Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

হুমকিতে ওয়ানডের ভবিষ্যৎ!

আব্দুর রাজ্জাক | প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০২২, ১২:০৪ এএম

আধুনিক ক্রিকেটে বিভিন্ন ফ্রাঞ্চাইজি লিগ যুক্ত হওয়ায়, জাতীয় দলের হয়ে তিন সংস্করণে ক্রিকেট খেলতে হাপিয়ে উঠছেন ক্রিকেটাররা। একই সাথে বিভিন্ন সংস্করণে খেলা কঠিন হয়ে পরায় অল্প সময়েই কেউ ছেড়ে দিচ্ছেন টেস্ট কেউবা ওয়ানডে আবার কেউ একবোরেই তুলে রাখছেন জাতীয় দলের জার্সি। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডে ক্রিকেট নিয়ে ব্যাপক আলোচনা, যার সূত্রপাতটা হয়েছে মুলত গত মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ খেলেই ওযানডেকে বিদায় জানানো বেন স্টোকসকে কেন্দ্র করে। ৩১ বছর বয়সী এই ইংলিশ অলরাউন্ডার ১০৪টি আন্তর্জাতিক ওডিআই খেলেই ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জেতানোর নায়ক আচমকা নিলেন অবসর। স্টোকসের ওয়ানডে ছেড়ে দেওয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়ানডে সুপার লিগের পয়েন্ট ছেড়ে দেওয়ার পরই ওয়ানডে নিয়ে তৈরি হয় আলোচনা।
কদিন আগে অস্ট্রেলিয়ান টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ওসমান খাজা বলেছেন, ওয়ানডে ক্রিকেট ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে। পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা সুইংয়ের রাজা ওয়াসিম আকরাম সরাসরি ওয়ানডে ক্রিকেটকে তো বাদ দেওয়ারই কথা বলে দিয়েছেন। আরো অনেকে এই সংস্করণ নিয়ে আলোচনা তুললেও কুইন্টন ডি ককের গলায় ভিন্ন সুর। তার মতে ওয়ানডে ক্রিকেট এখনও দারুণ প্রতিদ্ব›দ্বীতামূলক ক্রিকেট উপহার দিচ্ছে, এখনও অনেকে বিশ^কাপ জয়ের স্বপ্ন দেখছে। বৃষ্টিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে পরিত্যক্ত হওয়ার পর এসব কথা বলেন দক্ষিণ আফ্রিকান উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান।
পরিবারকে বেশি সময় দিতেই বাবা হওয়ার কদিন আগে গত বছরের শেষের দিকে ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণ ছেড়ে দেন ডি কক। এ নিয়ে তার কোন অনুশোচনা নেই। কিন্তু পরিবারকে তার এখনো সেভাবে সময় দেওয়া হয়ে উঠছে না। টেস্ট থেকে অবসরের পরও এই না পারার কারণ হিসেবে তিনি সামনে এনেছেন দুনিয়া জুড়ে তার টি-টোয়েন্টির ব্যস্ততা। নিজের এই অক্ষমতাই যেন বোধোদয় হলো নতুন এক বাস্তবতার। একসাথে তিন সংস্করণে খেলা সম্পর্কে তাই ডি কক বললেন, ‘ক্রিকেটারদের জন্য বিষয়টি কঠিন হতে শুরু করছে। বছরজুড়ে তিন সংস্করণে আরো বেশি ম্যাচ হচ্ছে, ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, তারা যদি তিন সংস্করণেই খেলতে চায় আমি খুশি। তবে তাদের সিদ্ধান্ত তাদেরই নিতে হবে।’
দক্ষিণ আফ্রিকান এই ব্যাটসম্যান বর্তমানে দলের সাথে রয়েছেন ইংল্যান্ডে, টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের পর ভারতে আরেকটি সাদা বলের সিরিজ খেলার আগে দ্য হান্ড্রেট, সিপিএল খেলবেন এবং বর্তমানে তিনি আইপিএলের লক্ষেèৗ সুপার জায়ান্টের হয়ে খেলছেন।
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও কোচ শাস্ত্রী তো প্রতিদিনই এই বিষয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে কথা বলে চলেছেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্বকাপ রেখে ছেঁটে ফেলা হক দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ। এবার তার আরেকটি চিন্তার কথা জানা গেল। সেই চিন্তা অবশ্য প্রথমে তুলেন পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি। ওয়ানডে এক সময় সবচেয়ে কম বলে সেঞ্চুরির মালিক ছিলেন তিনি, ‘পাকিস্তানের সামা টিভির এক আলোচনায় আফ্রিদি বলেছিলেন, ‘ওয়ানডে ক্রিকেট এখন পানসে হয়ে গেছে। এটাকে আকর্ষণীয় করতে ৫০ ওভার থেকে খেলাটা ৪০ ওভারে নামিয়ে আনা যায়।’ ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে চলাকালীন ধারাভাষ্যে এক আলোচনায় এই কথায় সায় দেন শাস্ত্রী। উদাহরণ হিসেবে তিনি দেখান ওয়ানডের ওভার সংখ্যা তো কমিয়ে আনা হয়েছে আগেও, ‘ওয়ানডে যখন শুরু হয় তখন খেলা হতো ৬০ ওভারের। ১৯৮৩ সালে আমরা যেবার বিশ্বকাপ জিতলাম, সেবারও ৬০ ওভারের খেলা হয়েছিল।’
বাংলাদেশ ক্রিকেটেও বর্তমানে টানা সূচীর ধকলের জন্য বিশ্রামের চিত্র দেখা যায়। বছরের বিভিন্ন সময় পরিবারকে সময় দিতে কিংবা বিভিন্ন ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক আসরের জন্য টেস্ট, ওয়ানডে অথবা পূর্ণাঙ্গ সিরিজ থেকে বিশ্রাম নিতে দেখা যায় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে। এছাড়া ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই মুস্তাফিজুর রহমানের টেস্ট অনীহা ক্রিকেট পাড়ায় বেশ প্রচলিত।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ