নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
আবারও চেনা প্রতিপক্ষ পাকিস্তানকে পেয়ে বিশ্বকাপে জয়ের স্বপ্ন আগেই বুনেছিলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। সে স্বপ্ন আজ সোমবার পূর্ণতা পেল নিউজিল্যান্ডের হ্যামিল্টনে। প্রথম দুই হারের ধাক্কা সামলে ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম জয় তুলে নিল বাংলাদেশ নারী দল। সেটি আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারিয়ে।
নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে ৯ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ নারী দল। এর আগে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরেছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে, পাকিস্তানকে পেয়ে ঠিকই জ্বলে উঠল লাল-সবুজের দল। তুলে নিল বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম জয়।
হ্যামিল্টনের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে আজ আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৩৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। এটাই ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বাধিক দলীয় রান। এ রানের জবাব দিতে নেমে ওপেনার সিদরা আমিনের সেঞ্চুরির পরও ২২৫ রানে থামে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামার আগেই বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক শুনিয়েছিলেন জয়ের প্রত্যাশার বার্তা। সে প্রত্যাশার প্রতিফলন মাঠেই দেখালেন মেয়েরা। ব্যাটিংয়ে নেমে রানের দেখা পেলেন মোটামুটি সবাই।
যদিও ওপেনিং জুটি খুব একটা লম্বা হয়নি। শুরুর জুটিতে ৩৭ রান তোলেন দুই ওপেনার শামিমা সুলতানা ও শারমিন আক্তার। শামিমাকে ১৭ রানে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন নিধা ধার। শামিমা ফিরলেও দারুণ ব্যাটিংয়ে হাফসেঞ্চুরির পথে হাঁটেন শারমিন। তবে, লক্ষ্য পূরণ হওয়ার আগে ৪৪ রানের মাথায় তাঁকে আউট করেন সোহেলি। ছয় বাউন্ডারিতে ৫৫ বলে ৪৪ রান করে সাজঘরে যান শারমিন।
এরপর তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশকে চমৎকার জুটি উপহার দেন নিগার সুলতানা ও ফারজানা হক। এ জুটিতে স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশ পায় ৯৬ রান। মূলত ইনিংস বড় কাজের করে রাখেন দুজনই। দলীয় ১৭৫ রানে এই জুটি ভাঙেন ফাতিমা সানা। নিগারকে নিজের এলবির ফাঁদে ফেলেন তিনি। ৬৪ বলে ৪৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
নিগার ফিরলেও উইকেটে থিতু হয়ে ৭১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস উপহার দেন ফারজানা। ১১৫ বলে তাঁর ইনিংসে ছিল পাঁচটি বাউন্ডারি। তিনি ফিরলে শেষ দিকে বাকিদের ছোট ছোট ইনিংসে ২৩৪ রানের লড়াইয়ের পুঁজি পায় বাংলাদেশ নারী দল।
রান তাড়া করতে নেমে কঠিন লড়াইয়ের আভাস দেয় পাকিস্তান। প্রথম জুটিতেই হুঙ্কার তোলে তারা। ওপেনিংয়ে তাদের দুই ওপেনার মিলে তোলেন ৯৬ রান। ৪৩ রানে নাহিদা খানকে বোল্ড করে ওই জুটি ভাঙেন রোমানা আহমেদ।
এরপর জমে গিয়েছিল পাকিস্তানের দ্বিতীয় জুটিও। ওই জুটি ভাঙতেও বেশ পরীক্ষা দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। একপর্যায়ে মনে হয়েছিল ম্যাচ হাতের বাইরে চলে যাবে। সিদরা আমিনের সেঞ্চুরির পর সে শঙ্কা আরও বাড়ে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত কোনো অঘটন হয়নি। সিদরা (১০৪) রান আউটে ফিরলে ধীরে ধীরে ম্যাচের নাগাল পেয়ে যায় বাংলাদেশ।
বল হাতে ম্যাচের বাকি অংশে দারুণ পারফর্ম করে বাংলাদেশ। ফাহিমা খাতুনের ঝলক আর রোমানার দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে লাল-সবুজের দল।
বল হাতে ৩৮ রানের বিনিময়ে তিনটি উইকেট তুলে নেন ফাহিমা খাতুন। ২৯ রান খরচায় দুটি উইকেট পান রোমানা। ২০ রান দেওয়া জাহানারার শিকার একটি। সালমা খাতুনও নিয়েছেন এক উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ২৩৪/৭ (শামিমা ১৭, শারমিন ৪৪, ফারজানা ৭১, নিগার ৪৬, রুমানা ১৬, রিতু ১১, ফাহিমা ০, সালমা ১১*, নাহিদা ২*; ফাতিমা সানা ১০-০-৫৪-১, ডায়না ৫-১-৩২-০, নিদা ১০-০-৪৫-১, নাশরা ১০-০-৪১-৩, গুলাম ফাতিমা ৭-০-৩০-০, ওমাইমা ৮-১-৩১-১)।
পাকিস্তান : ৫০ ওভারে ২২৫/৯ (নাহিদা ৪৩, সিদরা আমিন ১০৪, বিসমাহ ৩১, ওমাইমা ১০, আলিয়া ০, ফাতিমা সানা ০, সিদরা নওয়াজ ১, ডায়না ১২, নাশরা ৯*, গুলাম ফাতিমা ৫*; জাহানারা ৪-০-২০-১, তৃষ্ণা ৪-০-১৯-০, সালমা ৯-০-২৯-১, নাহিদা ৯-০-৪৮-০, রুমানা ৭-০-২৯-২, রিতু মনি ৯-০-৪২-০, ফাহিমা ৮-০-৩৮-৩)।
ফল : বাংলাদেশ ৯ রানে জয়ী।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ : ফারজানা হক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।