Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চূড়ান্ত বিপদের কাছাকাছি মানবসভ্যতা : জাতিসংঘ

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০২১, ১০:৫৪ এএম

১৮৫০ থেকে ১৯০০ সালের তুলনায় ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২০১১ থেকে ২০২০ সালে ১.০৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। ১৮৫০ সালের পর থেকে গত পাঁচ বছর পৃথিবীর তাপমাত্রা ছিল ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ১৯০১ থেকে ১৯৭১ সালের তুলনা করলে সাম্প্রতিক সামুদ্রিক উচ্চতা বৃদ্ধির হার প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। ১৯৯০-এর দশক থেকে হিমবাহ ধস ও অ্যান্টার্কটিকায় সামুদ্রিক বরফ কমে যাওয়ার প্রধান কারণ (৯০ শতাংশ) মনুষ্য প্রভাব। ১৯৫০-এর দশক থেকে দাবদাহসহ গরমের প্রবণতা আরও নিয়মিত ও তীব্র হয়ে উঠেছে, সে তুলনায় ঠান্ডাজনিত ঘটনা ক্রমেই কম নিয়মিত ও কম তীব্র দেখা যাচ্ছে।

মানুষের কর্মকাণ্ড এই পৃথিবীর জলবায়ুকে ভয়ংকরভাবে বদলে দিয়েছে। মাঝে মাঝে তা এমন রূপ ধারণ করেছে যে, এই পরিবর্তন আর সংশোধনের উপায় নেই, যা মানবজাতিকে অনিবার্য পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের একটি বিশেষ বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদনে এই কথা বলা হয়েছে।

জাতিসংঘ গঠিত জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তঃসরকার প্যানেলের (আইপিসিসি) প্রতিবেদন বলছে, পৃথিবীর উষ্ণতা, খরা, বন্যা যেভাবে বেড়েছে তা এক দশকের রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। গবেষণা প্রতিবেদেনে আরও বলা হয়েছে, পৃথিবীর উষ্ণতা যেভাবে বাড়ছে তাতে চূড়ান্ত বিপদের খুব কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে মানবসভ্যতা। আর সেজন্য মানুষই পুরোপুরি দায়ী। খবর বিবিসির।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই প্রতিবেদনটিকে মানবজাতির জন্য লাল সংকেত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আর বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখনই যদি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তবে এই বিপর্যয় এড়ানো যেতে পারে। তবে আশার বিষয় হচ্ছে, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণ ব্যাপক হারে কমিয়ে আনা গেলে বাড়তে থাকা উষ্ণতায় ভারসাম্য ফিরে আসতে পারে।

‘নীতিনির্ধারকদের জন্য সারসংক্ষেপ’ শিরোনামে সোমবার প্রকাশিত ৪২ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী দুই দশকের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রাক শিল্পায়ন যুগের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যেতে পারে। এর মানে হলো, ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে উষ্ণায়নকে যে মাত্রায় বেঁধে রাখার অঙ্গীকার বিশ্বনেতারা করেছিলেন, তা পূরণ করা হয়তো সম্ভব হচ্ছে না। আর এই উষ্ণতা বৃদ্ধির ফল হবে মারাত্মক। এ শতকের শেষে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা দুই মিটার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কার বিষয়টিকে বিজ্ঞানীরা আর উড়িয়ে দিতে পারছেন না।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, আজকের আইপিসিসি ওয়ার্কিং গ্রুপ ১ প্রতিবেদন মানবতার জন্য লাল সংকেত। আমরা যদি এখনই সব শক্তি একত্রিত করি, তাহলে জলবায়ু বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব। আজকের প্রতিবেদন এটি পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, দেরি করার মতো সময় নেই আর কোনো অজুহাতেরও জায়গা নেই। আমি সিওপি২৬ সফল করার জন্য সব সরকারের নেতা ও অংশীদারের ভরসায় রয়েছি।

প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক ও যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ের প্রফেসর এড হকিন্স বলেছেন, এটি সত্য বিবরণী। আমরা এর চেয়ে বেশি নিশ্চিত হতে পারি না। এটি স্পষ্ট ও অনস্বীকার্য যে, মানুষই গ্রহকে উত্তপ্ত করছে।

প্রতিবেদনে লেখকরা বলেছেন, ১৯৭০ সাল থেকে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা গত দুই হাজার বছরের মধ্যে যেকোনো ৫০ বছর সময়কালের মধ্যে দ্রুততম হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই উষ্ণায়ন ইতোমধ্যে পৃথিবীর সব অঞ্চলের আবহাওয়া ও জলবায়ুকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। সেটি গ্রিস ও উত্তর আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে সাম্প্রতিক দাবদাহই হোক বা জার্মানি ও চীনের বন্যা-গত এক দশকে এগুলোর ওপর মানুষের প্রভাব আরও শক্তিশালী হয়েছে।



 

Show all comments
  • jack Ali ১০ আগস্ট, ২০২১, ১২:৩১ পিএম says : 0
    পৃথিবীতে বছরের-পর-বছর বিভিন্ন দেশের যুদ্ধ চলছে একটা রাইফেলের গুলি ছুড়লে বায়ুমণ্ডল কত গরম হয় প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ গুলি ছোড়া হচ্ছে রাইফেল থেকে একটা কামানের গোলা নিক্ষেপ করলে বায়ুমণ্ডল কত গরম হয়, পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ কামানের গোলা ছড়া হচ্ছে ,,প্লেন থেকে বোম ফেলা হচ্ছে পরিবেশ প্রচন্ড গরম হয়ে যাচ্ছে লক্ষ্য লক্ষ্য বোমা ছোড়া হচ্ছে অথচ কেউ বলে না যে এর জন্যেই পরিবেশ প্রচন্ড গরম হয়ে যাচ্ছে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে তাহলে পরিবেশ বাঁচানো যাবে
    Total Reply(2) Reply
    • MOH MANIRUJJAMAN JAMADDER ১০ আগস্ট, ২০২১, ২:০৮ পিএম says : 0
      100% true
    • Jamal ১০ আগস্ট, ২০২১, ২:৪৫ পিএম says : 0
      100% Right

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতিসংঘ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ