Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বললেন জাতিসংঘ মহাসচিব

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:৩৫ পিএম

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থ্যেনিও গুতেরেস নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে ১২তম প্রতিবেদন তুলে ধরে ভিয়েনায় চার যোগ এক গ্রুপের সঙ্গে ইরানের চলমান আলোচনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি ইরান বিরোধী মার্কিন একতরফা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন যাতে তেহরান অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুবিধা পেতে পারে। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ইরানের তেল খাতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবন করা সহজ হবে। তিনি তার প্রতিবেদনে পরমাণু সমঝোতায় আমেরিকার ফিরে আসার ওপর গুরুত্বারোপ করে ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আহ্বান জানান।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান জানানো থেকে বোঝা পরমাণু সমঝোতা ধ্বংসে মার্কিন নেতিবাচক ভূমিকার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সমাজ অবহিত এবং সবাই মার্কিন নীতির বিরোধী। জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস তার প্রতিবেদনে আরো বলেছেন, ইরান বিরোধী মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত প্রস্তাবের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তার এ বক্তব্য থেকে বোঝা যায় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের ওপর আমেরিকার প্রচণ্ড চাপ সত্বেও ইরান ইস্যুতে ওয়াশিংটন কারো সমর্থন তো পায়নি এমনকি আমেরিকার এ আচরণকে সবাই বেআইনি বলে মনে করছে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চার যোগ এক গ্রুপ এবং ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েও ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা মেনে নিতে এবং পরমাণু সমঝোতার বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের নীতির প্রতি কারো সমর্থন আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। অন্যদিকে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করেও ট্রাম্প ক্ষমতা ছাড়ার আগ মুহূর্তেও ইরানের কাছ থেকে সামান্য ছাড় আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক ম্যাক্স বুট তার এক নিবন্ধে লিখেছেন, '২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন হামলার পর পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকার বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা ছিল পররাষ্ট্র নীতিতে হোয়াইট হাউজের সবচেয়ে মারাত্মক ভুল'।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টি করেও ইরানের কাছ থেকে একটি ছাড়ও আদায় করতে পারেননি। এই অভিজ্ঞতার পরও বর্তমান বাইডেন প্রশাসনও তাদের অযৌক্তিক দাবি মেনে নিতে তেহরানকে বাধ্য করতে পারবে এই আশায় ট্রাম্পের ব্যর্থ নীতি অনুসরণ করে চলেছে। তবে, ইরান সাফ জানিয়ে দিয়েছে, মার্কিন এবং বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী শক্তির চাপের কাছে তারা কখনোই নতি স্বীকার করবে না।

ইরান বিরোধী মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়ে বর্তমানে ভিয়েনায় চার যোগ এক গ্রুপের সঙ্গে ইরানের সপ্তম দফা আলোচনা চলছে। তারপরও ওয়াশিংটন ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার বিষয়ে অটল রয়েছে এবং তাদের অন্যায় দাবি মেনে নিতে তেহরানকে একের পর এক হুমকি দিয়ে চলেছে। অর্থাৎ আমেরিকা সর্বনিম্ন সুবিধা দিয়ে ইরানের কাছ থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে চায়। অন্যদিকে ভিয়েনা আলোচনায় অংশগ্রহণকারী ইউরোপের তিনটি দেশও ইরানকে অভিযুক্ত করে চলমান আলোচনার ফলাফলকে ওয়াশিংটনের পক্ষে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

সূত্র: পার্সটুডে



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতিসংঘ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ