Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গাদের জন্য এখনও নিরাপদ নয় মিয়ানমার : জাতিসংঘ

সু চি’র নৈতিক নেতৃত্বের ঘাটতি রয়েছে : বিল রিচার্ডসন

| প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার জন্য মিয়ানমার এখনও নিরাপদ নয়; এক পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এরইমধ্যে প্রত্যাবাসন শুরুর কথা থাকলেও প্রক্রিয়াগত সব জটিলতার কারণে তা পিছিয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা ইউনিসেফ-এর উপ-নির্বাহী পরিচালক জাস্টিন ফরসিথ বলেন, নিরাপত্তা শঙ্কায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কেউই এখন ফিরে যাওযার আগ্রহ প্রকাশ করেনি। অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা যায়। আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্যও মিয়ানমারকে চাপ দিচ্ছিল আন্তর্জাতিক বিশ্ব। এদিকে, রোহিঙ্গা সংকটের ওপর পরামর্শ দেয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের গঠিত আন্তর্জাতিক পরামর্শক পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদগ্ধ কূটনীতিক বিল রিচার্ডসন। তিনি দাবি করেছেন, ‘এটি উপরে উপরে লোক দেখানো কাজ করছে।’ যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রিচার্ডসন অভিযোগ করেছেন, মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেতা অং সান সু চির নৈতিক নেতৃত্বের ঘাটতি রয়েছে। রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রিচার্ডসন বলেছেন, ‘আমার পদত্যাগের প্রধান কারণ হলো, এই পরামর্শক পর্ষদ একটি লোক দেখানো পর্ষদ।’ একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, মিয়ানমার সরকারের চিয়ারলিডিং স্কোয়াডের অংশ হতে চান না তিনি। রিচার্ডসন জানিয়েছেন, সোমবার পরামর্শক পর্ষদের এক বৈঠকে অং সান সু চির সঙ্গে বাকবিতÐা হয় তার। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সরকারের মামলার বিষয়টি বৈঠকে উত্থাপন করলে তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। গোপন তথ্য প্রকাশ করে সরকারকে বিব্রত করায় ওই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিয়ানমারে মামলা চলছে। গত ২৩ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সমঝোতায় পৌঁছায়। ১৯ ডিসেম্বর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রæপ গঠন করা হয়। ১৬ জানুয়ারি প্রত্যাবাসনের পদক্ষেপ বাস্তবায়নের রূপরেখা নিয়ে চুক্তি সই হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের সীমান্তে অস্থায়ী ক্যাম্পে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মঙ্গলবার প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে এখনও এ সংক্রান্ত সমস্ত প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা যায়নি। তাই প্রত্যাবাসন পিছিয়ে গেছে। এবিসি নিউজের বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক রোহিঙ্গাই নিজেদের গ্রামে ফিরতে চাইলেও এখনি প্রস্তুত নয়। জাস্টিন ফরসিথ বলেন, ‘এখন ফিরে যাওয়ার জন্য নিরাপদ নয়। আমাদের মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে তারপর তাদের ফেরত পাঠাতে হবে। উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সহিংসতার পর রোহিঙ্গাদের ওপর নিধনযজ্ঞ জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা ও ধর্ষণ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে উল্লেখ করেছে। রিচার্ডসন দাবি করেছেন, মামলার প্রসঙ্গটি তোলায় অগ্নিশর্মা হয়ে উঠেন সু চি। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চলা মামলা পরামর্শক পর্ষদের কাজের অংশ নয়। পরে নৈশভোজেও তাদের মধ্যে এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। সু চির মুখপাত্র বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে বলেন, রাখাইন ইস্যু নিয়ে বৈঠকে বসেছিল পরামর্শক পর্ষদ। তিনি দাবি করেন, (রিচার্ডসন) বৈঠকের আলোচ্যসূচির বাইরে গিয়ে কথা বলেন এবং ফ্রেমওয়ার্কের বাইরে চলে যান।’ তিনি বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝির কারণে তার পদত্যাগে আমরা দুঃখিত।’ রয়টার্স, এবিসি নিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতিসংঘ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ