Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নব্য নাৎসিবাদ ও শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদের উত্থান ঠেকাতে জোটবদ্ধ হওয়ার আহবান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০৩ এএম

নব্য নাৎসিবাদের উত্থানের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘ। সোমবার সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস এ আহবান জানিয়েছেন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ নাৎসি কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প পোল্যান্ডের আউশভিৎস। ক্যাম্পটি মুক্ত হওয়ার ৭৬তম বার্ষিকীতে দেওয়া বক্তব্যে নব্য নাৎসিবাদের উত্থান নিয়ে কথা বলেন গুতেরেস। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তিনি। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, নব্য নাৎসিবাদ ও শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদের উত্থান ঠেকাতে জোটবদ্ধ হতে হবে। এ ধরনের একটি জোট গঠনের জন্য আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদেশভীতি, অ্যান্টি সেমিটিজম এবং হেট স্পিচের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হওয়ার তাগিদ দেন গুতেরেস। প্রপাগান্ডা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্যও আন্তর্জাতিকভাবে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসিদের কর্মকান্ডের বিষয়টি শিক্ষা ব্যবস্থায় উল্লেখ করারও তাগিদ দেন জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ তরুণই জানে না যে, হলোকাস্টের সময় ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করা হয়েছিল। করোনা মহামারি দীর্ঘদিনের অন্যায়-অবিচার ও বিভেদকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে বলেও উল্লেখ করেন অ্যান্টোনিও গুতেরেস। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, এটি দুঃখজনক হলেও অবাক হওয়ার মতো বিষয় নয় যে, মহামারি হলোকাস্ট অস্বীকার ও বিকৃতির বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, ‘ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য স্থানে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীরা সংগঠিত হচ্ছে।সীমান্ত পেরিয়ে তাদের মতাদর্শ ছড়িয়ে দিচ্ছে। দুঃখজনকভাবে, কয়েক দশক পরও এখনও নব্য নাৎসিবাদ এবং তাদের ধারণাগুলো হালে পানি পাচ্ছে। পোল্যান্ডের আউশভিৎসে প্রায় ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে আউশভিৎস-বির্কেনাউ কনসেনট্রেশন ক্যাম্প গড়ে তোলে নাৎসিরা। পোল্যান্ডসহ যেসব দেশ নাৎসিদের দখলে ছিল সেসব দেশ ও জার্মানি থেকে নিরপরাধ মানুষদের সেখানে গবাদি পশুর মতো মালগাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হতো। সংখ্যায় ইহুদিরা বেশি হলেও অনেক রাজনৈতিক বন্দি, অসুস্থ, সমকামী ইত্যাদি মানুষকে নাৎসিদের রোষের শিকার হতে হয়েছিল। প্রথমেই তাদের মধ্য থেকে কর্মক্ষম মানুষদের আলাদা করা হতো। মা ও শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, অসুস্থ মানুষদের তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে গ্যাস চেম্বারে পাঠিয়ে দেওয়া হতো। নারকীয় সেই নিধনযজ্ঞের পর আউশভিৎসে অবস্থিত চারটি শ্মশানে লাশের গণদাহ করা হতো। নাৎসিদের স‚ত্র অনুযায়ী, দিনে প্রায় চার হাজার ৭০০ দেহ এভাবে পোড়ানো হতো। যারা আরও কিছুদিন জীবিত থাকার সুযোগ পেতেন, তাদের কঠিন পরিশ্রম করতে হতো। এভাবে পরিশ্রম করতে গিয়ে তারা অর্ধ-মৃত হয়ে পড়তেন। আউশভিৎস ক্যাম্পের কাছে গড়ে ওঠা শিল্প কারখানায় বন্দিদের দাস হিসেবে কাজ করানো হতো। ১৯৪৫ সালের ২৭ জানুয়ারি সোভিয়েত সেনারা যখন আউশভিৎস মুক্ত করেন তখন সেখানে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন। নাৎসিরা অনেকগুলো ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করলেও আউশভিৎসই তাদের অপরাধের প্রতীক হিসেবে ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। আল-জাজিরা, ডিডবিøউ।

 



 

Show all comments
  • জাহিদ খান ২৭ জানুয়ারি, ২০২১, ৯:০৪ এএম says : 0
    ভালো আহ্বান, কিন্তু কেউ আপনার আহবানকে গুরুত্ব দেয় না।
    Total Reply(0) Reply
  • তাসফিয়া আসিফা ২৭ জানুয়ারি, ২০২১, ৯:০৪ এএম says : 0
    খুবই ভালো আহ্বান।
    Total Reply(0) Reply
  • বাতি ঘর ২৭ জানুয়ারি, ২০২১, ৯:০৫ এএম says : 0
    এজন্য আগের ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আসতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতিসংঘ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ