Inqilab Logo

সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

লজ্জার ব্যাটিংয়ে বড় হার

বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ১৯৪/৯ দ.আফ্রিকা : ৩৭.২ ওভারে ১৯৫/৩ ফল : বাংলাদেশ ৭ উইকেটে পরাজিত

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০২২, ১২:০০ এএম

আগের ম্যাচে তিন বিভাগে উজ্জীবিত পারফরম্যান্সে জয়ের আত্মবিশ্বাস সঙ্গী করে নামা বাংলাদেশের ব্যাটিং এবার মুখ থুবড়ে পড়ল। ধ্বংসস্ত‚পে দাঁড়িয়ে আফিফ হোসেন দারুণ একটি ইনিংস খেললেন বটে, তবে তা যথেষ্ট হলো না। মাঝারি পুঁজি নিয়ে বোলাররা ন্যুনতম লড়াইও করতে পারলেন না। অনায়াস জয়ে ৩ ম্যাচ সিরিজে সমতা ফেরাল দক্ষিণ আফ্রিকা। গতকাল জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে স্বাগতিকদের জয় ৭ উইকেটে।

দলটির বিপক্ষে পরপর দুই ওয়ানডেতে তিনশ ছাড়ানো পুঁজি গড়া বাংলাদেশ এবার থমকে যায় দুইশর আগেই, ৯ উইকেটে ১৯৪ রান। শুরু আর শেষের দারুণ বোলিংয়ে ৩৯ রানে কাগিসো রাবাদার প্রাপ্তি ৫ উইকেট। জবাবে ব্যাট করতে নেমে অসুস্থতার কারণে প্রথম ম্যাচে খেলতে না পারা কুইন্টন ডি কক ফিরে খেলেন ৪১ বলে ৬২ রানের ঝড়ো ইনিংস। সঙ্গে কাইল ভেরেইনার অপরাজিত ফিফটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ৭৬ বল বাকি থাকতে।

জোহানেসবার্গের বাউন্সি উইকেটে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের কঠিন এক পরীক্ষাই নিল দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশেষ করে ফাস্ট বোলার কাগিসো রাবাদা। রাবাদা ও তার সহকারীদের শর্ট বলের কোনো উত্তর যেন ছিল না বাংলাদেশের কাছে। সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, ইয়াসির আলীর পর আফিফ ও মিরাজের উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে তো বলতে গেলে একা হাতেই গুঁড়িয়ে দিলেন রাবাদা। লিটন শুরুটা ইতিবাচক করেছিলেন, তবে বাড়তি বাউন্সে ভড়কে গেছেন তিনিও।

শুরুটা অবশ্য হয়েছিল লুঙ্গি এনগিডির বলে অধিনায়ক তামিম ইকবাল ভড়কে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। ওয়ান্ডারার্সের অসম বাউন্সের উইকেটে পাওয়ারপ্লের মধ্যেই সাকিব ও লিটনকে ফিরিয়েছেন রাবাদা, ১২তম ওভারে ইয়াসির আলীও তার শিকার। এদের সবাই ক্যাচ দিয়েছেন। মুশফিকুর রহিমকে টিকতে দেননি ওয়েইন পারনেল, তিনি অবশ্য হয়েছেন এলবিডবø। ২০১৭ সালের পর পারনেলের এটি প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট।

সেই পারনেল চোট পেয়ে উঠে গিয়েছিলেন ২.৫ ওভার করেই। তার অসমাপ্ত ওভার সম্পন্ন করতে এসে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা করেছেন আরও ৬ ওভার, শেষ পর্যন্ত আফিফের কঠিন একটা ফিরতি ক্যাচ নিতে গিয়ে চোট পেয়েছেন তিনিও। দক্ষিণ আফ্রিকা এ দিন ফিল্ডিংয়ে কাটিয়েছে মিশ্র দিন। ৪৯তম ওভারে রাসি ফন ডার ডুসেনকেও বোলিংয়ে এনেছেন বাভুমা, ফন ডার ডুসেন পেয়েছেন উইকেটও। সেটি অবশ্য আফিফ-মিরাজ ফেরার পর। ১৩তম ওভারে ক্রিজে এসেছিলেন আফিফ, মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে তার জুটিতে ওঠে ৬০ রান। আফিফকে ভালোই সঙ্গ দিচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ, কিন্তু এ ম্যাচ দিয়ে একাদশে ফেরা বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার তাব্রেইজ শামসির ফাঁদে পড়ে লেগ সিøপে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয়েছে তাঁকে।

লড়াইয়ের ভারটা তাই আবার গিয়ে পড়েছে আফিফ-মিরাজের ওপর। আফিফ শুরু থেকেই ইতিবাচক ছিলেন, মুখোমুখি তৃতীয় ও পঞ্চম বলেই রাবাদাকে চার মারেন। এর মধ্যে পরেরটি ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট বল, আফিফ সেটিতে চার দিয়েই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তার মানসিকতার। দুই স্পিনার কেশব মহারাজ ও শামসির ওপর সুযোগ পেলেই চড়াও হয়েছেন এ বাঁহাতি। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ও দেশের বাইরে প্রথম অর্ধশতকটি পূর্ণ করেন ৭৯ বলে। এরপর মহারাজকে দারুণ কাভার ড্রাইভে মারা চারে ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন ইনিংস আরও বড় করার। তবে রাবাদার শেষ ওভারটা ঝুঁকি না নিয়ে খেলার কৌশলটা মিস করে গেছেন, শর্ট বলে চড়াও হতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছেন ১০৭ বলে ৭২ রান করার পর।

ইতিবাচক ছিলেন মিরাজও, ৪৯ বলে ৩৮ রানের ইনিংসে মহারাজকে সøগ সুইপে মেরেছেন দুইটি ছয়। তবে আফিফের মতো তিনিও ফিরেছেন রাবাদার বলেই, এবার মিড-অফে দারুণ ক্যাচ নিয়ে ‘দায়মোচন’ করেছেন ইয়ানেমান ম্যালান। এর আগে ২১ রানে মিরাজের সহজ ক্যাচ ফেলেছিলেন ম্যালান। মিরাজ ফেরার পর বাংলাদেশ যোগ করতে পেরেছে আর ১৩ রান। তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান অল-আউট হতে দেননি, শেষদিকে প্রাপ্তি সেটিই।

গত শুক্রবার সেঞ্চুরিয়নে ৩৮ রানে জিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় স্বাগতিকদের বিপক্ষে যেকোনো সংস্করণে প্রথম জয়ের অনির্বচনীয় স্বাদ পায় বাংলাদেশ। সেই মাঠেই আগামীকাল আরও একবার সিরিজ জয়ের হাতছানিতে শেষ ম্যাচ খেলতে নামবে তামিম ইকবালের দল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ