নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মাস দুয়েক আগে তাদের দেশের কাউকেও যদি বলা হতো, ‘এশিয়া কাপে দারুণ করবে শ্রীলঙ্কা’- পাগলের প্রলাপ বলে উড়িয়ে দিত তারাই। রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক সঙ্কটে টালমাটাল হওয়ায় দেশটি থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে আনা হলো এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চ। সেই মরুর দেশে এসেই লড়াইয়ের রসদ পেল দাসুন শানাকার দল। প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায়ই করে দিল বাংলাদেশকে, উড়তে থাকা আফগানিস্তানকে নামালো মাটিতে, দাম্ভিক ভারতকে দেখাল উল্টোরথ- এবার সেই দলটিই ফাইনালের মঞ্চে মুখোমুখি আরেক পরাশক্তি পাকিস্তানের। যাদের নিজ দেশেও চলছে স্মরণকালের ভয়াবহতম বন্যা। মানুষ মরছে নিত্য, অর্ধাহারে-অনাহারে কাটছে জীবন, গৃহহীন লাখো প্রাণ। তবে ক্রিকেটীয় একটি জয় এনে দিতে পারে একটু শান্তির পরশম এক টুকরো হাসির ঝিলিক। দেশের জনগনের মুখে সেই হাসি ফোটানোর ফাইনাল আজ। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় হবে এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির শিরোপা লড়াই।
অপ্রয়োজনীয় এবং অলাভজনক অবকাঠামো নির্মাণ এবং বিপুল বৈদেশিক ঋণে চাপে কয়েক মাস আগে দেশকে দেউলিয়া ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায় ১০-১৫ গুণ। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। তারা সরকারের এমপি-মন্ত্রীদের পিটিয়ে তাদের বাড়িঘর দখল করে। প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে যান। তবে জনগণের এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ফলদায়ক হয়নি। কারণ বিকল্প কোনো নেতৃত্ব তৈরি হয়নি এই আন্দোলনে। ঘুরেফিরে তাই সেই রাজাপক্ষে পরিবারের হাতেই চলে যায় ক্ষমতা। এই মুহূর্তে পরিস্থিতি ফেরাতে তাদের প্রয়োজন অর্থ। কিন্তু দেউলিয়া দেশকে এত অর্থ কে দেবে? তাই চরম অর্থনৈতিক সংকটে দিন কাটছে শ্রীলঙ্কার বাসিন্দাদের। না খেয়ে কিংবা আধাপেটা হয়েই চলছে তাদের জীবন। এই সময়ে শ্রীলঙ্কা দল এশিয়া কাপ জিতলে যে তাদের জনগণ কিছুটা হলেও মানসিক প্রশান্তি পাবে, তা বলাই বাহুল্য।
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার মতো এত খারাপ অবস্থা না হলেও পাকিস্তানে চলছে ভয়াবহ বন্যা। দেশটির ২২ কোটি বাসিন্দার অন্তত সোয়া তিন কোটি মানুষকেই এবারের এই বন্যা চরম বিপাকে ফেলেছে। মৃত্যু বেড়ে ১৪০০ জনের কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে। রেকর্ড বর্ষণ আর উত্তরের পাহাড়গুলোর হিমবাহ গলে বিপুল পরিমাণ পানি আসায় এবারের এ নজিরবিহীন বন্যা দেখা দিয়েছে পাকিস্তানে। ইতিমধ্যে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ছক্কায় ম্যাচ জেতানো পেসার নাসিম শাহ তার সেই বিখ্যাত ব্যাটটি বন্যার্তদের সহায়তায় নিলামে তুলতে যাচ্ছেন। বন্যাদুর্গত পরিবারগুলোর মুখে হাসি এনে দিতে পারে এশিয়া কাপের শিরোপা জয়।
৬ দল নিয়ে শুরু হয়েছিল প্রতিযোগিতা। গ্রুপ লিগ ও সুপার ফোর রাউন্ড পেরিয়ে ফাইনালে মুখোমুখি হতে চলেছে পাকিস্তান ও শ্রালঙ্কা। দুই দলই প্রতিযোগিতার শুরুটা হার দিয়ে করেছিল। ভারতের বিরুদ্ধে হারতে হয়েছিল পাকিস্তানকে অপরদিকে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে হেরেছিল শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকে দুর্দান্তভাবে কামব্যাক করে এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছায় দুই দল। সুপার ফোর পর্বে ভারত ও আফগানিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট পাকা করে বাবর আজমের দল। যদিও শ্রীলঙ্কার কাছে নিয়মরক্ষার ম্যাচে হারের মুখ দেখতে হয় পাকিস্তানকে। অপরদিকে, সুপার ফোর রাউন্ডে একটিও ম্যাচ না হেরে শেষ লড়াইয়ে পৌঁছেছে শানাকার দল।
এশিয়া কাপের ফাইনালে দু’দলের মুখোমুখি সাক্ষাৎ এই প্রথম নয়। বরং এর আগে তিনবার এশিয়া কাপের খেতাবি লড়াইয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছে দুই দেশ। দু’বার শ্রীলঙ্কা টেক্কা দিয়েছে পাকিস্তানকে। একবার বাজিমাত করেছে পাকিস্তান। সুতরাং, সেই নিরিখে শ্রীলঙ্কা এক পা এগিয়ে রয়েছে বলা যায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এবারের এশিয়া কাপ হচ্ছে ক্ষুদ্র ফরম্যাটে। এই সংস্করণে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা মুখোমুখি হয়েছে মোট ২১ বার। যেখানে ১৩ জয় নিয়ে শ্রীলঙ্কার (৮ জয়) ঢের এগিয়ে বাবরের দল। তবে বর্তমান ফর্ম বিবেচনায় ফাইনালে একে অপরকে এক ইঞ্চিও ছাড় যে দেবেনা তা বলে দেয়াই যায়। উদ্দেশ্যটাও যে মহত, দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানো!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।