নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের ব্রিসবেন থেকে তাসমানিয়ার হোবার্ট- শহর কিংবা রাজ্যের হিসেবে দূরত্বটা প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটারের। বিমানে এই দূরত্ব অতিক্রমের সম্ভাব্য সময় লাগে সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা। অথচ এই পথটুকুই বাংলাদেশ ক্রিকেট দল পাড়ি দিল প্রায় ১০ ঘণ্টায়! বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পিছু পিছু এই দীর্ঘ ভ্রমণে ছায়ার মতো ব্রিসবেন থেকে হোবার্টে পৌঁছেছে বেরসিক বৃষ্টিও! অনাহুত এই অতিথিকে সঙ্গী করেই বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচের শহর হোবার্টে পৌঁছেছেন সাকিব আল হাসানরা। আর তাতেই ভেসে গেছে দলের দুটি পরিকল্পনা। প্রথমত, আরও এক দিনের অনুশীলন বাতিল হয়ে গেছে। দ্বিতীয়ত, ম্যাচের ভেন্যু বেলেরিভ ওভালের উইকেট দেখতে যাওয়ার কথা ছিল দলের কয়েকজনের। কিন্তু বৃষ্টির কারণে উইকেটের কাভারই সরানো হয়নি।
অনুশীলন না করার পেছনে অবশ্য ভ্রমণ ক্লান্তিও একটি বড় কারণ। গতকাল ভোর সোয়া ৫টায় ব্রিসবেনের টিম হোটেল থেকে বের হয় দল। মেলবোর্নে ট্রানজিট পর্যন্ত সময়মতোই ছিল সবকিছু। কিন্তু সেখান থেকে হোবার্টের ফ্লাইট পিছিয়ে যায় দুই দফায়। বিমানবন্দরে অপেক্ষার পর বিমানে ওঠার পরও বসে থাকতে হয় বেশ কিছুক্ষণ। শেষ পর্যন্ত বিকেল হোবার্টে পা রাখে দল। চারটায় চেক ইন করে সিটি সেন্টারের ক্রাউন প্লাজা হোটেলে। লম্বা এই ভ্রমণের ধকলের পর রাতে নির্ধারিত সূচিতে অনুশীলন করাটা কঠিনই হতো ক্রিকেটারদের জন্য। সেই সিদ্ধান্ত পরে সহজ করে দিয়েছে বৃষ্টি। দলের টিম অপারেশন্স ম্যানেজার রাবিদ ইমাম যেমন বলছিলেন, ‘৮-৯ ঘণ্টার ভ্রমণের পর প্র্যাকটিস খুব ভালো হতো না এমনিতেও। এখন সবাই একটু রিল্যাক্সড হয়ে রিকভারি করার সময়টা পাবে।’
অনুশীলনের মতোই সমান কিংবা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল সম্ভবত ম্যাচের উইকেটে চোখ রাখা। এ দিন বাংলাদেশের অনুশীলন ছিল হোবার্টের কিংস্টন টুইন ওভাল মাঠে। ম্যাচের ভেন্যু বেলেরিভ ওভার থেকে অনেকটাই দূরে এই মাঠ। এমনকি আজ ম্যাচের আগের দিনও কিংস্টন টুইন ওভালেই বাংলাদেশ দলের অনুশীলন। বেলেরিভ ওভালে একদিনও অনুশীলন না করেই তাই আগামীকাল নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে ম্যাচ খেলতে হবে বাংলাদেশকে। একই বাস্তবতা অবশ্য ডাচদের জন্যও।
গতকাল উইকেট দেখতে না পেরে বিকল্প পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ দল থেকে। আজ স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় বেলেরিভ ওভালে শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডের ম্যাচ। এই ম্যাচের আগে সকালে দলের কয়েকজন মাঠে গিয়ে উইকেট পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানালেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন, ‘আমাদের পরিকল্পনা আছে সকালে মাঠে যাওয়ার। উইকেট তো বটেই, কালকে যেহেতু খেলাও আছে একটা, কিছুক্ষণ খেলা দেখব আমরা কয়েকজন।’ তবে এই পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত কতটা বাস্তবায়িত হবে, প্রবল সংশয় আছে সেটি নিয়েও। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বৃষ্টির চোখরাঙানি আছে রোববারও। বাংলাদেশের অনুশীলন, মাহমুদ-সাকিবদের উইকেট দেখার আশা, সবকিছুতে তাই পানি ঢেলে দিতে পারে বিরূপ প্রকৃতি।
ব্রিসবেনে একটি অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচ ও শেষ দিনের অনুশীলন পণ্ড হয়েছে বৃষ্টির কারণে। হোবার্টেও যদি প্রস্তুতি নিতে না পারেন ক্রিকেটাররা, প্রথম ম্যাচের আগে তাহলে টানা তিন দিন অনুশীলন ছাড়া থাকতে হবে দলকে। মূল লড়াইয়ে আগে তখন জড়তা ও ছন্দহীনতা ভর করাটা অস্বাভাবিক নয়। যদিও আজ বৃষ্টি হলে স্থানীয় তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনডোরে অনুশীলনের পরিকল্পনা আছে দলের। তবে তাতে তো আর মাঠের স্বাদের কাছাকাছি কিছ্ওু পাওয়া যাবে না।
দলের সঙ্গে থাকা বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস অবশ্য এটিকে খুব বড় ব্যাপার মনে করছেন না। বোর্ডের এই পরিচালকের মতে, দলের প্রস্তুতি এর মধ্যেই পর্যাপ্ত হয়ে গেছে, ‘ব্রিসবেনে শেষ দিনে অনুশীলন করতে পারেনি বৃষ্টির জন্য। তবে তার আগে কয়েকদিন অনুশীলন হয়েছে। ভালোই হয়েছে সেটা, খেলোয়াড়দের কাছ থেকে যা জানতে পেরেছি।। তারা বেশ সন্তুষ্ট এবং কোচও সন্তুষ্ট, যতদিন সেখানে অনুশীলন হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যে প্রস্তুতি ম্যাচটা হওয়ার কথা ছিল, সেটা হলে সামনের ম্যাচগুলোর জন্য ভালো হতো। অবশ্যই, একটা ক্ষতি। ম্যাচ খেলার তো বিকল্প নেই। এখানেও শুনছি যে পূর্বাভাসে বৃষ্টি আছে। বৃষ্টি হতে থাকলে অনুশীলন বাধাগ্রস্ত হবেই। অনুশীলন না হলে অবশ্যই কিছুটা তো আমাদের প্রস্তুতিতে প্রভাব ফেলবেই। তারপরও আমি মনে করি, ক্রিকেটাররা মনে করে, যতটা অনুশীলন হয়েছে, নিউজিল্যান্ড থেকে যেভাবে খেলে এসেছে তারা, একটা ধারাবাহিকতা আছে অনুশীলনে। সুতরাং তারা মনে করে যে বৃষ্টি হলে ও অনুশীলন না হলেও মোটামুটির ভেতর তারা প্রস্তুত।’
যে ম্যাচকে ঘিরে প্রস্তুতি নিয়ে এত আলোচনা, সেই ম্যাচের ওপরই অবশ্য বড় এক শঙ্কার খড়গ ঝুলছে। আবহাওয়া বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়েদারঅস্ট্রেলিয়াডটইনফো অনুযায়ী, ম্যাচের আগের রাত থেকেই আকাশ থাকবে মেঘলা। ম্যাচের দিন সকাল ১০টা থেকে টানা বৃষ্টি আছে রাত ১১টা পর্যন্ত। আবহাওয়া বিষয়ক আরেক পরিচিত ওয়েবসাইট অ্যাকুওয়েদার বলছে, সোমবার বৃষ্টির শঙ্কা আছে শতকরা ৯০ ভাগের বেশি। ম্যাচ হওয়া নিয়েই তাই আছে শঙ্কা। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত না হলে কোন দল বেশি হতাশ হবে, তা নিয়ে তর্ক জমতে পারে তুমুল। বাংলাদেশের জন্য অবশ্যই তা হবে হতাশার। নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে জয়টি তো প্রত্যাশিতই হওয়ার কথা। তেমনি নেদারল্যান্ডসও মূল পর্বে যে কয়টি ম্যাচকে ঘিরে স্বপ্ন বুনছে, সেখানে নিশ্চিতভাবেই আছে এই ম্যাচ!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।