শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
৮৮১. দেখল যখন অগ্নি মাঝে ঝাপ দিল সব ঈমানদার
অনুতাপের সীমা তখন রইল না য়াহুদ শাহার।
৮৮২. খোদার দয়ায় ব্যর্থ হলো শয়তানি চাল দৈত্তটার
নিজ জালেই জড়িয়ে পড়ে দেখল সে মুখ ব্যর্থতার।
৮৮৩. কালি লেপন করতে গিয়ে চেহারাতে অন্যদের
কালি লেপন করল পাপী অবয়বে নিজ মুখের।
৮৮৪. যেই নরাধম অন্য লোকের ছিঁড়ত জামা ইজ্জতের
ছিঁড়ে ফেঁড়ে গেল জামা অবশেষে তার নিজের।
প্রিয়নবী (সা.)-এর নাম নিয়ে বিদ্রƒপ করার শাস্তি
৮৮৫. মুখ বাঁকাল এক অভাগা নাম নিয়ে পাক মোস্তফার
পরিনামে তেমনি বাঁকা রয়ে গেল মুখটি তার।
৮৮৬. ভয় পেয়ে সে তওবা করে গেল নবীর দরবারে
করল আরয, দয়াল নবী দিন আমাকে মাফ করে।
৮৮৭. ‘ইলমে লদুন্নির’* হে রাসূল, আপনিতো মহাভান্ডার
আপনি জানেন, আপনি ক্ষমা করুন কসুর এ বান্দার।
৮৮৮. ব্যঙ্গ করেছিলাম আমি পাচ্ছি সাজা সেই পাপের
আমি এখন বনে গেছি পাত্র সবার বিদ্রƒপের।
৮৮৯. সকাতরে এরূপ ক্ষমা চাইল যখন সেই জনা
দয়াল নবী তখন তাকে করে দিলেন মার্জনা।
৮৯০. আল্লা’ যখন চান কাহারো যিল্লতি, বে-ইজ্জতি
ইচ্ছা জাগে অন্তরে তার করতে সাধুর বদনামি।
৮৯১. আবার যখন চাহেন খোদা রাখতে কারো দোষ গোপন
অন্বেষণে দোষ অপরের রুধে রাখেন তাহার মন।
৮৯২. মদদ করার ইচ্ছা কারো করলে খোদা মেহেরবান
অন্তরে তার রোনাজারির ইচ্ছা ও ঝোঁক করেন দান।
৮৯৩. ধন্য সে চোখ যে চোখ কাঁদে খোদার প্রেমে সর্বক্ষণ
ধন্য সে মনÑ বিচ্ছেদে তাঁর ভুনা ভুনা হয় যে মন।
৮৯৪. শেষ অবধি পাবে সে সুখ কেঁদেছে যার দুই নয়ান
পরিণতির চিন্তা করে যে জন সে হয় ভাগ্যবান।
৮৯৫. হোথাই হয় শ্যামল সবুজÑ পানির ধারা যেই খানে
অশ্রæ যেথা ঝরে চোখের খোদার দয়া সেই খানে।
৮৯৬. শস্য ক্ষেতের সেচের মতো দাও আঁসু-সেচ অন্তরে
হাসবে শ্যামল সবুজ বাগান তোমার হৃদয় কন্দরে।
৮৯৭. নিজের তরে চাইলে আঁসু, পরের তরে অশ্রæ দাও
রহম করো দুখীর পরে, যদি খোদার রহম চাও।
অগ্নির প্রতি য়াহুদী রাজার ভর্ৎসনা
৮৯৮. অনল-কুন্ডে বলল রাজা ক্রোধে করে সম্বোধন
তুমি তো সব ভষ্ম কর, সে তেজ তোমার কৈ এখন ?
৮৯৯. জ্বালাও না ক্যান্ আজ হে আগুন, কেন তুমি রইলে চুপ
কোন্ কারণে বদলে গেল তোমার আসল স্বভাব-রূপ ?
৯০০. পূজা করে যারা তোমায় দাওনা ছেড়ে তাদের আর
পূজা নাহি করে তাদের জ্বালাওনা, এ কোন্ আচার ?
৯০১. স্বভাব তোমার ভষ্ম করা, সবর করা নয়, আগুন
কোথায় গেল সে তেজ তোমার, কোথা তোমার স্বভাব গুণ?
৯০২. অবাক ব্যাপার, এটা নজরবন্দি না- এ যাদুর ভেল্
এমন ভয়াল অগ্নি তবু জ্বালায়না সে এ কোন্ খেল্ ?
৯০৩. এ কি মোদের দোষ কপালের, কিংবা এ খেল্ ভোজবাজির
স্বভাব তোমার পাল্টেছে কি? কেন তোমার নেই তাসীর?
৯০৪. অগ্নি বলে : আমি আগুন, যেমনি ছিলাম আজও তাই
ভেতর এসো, যাচাই করো, সে গুণ আছে কিংবা নাই।
৯০৫. ঠিক আছে মোর গুণ-ক্ষমতা, সব উপাদান, তেজ ও ধার
হুকুম পেলেই সক্রিয় হই, অসি আমি খোদ খোদার।
৯০৬. শুয়ে থাকে ‘তুর্কমানের’ কুকুর তাবুর দরওয়াজায়
অতিথিরা আসলে তাদের জানায় স্বাগত্ নেজ নাড়ায়।
৯০৭. সেই ককুরই দেখলে কোনো অচেনা লোক, বৈরীজন
সিংহসম গর্জে ওঠে করে ভীষণ আক্রমন।
৯০৮. কুকুর কভু হামলা করে, আবার কভু নাড়ায় নেজ
খোদার হুকুম ছাড়া আমি কেমনে দেখাই আমার তেজ?
৯০৯. খোদার আনুগত্যে আমি কুকুর থেকে নই অধম
তুর্কম্যানের চাইতে আমার খোদারও নয় শক্তি কম।
৯১০. দুর্ভাবনা যদি তোমার অগ্নি জ্বালে হৃদয় মাঝ
ভাবনা ছাড়ো, একীন করো এটাও ওই খোদার কাজ।
৯১১. অগ্নি যদি শাস্তি দানে হও তবে শোকরগোযার
মনে রেখো, তোমার পরে এটাও অবদান খোদার।
৯১২. জাগলে মনে কষ্ট বিষাদ কভু নাহি ব্যাকুল হও
খোদার থেকেই এসেছে তা, তারি অভয়শরণ লও।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।