার করল বাস।
১০০৪. অক্ষিদ্বয়ে জরা তোমার ঠিক ভাবে না দেখতে পাও
বন্ধ কর এই দু’আঁখি, খোদায়ী দিঠি শক্তি নাও।
১০০৫. চক্ষু মোদের, জরাকাতর দিষ্টি মোদের ক্ষীণ ও ভুল
তাঁর আঁখিতে দেখলে তখন দেখতে পাবে আদ্যমূল।
১০০৬. শিশু যাবত রয় অসহায়, শক্ত না হয় হাত-পা তার
তত দিন ওই শিশুর বাহন শক্ত সবল পিতার ঘাড়।
১০০৭. কোমল পায়ে বল ক্ষমতা দেখাতে সে যখন যায়
হয় না সফল বরং অনেক দুঃখ এবং কষ্ট পায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।