মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্বে খাদ্যশস্যের অভাব মেটাতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি গত সোমবার রোমে শুরু হওয়া জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট এক শীর্ষসম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক সভায় ভিডিও-বক্তব্যে এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিশ্বে খাদ্যশস্য উৎপাদন-প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা কম হওয়ায় ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্বের তিন ভাগের এক ভাগ গ্রিন হাউস গ্যাসও নিঃসরণ হচ্ছে এ কারণে। তাছাড়া, একই কারণে ৮০ শতাংশেরও বেশি জীববৈচিত্র্য হারাচ্ছে পৃথিবী।
গুতেরেস আরো বলেন, ২০২০ সালে ৮১.১ কোটি মানুষ ক্ষুধার্ত ছিল, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ১৬.১ কোটি বেশি। তাছাড়া, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ৩০০ কোটি মানুষ পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার পাচ্ছে না।
পোপ ফ্রান্সিস সোমবার জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সতর্কতার ভিত্তিতে এমন এক জগতে ক্ষুধার অস্তিত্বকে অপরাধী বলে ঘোষণা করেছেন যেখানে আবহাওয়া পরিবর্তন ও সঙ্ঘাত একটি দারিদ্র্য এবং আয় বৈষম্যের কারণ এবং চালক। গুতেরেস ভিডিও বার্তার মাধ্যমে রোমের সভাকে বলেন যে, বিশ্বের খাদ্য ব্যবস্থা গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের এক তৃতীয়াংশ উৎপন্ন করে। জীববৈচিত্র্য হ্রাসের প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষতির জন্য একই সিস্টেম দায়ী।
অংশগ্রহণকারীদের সাথে সংহতি প্রকাশের জন্য লিখিত বার্তায় ফ্রান্সিস বলেন যে, করোনভাইরাস মহামারিটি ‘আমাদেরকে আমাদের পরিবার হিসাবে আমাদের ঐক্যকে বিনষ্টের মতো পদ্ধতিগত অনাচারের মুখোমুখি করেছে’। তিনি বলেন যে, ‘আল্লাহ যেসব জিনিস পৃথিবীতে দিয়েছেন তার দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যবহার এবং অপব্যবহারের দ্বারা আমরা এর যে ক্ষতি করেছি তার কারণেই বিশ্বের দরিদ্রতম মানুষ এবং গ্রহ চিৎকার করছে’।
পন্টিফ আরো যোগ করেন যে, পৃথিবীতে খাদ্য উৎপাদন করার ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নতুন প্রযুক্তি তৈরি করা হলেও, মানুষ ‘প্রকৃতিতে নির্বীজনের প্রকৃতি অব্যাহত রাখে, এভাবে কেবল বাহ্যিক মরুভূমি নয় অভ্যন্তরীণ আধ্যাত্মিক মরুভ‚মিও প্রসারিত হয়’।
এ মাসের শুরুতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০১৯ সালের তুলনায় গত বছর আরও ১৬ কোটি ১০ লাখ বেশি মানুষ ক্ষুধার মুখোমুখি হয়েছে। এর ফলে অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা সম্ভবত কোভিড-১৯ মহামারির সাথে জড়িত।
করনোভাইরাস উত্থানের আগে মাসের ২০১৯ সালে শীর্ষ সম্মেলনের ধারণাটি শুরু হয়েছিল, তবে ইতালিয়ান প্রিমিয়ার মারিও ড্রাগি বলেছেন যে মহামারী খাদ্য সুরক্ষার জন্য বিদ্যমান হুমকিকে আরও জরুরি করে তুলেছে।
কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি ইটালির রোমে অনুষ্ঠিত ৩ দিনব্যাপী ‘জাতিসংঘের ফুড সিস্টেম প্রিসামিটের’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বলেছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের সবচেয়ে বেশি বিরূপ প্রভাব পড়বে উন্নয়নশীল দেশের ফুড সিস্টেমে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৃষি ও খাদ্য খাতে আরো বেশি বিনিয়োগ, গবেষণা ও উদ্ভাবন করতে হবে। সেজন্য, আরো শক্তিশালী ও আবহাওয়া পরিবর্তনসহনশীল ফুড সিস্টেম গড়তে সদস্য দেশসমূহের সম্মিলিত উদ্যোগ ও অংশীদারিত্ব প্রয়োজন।
কৃষি ও ফুড সিস্টেম ট্রান্সফর্মেশনের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ কীভাবে কাজ করছে এবং এক্ষেত্রে আরও কী কী প্রয়োজন হবে- এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী প্রিসামিটে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তায় অভ‚তপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। গত ৫০ বছরে চালের উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা দুটোই চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্তি/ জিরো হাঙ্গার অর্জনে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তা সত্তে¡ও ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে আবহাওয়া পরিবর্তন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষি জমি হ্রাস, শ্রমিক সঙ্কট, খাদ্য নষ্ট ও অপচয়সহ অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মহাপরিচালক কিউ দোংয়ু, রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে, জাতিসংঘের ডেপুটি মহাসচিব আমিনা মোহাম্মদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ড. রাজ্জাক আরও বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ক্ষুধামুক্তি/ জিরো হাঙ্গার অর্জনে বাংলাদেশ কাজ করছে। একই সাথে অপুষ্টি নিরসনেও কাজ করছে। যা সরাসরি কৃষি উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতার সাথে জড়িত। এ লক্ষ্য অর্জনে উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ বৃদ্ধি, নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা প্রদান ও টেকসই কৃষি ব্যবস্থার মাধ্যমে খাদ্য ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করত হবে।
আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের ‘ফুড সামিট ২০২১’ সামনে রেখে এ প্রাক-সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৪৫টির বেশি দেশ এতে অংশগ্রহণ করছে। সম্মেলনটি শেষ হবে ২৮ জুলাই। সূত্র : এপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।