মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গঠিত হয়েছিল জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন। কিন্তু বিশ্বনেতারা এখন এই মিশন থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। পিছিয়ে যাচ্ছে সদস্য দেশগুলোও। ফলে এক সময় নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতলেও এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে শান্তিরক্ষা মিশন।
প্রাথমিকভাবে ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত বন্ধের উদ্যোগ নিতে ১৯৪৮ সালে শান্তিরক্ষা মিশন গঠন করা হয়। জাতিসংঘের সদস্যভূক্ত বেশিরভাগ দেশ তাতে সমর্থন দেয়। ওই বছর ইউনাইটেড ন্যাশনস ট্রুস সুপারভিশন অর্গানাইজেশন (ইউএনটিএসও) নামে প্রথম মিশনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ব্লু হেলমেট’র যাত্রা শুরু হয়। ওই মিশনের লক্ষ্য ছিল ইসরায়েল ও তাদের প্রতিবেশী আরব দেশগুলো মধ্যে যুদ্ধবিরতির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা। পরের বছর কাশ্মীর নিয়ে বিরোধের নিষ্পত্তিতে কাজ শুরু করে ইউনাইটেড ন্যাশনস মিলিটারি অবজারভেশন গ্রুপ (ইউএনএমওজিআইপি)। ইউএনটিএসও এবং ইউএনএমওজিআইপি-র কার্যক্রম এখনো চলছে। কিন্তু কোথাও শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি।
নানা দেশের প্রায় ৯০ হাজার সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা বর্তমানে শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করছেন। ২০১৫ সালের আগে এই সংখ্যা এক লাখ ১০ হাজারের বেশি ছিল। শান্তিরক্ষা মিশন নিয়ে বিশ্ব নেতাদের আগ্রহ কমে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় স্টোকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিচ রিসার্চ ইন্সটিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক ফর দের লিন বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অনেক সদস্যের মতে শান্তিরক্ষা মিশনের খরচ অনেক বেশি, সেই তুলনায় অর্জন খুবই সামান্য। এ কারণে নেতারা এই খাতে বাজেট কমাতে চাইছেন। ট্রাম্প প্রশাসন যার নেতৃত্ব দিচ্ছে।
শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় চার হাজার শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। ১৯৯৫ সালে বসনিয়া যুদ্ধের সময় স্রেব্রেনিচা গণহত্যা, ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডায় তুতসি সম্প্রদায়ের উপর চালানো নির্মম হত্যাযজ্ঞ কিংবা মোগাদিসুর হত্যাকাণ্ড- সব ঘটনার সময়ই জাতিসংঘ অসহায়ের মত চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারেনি। শান্তিরক্ষী বাহিনী থাকার পরও ওই সব স্থানে গণহত্যা থামানো যায়নি। বরং ৯০ দশকের পর থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গঠিত আঞ্চলিক জোটগুলো তাদের লক্ষ্য থেকে সরে যেতে শুরু করে বলে মনে করেন লিন। তিনি বলেন, শান্তিরক্ষা মিশনে তাদের অংশ গ্রহণ দ্রুত কমতে থাকে। বরং শান্তিরক্ষীদের সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানের মত নানা ‘নন-পিচকিপিং’ মিশনে ব্যবহার বাড়তে থাকে। যেমন, সহিল অঞ্চলে শান্তিরক্ষীরা শাদ, নাইজার ও নাইজেরিয়ার বাহিনীর সঙ্গে মিলে বোকো হারাম জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াই করছে।
এ অবস্থায় দেশগুলোর মধ্যে শান্তিরক্ষা মিশনে সেনা পাঠানো নিয়ে অনাগ্রহ প্রকাশ পাচ্ছে। আফ্রিকায় মোতায়েন করা শান্তিরক্ষী বাহিনীর ৭০ শতাংশই এখন দক্ষিণ সাহারা অঞ্চলে অবস্থান করছে। এ অঞ্চলের বড় বড় কয়েকটি মিশন বন্ধ রেখে যুদ্ধ বিধ্বস্ত লিবিয়া ও ইয়েমেনে নতুন মিশন শুরু করতে হয়েছে।
বর্তামানে শান্তিরক্ষী বাহিনীর বেশিরভাগ সদস্য সাব-সাহারা আফ্রিকা বা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে আসে। লিন বলেন, ‘আফ্রিকার দেশগুলো এখন মূলত তাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে রক্ষী পাঠায়। যেমন, ইথিওপিয়া শুধু সোমালিয়া বা সুদানে রক্ষী পাঠায়। তাদের লক্ষ্য খুবই পরিষ্কার। তারা আগে নিজেদের রক্ষা করতে চায়। একই ভাবে মালির প্রতিবেশী দেশগুলো শুধু মালিতে রক্ষী পাঠায়। তারা চায় মালির সমস্যা যেন শুধু সেখানে থাকে এবং তাদের দেশের শান্তি বিনষ্ট না হয়।’
পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র যুক্তরাষ্ট্র শান্তিরক্ষা মিশনে বলার মত আকারের সেনা পাঠায়। যদিও তাদের বেশিরভাগই আফগানিস্তানে কাজ করে। এই সংখ্যাও কমে যাবে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি আফগানিস্তানে সেনা কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন। সূত্র: ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।