নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ইংল্যান্ডের বিখ্যাত নর্থ-ওয়েস্ট ডার্বি শেষে অ্যানফিল্ডের স্কোরবোর্ডের ছবি পোস্ট করে লিভারপুল সমর্থকরা লিখে চলেছেন- ‘নট রোনালদো, নট ক্যানটনা, নট ব্যাকহাম অর বেস্ট, দিস সেভেন সুটস ম্যানইউ দ্য বেস্ট’। ঘন্টাখানেক আগে অ্যানফিল্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের উপর যে ঝড় বইয়ে দিয়েছে অলরেডরা, সেটাকে ইঙ্গিত করেই এমন খোঁচা মারা জয়োল্লাস সমর্থকদের। এমন বুনো উচ্ছ¡াসের কারণ, ঘন্টা কয়েক আগে যে চির প্রতিদ্ব›দ্বী ইউনাইটেডকে ৭-০ গোলে উরিয়ে দিয়েছে লিভারপুল! মৌসুমের শুরু থেকে বারবার ছন্দ হারানো অলরেডরা আবারও দেখাল প্রিয় প্রতিপক্ষকে পেলেই তারা সবসময়ের সমহিমায় জ্বলে উঠে।
পরশুরাতে স্বাগতিকরা বিরতিতে যায় কোডি গাকপোর গোলে এগিয়ে থেকে। তখনও কে জানত দ্বিতীয়ার্ধে কি অপেক্ষা করছে ইউনাইটেডের কপালে। শুরুটা তাই শেষ দিক থেকে করা যাক। ম্যাচের তখনো মিনিট ১৫ বাকি। অ্যানফিল্ডের গ্যালারিতে আওয়াজ উঠল- ‘উই ওয়ান্ট সিক্স’, উই ওয়ান্ট সিক্স’! ৮৩ মিনিটে সে চাওয়াও প‚র্ণ! কোডি গাকপো আর ডারউইন নুনেজের দেখাদেখি ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করলেন মোহাম্মদ সালাহও। কিন্তু তখনো তো অন্তত ৭ মিনিট বাকি, অ্যানফিল্ড গ্যালারিও মজা পেয়ে গেল! এবারের আওয়াজ- ‘উই ওয়ান্ট সেভেন’, উই ওয়ান্ট সেভেন’!
লিভারপুলের ফুটবলাররা সমর্থকদের জন্য যেন হয়ে গিয়েছিলেন সান্তা ক্লজ! ৮৮ মিনিটে আবার ইউনাইটেডের জালে বল! এই মৌসুম শেষেই লিভারপুলে যাত্রা শেষ বলে জানিয়ে ক্লাবটার সমর্থকদের আবেগে ভাসানো রবার্ত ফিরমিনো স্কোরশিটে নাম লেখালেন। ইউনাইটেডের ভাগ্য ভালো যে ‘উই ওয়ান্ট এইট’ আওয়াজ ওঠেনি গ্যালারিতে। বিশাল ৭-০ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে লিভারপুলের হয়ে জোড়া গোল পেয়েছেন গাকপো, নুনেজ ও সালাহ। তাতেই রেকর্ড বইয়ে ওলট-পালট।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে পাল্টা আক্রমণের পর বাঁ দিক থেকে ঢুকে গাকপোর দারুণ গোলে এগিয়ে যাওয়া লিভারপুলের, এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ফুটবলের পাশাপাশি ছেলেখেলা করেছে ইউনাইটেডকে নিয়ে। ৪৭ মিনিটে নুনেজের হেডে দ্বিতীয় গোল। তিন মিনিট পর আবারও ডান দিক দিয়ে ভয়ংকর পাল্টা আক্রমণে উঠে মো সালাহ পায়ের নাচনে চক্কর খাইয়েছেন ইউনাইটেডের আর্জেন্টাইন সেন্টারব্যাক লিসান্দ্রো মার্তিনেসকে, এরপর তার থ্রু ধরে দুর্দান্ত চিপে ম্যাচে খাকপোর দ্বিতীয় গোল। ইউনাইটেডের ম্যাচে ফেরার বিশ্বাস আর নিজেদের ক্ষমতায় গর্ব ওই এক গোলেই চুরমার।
ইউনাইটেডের ইতিহাসে প্রতিযোগিতামূলক কোনো ম্যাচে সবচেয়ে বড় হারের রেকর্ড ছোঁয়া হয়ে গেছে। আগের রেকর্ডটাও সেই ১৯৩০-এর আশপাশে! ১৯২৬ থেকে ১৯৩১ এই ছয় বছরে তিনবার বø্যাকবার্ন, অ্যাস্টন ভিলার পর উলভারহ্যাম্পটনের কাছে ৭-০ ব্যবধানে হেরেছিল ইউনাইটেড। ম্যাচ শেষে তাই বাকরুদ্ধ ইউনাইটেডের ডাচ কোচ জানান, ‘এমন ফল অবশ্যম্ভাবী ছিল, কারণ আমরা ছিলাম অপেশাদার। মাঠে সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিয়েও অপেশাদার ছিলাম আমরা।’ লিভারপুলের ইতিহাসে এর চেয়ে বড় জয় তো এই মৌসুমেই আছে, লিগে বোর্নমাউথকে ৯-০ গোলে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ক্লপের দল। তবে পরশু ধারাভাষ্যকার যেমন বলছিলেন, ‘লিভারপুলের জন্য এই ৭-০ যেকোনো ক্লাবের বিপক্ষে নয়, এটা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে’। রেকর্ড বইও তার সাক্ষ্য দিচ্ছিল। চিরপ্রতিদ্ব›দ্বীদের বিপক্ষে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে এটিই লিভারপুলের সবচেয়ে বড় জয়।
এ জয়ে লিভারপুলের সেরা চারে থেকে আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নেয়ার আশা আরও জোর পেল। ২৫ ম্যাচে ৪২ পয়েন্ট ক্লপের দলের, এই মুহ‚র্তে তারা আছে পয়েন্ট তালিকার পাঁচ নম্বরে। চারে থাকা টটেনহ্যামের পয়েন্ট ২৬ ম্যাচে ৪৫। অবশ্য ছয় নম্বরে থাকা নিউক্যাসল ২৪ ম্যাচে পেয়েছে ৪১ পয়েন্ট। সাতে থাকা ফুলহ্যামের পয়েন্ট ২৫ ম্যাচে ৩৯, তবে ২৩ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে আট নম্বরে থাকা ব্রাইটনও এবার সেরা চারের দৌড়ে থাকা দলগুলোর মাথাব্যথার কারণ। পয়েন্ট তালিকার তিন নম্বরেই থাকা ইউনাইটেডেরে ২৫ ম্যাচ শেষে সংগ্রহ ৪৯ পয়েন্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।