নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী, গল (শ্রীলঙ্কা) থেকে, টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস মানেই মুশফিকুরের প্রতিরোধ, টেস্টের আদর্শ ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করা। চলমান টেস্টেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অন্যরা যেখানে রানের জন্য করেছেন ছটফট, সেখানে একটি বাজে বলের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনেছেন। প্রথম বাউন্ডারির জন্য অপেক্ষা মুশফিকুরের ৮৯টি বল! প্রথম ২২ রানে নেই কোনো বাউন্ডারি!
প্রথম বাউন্ডারি শটটি পরিণত ছক্কায়, এবং ওই শটটিও ক্রিকেটিং। লাহিরু কুমারাকে কভার ড্রাইভে সিঙ্গল শটে টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৬তম ফিফটি উদযাপনের দিনে সেঞ্চুরিটা ছিল তার প্রাপ্য। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনা এবং চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসে ১০৯’র পর ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনায় দ্বিতীয় ইনিংসে ডাবলে (২০৬ রান) প্রাপ্ত তামীমের উপর্যুপরি ৩ সেঞ্চুরির সেই কৃতিত্বকে ছুঁয়ে ফেলতে পারতেন মুশফিক। ওয়েলিংটন টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫৯ রানের ইনিংসের পর হায়দারাবাদে লড়াকু ১২৭, কিপিং ছেড়ে ব্যাটিং অর্ডারে ৬ থেকে ৪ এ প্রমোশন পেয়ে পুরো দলের দায়িত্বটা যেনো একাই নিয়েছিলেন। কিন্তু পার্টনারদের ব্যর্থতায় ১৫ রান দূরে থেকে থেমে গেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এক এন্ডে হেরাথ, অন্য এন্ডে পেরেরা হয়ে উঠেছেন ভয়ঙ্কর। এমন পরিস্থিতিতে টেল এন্ড ব্যাটসম্যান শুভাশীষের উপর আস্থা রাখা যায় কি করে? একটি একটি করে ওভার পার করতে তাই ওভারের প্রথম তিনটি বল ডট করে, ৪র্থ, ৫ম অথবা ৬ষ্ঠ বলে সিঙ্গলের জন্য নিয়েছেন ঝুঁকি। ৯২-৯৫,এই চারটি ওভার এভাবেই হিসেব মিলিয়ে খেলেছেন। খেলতে চেয়েছিলেন ৯৬তম ওভারেও। হেরাথের চতুর্থ বলে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে চেয়ে বের করতে চেয়েছেন সিঙ্গল। অংকের হিসেবটা সেখানেই মেলেনি মুশফিকুরের। বলটা নিচু হয়ে,ব্যাট-প্যাডের ফাঁক খুঁজে আঘাত হেনেছে স্ট্যাম্পে। তারপরও তার ৪ ঘণ্টা ৮ মিনিট স্থায়ী ইনিংসটিই পাচ্ছে বাহাবা। যে ইনিংসেই বাংলাদেশ এড়াতে পেরেছে ফলোঅন। স্কোর ৩’শ তে টেনে নিতে পেরেছে বাংলাদেশ মুশফিকুরের দৃঢ়চেতা ইনিংসেই।
ম্যাচের দ্বিতীয় দিন ব্যাটিংয়ে এসে দেখেছেন সৌম্য’র অ-ক্রিকেটীয় শটে ফাইন লেগে মৃত্যু, অপরিণামদর্শী শটে সাকিবের কট বিহাইন্ডে ফিরে যাওয়া, বলের লাইনে না যাওয়ার অপরাধে মাহামুদুল্লাহ’র অফ স্ট্যাম্প উড়ে যাওয়া এবং স্লিপে ক্যাচ প্র্যাকটিস করিয়ে লিটনের মৃত্যু। ১৩৩/২ থেকে স্কোরশিটের চেহারা যখন ১৯২/৬Ñতখন দলের এতো বড় বোঝা বইবেন কিভাবে? তার পরও যতোক্ষণ মুশফিক,ততোক্ষণ স্বপ্নÑসাগরে খড় খুঁটো ধরে বেঁচে থাকার মতোই অবলম্বন ছিলেন মুশফিক। ৭ম জুটিতে তিন অংকের কোটা পেরুনোর দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের হাতে গোনা, গতকাল মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে ১০৬ রানের পার্টনারশিপটি টেস্টে এই বাংলাদেশের ৭ম জুটির ৫ম সেঞ্চুরি। জানেন, এই ৫টি সেঞ্চুরির পার্টনারশিপে ৪টিতেই অংশীদার তিনি। ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাহামুদুল্লাহকে নিয়ে হ্যামিল্টনে ১৪৫, ২০০৮ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে মিরপুরে সাকিবকে নিয়ে ১১১, ২০১০ সালে মাহামুদুল্লাহ’র সঙ্গে বোঝাপড়ায় ভারতের বিপক্ষে ১০৮’র পর গতকাল মিরাজকে নিয়ে দিয়েছেন ১০৬ রানের পার্টনারশিপে নেতৃত্ব। জানেন, এই বছরে ৩ টেস্টে ৫ ইনিংসে মুশফিকুরের রান ৪০৭Ñগড়টা ১০১.৭৫! এবং এই তিনটি টেস্টই খেলেছেন বিদেশের মাটিতে।
হায়দারাদ টেস্টের পর গল টেস্টÑমুশফিকুরের এমন বীরোচিত ইনিংস কাছ থেকে দেখেছেন সৌম্য সরকার। টেস্টে মুশফিকুরের এমন ব্যাটিং বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের জন্য শিক্ষণীয়, তা মানছেন সৌম্যÑ‘ওনার ব্যাটিং দেখে শেখার অনেক কিছুই আছে। মুশফিক ভাই আজ (গতকাল) প্রপার টেস্ট খেলেছেন। শুরুতে সময় নিয়ে উইকেটে মানিয়ে নিয়েছেন। অন্যরা প্রথম দিকে চার মারলেও তিনি বাউন্ডারির জন্য নিয়েছেন সময়।’ টেস্টে টিমমেটদের ব্যাটিং শিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন যিনি, সেই মুশফিকুরের অবধারিত সেঞ্চুরি হাতছাড়া হওয়ার দায়টাও যে নিতে হচ্ছে টিমমেটদেরই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।