Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নতুন যুগে পাকিস্তান ক্রিকেট

| প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আবুধাবীর শেখ জায়দ স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাকিস্তান একাদশ আজ যখন মাঠে নামবে তখন অজান্তেই ক্রিকেট পিপাশুদের চোখ খুজে ফিরবে দুটি মুখÑ ইউনিস খান ও মিসবাহ-উল-হক। সাদা পোষাকে পাকিস্তান ক্রিকেট মানেই যে ইউনিস-মিসবাহকেই বুঝে ক্রিকেট ভক্তরা। আসল সত্যটা হলোÑ শুধু আজ নয়, পাকিস্তান দলে কখনোই দেখা যাবে না এই দুই কিংবদন্তিকে। গত মে মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ শেষেই চলে গেছেন অবসরে। তাদের ছাড়া এই প্রথম মাঠে নামছে পাকিস্তান। ফলে আবুধাবীতে পাকিস্তান ক্রিকেট আজ নতুন যুগে প্রবেশ করছে বললে একটুও বাড়িয়ে বলা হবে না।
ইউনিস ও মিসবাহকে ছাড়া টেস্ট ক্রিকেটে খেলতে নামা পাকিস্তানের জন্য একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা। গত সাত বছরে এই দুজন ছিলেন টেস্ট দলের অপরিহার্য্য অঙ্ক। পাকিস্তানের সামনে এখন ঘরের মাঠে আবারো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরিয়ে আনার হাতছানি। আগামী মাসে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের টি-২০ সফরের মাধ্যমে সেই দ্বার আরো উন্মোচনের অপেক্ষায় এখন গোটা জাতি। ঠিক এই মুহূর্তে দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে হারিয়ে টেস্ট অঙ্গনে নিজেদের মর্যাদা ধরে রাখাও এখন পাকিস্তানের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
ইউনিস ও মিসবাহ একসাথে পাকিস্তানের জার্সি গায়ে ১৯৩টি টেস্ট খেলেছেন। দু’জনে মিলে সংগ্রহ করেছেন ১৫৩৩১ রান। তাদের সহায়তায় মূলত গতবছর আগস্টে প্রথমবারের মত পাকিস্তান বিশ্ব টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান দখল করে। ২০০৯ সালে লাহোঠে শ্রীলঙ্কা দলকে বহনকারী বাসে সন্ত্রাসী হামলার পরে পাকিস্তানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজনের নিষেধাজ্ঞা আসে। সেই প্রেক্ষিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে পাকিস্তানের হোম ভেন্যু হিসেবে অনুমোদন দেয় আইসিসি।
তারপর থেকে মরু শহরগুলোতে অনুষ্ঠিত হোম টেস্ট সিরিজে ইউনিস-মিসবাহ’র দাপট ছিল সর্বাগ্রে। এই দু’জন এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত নয়টি সিরিজের একটিতেও পরাজিত হয়নি পাকিস্তান। মিসবাহ’র পরিবর্তে টেস্ট দলের দায়িত্ব পাওয়া সরফরাজ আহমেদের সামনে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখাই এখন মূল দায়িত্ব। এ সম্পর্কে সরফরাজ বলেছেন, ‘অবশ্যই ব্যাটিংয়ে তাদের অভাব পূরণ করার মত নয়। তাদের যথেষ্ঠ অবদান ছিল। কিন্তু তারপরেও এখন আমাদের সামনে এগিয়ে যাবার পথ খুঁজতে হবে।’
১০,০৯৯ রান নিয়ে ইউনিস শুধুমাত্র পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকই নন, ¯িøপ ফিল্ডার বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিতা ইউনিস ১১৮ টেস্টে রেকর্ড ১৩৯টি ক্যাচ তালুবন্দী করেছেন। অপরদিকে মিসবাহ ব্যাটসম্যানের পাশাপাশি তার অধিনায়কত্বের প্রতিভা দিয়ে দলে নিজের অবস্থান সুসংহত করেছিলেন।
টেস্ট অঙ্গনে দ্রæত নিজেকে উঠিয়ে নিয়ে বাবর আজম চার নম্বরে ব্যাটিং করবে। অন্যদিকে এখনো টেস্ট না খেলা হারিস সোহেলকেও মূল একাদশে দেখা যেতে পারে। আজহার আলী ও আসাদ শফিককে ব্যাটিংয়ে নেতৃত্বে দেখার সম্ভাবনাই বেশী। যদিও হাঁটুর ইনজুরির কারনে আলীর প্রথম টেস্টে খেলা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। পাঁচ ফাস্ট বোলারের সাথে মূল স্পিনার হিসেবে দলে রয়েছেন অভিজ্ঞ ইয়াসির শাহ। দুই বছর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাকিস্তানের ২-১ সিরিজ জয়ে শাহ ২৪টি উইকেট নিয়েছিলেন। তার সাথে সহকারী হিসেবে দেখা যেতে পারে নতুন স্পিনার মোহাম্মদ আসগর ও বিলাল আসিফকে।
গত মাসে ঘরের মাঠে ভারতের কাছে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ পরাজিত হয়েছে শ্রীলঙ্কা। কাফ পেশীর টানের কারনে দলে থাকছেন না অভিজ্ঞ অল-রাউন্ডার ও অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। তার পরিবর্তে দলের দায়িত্ব পাওয়া অধিনায়ক দিনেশ চান্ডিমাল মনে করেন পাকিস্তান অবশ্যই মিসবাহ ও ইউনিসের অভাব বোধ করবে। তবে পাকিস্তানের তরুণ দলটিকেও মোটেই খাটো করে দেখছে না শ্রীলঙ্কা।
গত মাসে ইনজুরিতে থাকা দুই পেসার নুয়ান প্রদীপ ও সুরাঙ্গা লাকমাল সুস্থ হয়ে দলে ফিরেছেন। দুই ম্যাচ সিরিজ জয়ে তাদের মূল ভরসা অভিজ্ঞ বাঁ-হাতি স্পিনার রঙ্গানা হেরাথ। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯ টেস্টে হেরাথ নিয়েছেন ৯০ উইকেট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ