Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লজ্জার হারে সিরিজে সমতা

বাংলাদেশ : ২০ ওভারে ১১৫/৯ আফগানিস্তান : ১৭.৪ ওভারে ১২১/২ ফল : আফগানিস্তান ৮ উইকেটে জয়ী

জাহেদ খোকন | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২২, ১২:১৩ এএম

আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে লজ্জার হারে সমতা নিয়েই সিরিজ শেষ করলো বাংলাদেশ। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ সিরিজের শেষ ম্যাচে সফরকারী আফগানিস্তান ৮ উইকেটে হারায় বাংলাদেশকে। প্রথম ম্যাচে রেকর্ডগড়া জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচ আফগানরা জেতায় ১-১ ব্যবধানের ড্র’তেই শেষ হলো দু’দলের একমাত্র টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ক্যাচ মিসের এই ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগেই ব্যর্থ বাংলাদেশ। পুরো ম্যাচে চারটি ক্যাচ মিস করেছেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। ব্যাট করতে নেমে রানের খাতা তখনও খোলেননি আফগান ওপেনার হযরতউল্লাহ জাজাই। ইনিংসের তৃতীয় বলেই ফিরে যেতে পারতেন তিনি। কিন্তু প্রথম টি-টোয়েন্টির নায়ক নাসুম আহমেদ নষ্ট করলেন সুবর্ণ সুযোগ। তার হাত ফসকে বেরিয়ে গেলো জাজাইয়ের সহজ ক্যাচ। ব্যস, ওখানেই যেন শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের সব আশা। কারণ ওই জাজাই-ই পরবর্তীতে ছড়ি ঘুরিয়ে হারের হতাশায় ডুবিয়েছেন টাইগারদের। জীবন পেয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে অপরাজিত হাফসেঞ্চুরিতে আফগানিস্তানের জয় নিশ্চিত করে তবেই মাঠ ছেড়েছেন জাজাই। তার ক্যাচ মিসে ম্যাচ হারানো বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত পায়নি সিরিজ জয়ের স্বাদ।

কাল টস জিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১১৫ রান তোলে বংলাদেশ। সেই লক্ষ্য মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ১৪ বল আগেই টপকে পায় আফগানিস্তান। রানের ফুলঝুরি ফুটিয়ে স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করতে পারেননি স্বাগতিক দলের ব্যাটাররা। তাই বোলিংটা দুর্দান্ত হওয়ার দরকার ছিল তাদের। কিন্তু শুরুর ঝলক আশাজাগানিয়া হলেও আফগানিস্তানকে চেপে ধরতে পারেনি বাংলাদেশ। যদিও তাতে আছে ভাগ্য ও স্বাগতিকদের ‘সাহায্যের’ ছোঁয়া! আফগান ইনিংসের শুরুতেই উইকেট পেতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু জাজাইয়ের ক্যাচটি ছেড়ে দেন বোলার নাসুম আহমেদ।

শুধু তার ক্যাচটি নয়, বাংলাদেশের ফিল্ডাররা ছেড়েছেন আরও অন্তত তিনটি ক্যাচ। দলের সেরা ফিল্ডার হিসেবে যিনি বিবেচিত সেই আফিফ হোসেনও ছেড়েছেন সহজ ক্যাচ! শেষ পর্যন্ত জাজাই বাংলাদেশকে ভোগায় সবচেয়ে বেশি। জীবন পেয়ে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে হাফসেঞ্চুরি করে দলকে জয়ের পথে রাখেন তিনি। শূন্য রানে আউট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হওয়া জাজাই শেষ পর্যন্ত খেলেন হার না মানা ৫৯ রানের ইনিংস। তার ৪৫ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৩ চার ও ৫ ছয়ের মারে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলেছেন উসমান গণি। ৪৮ বলে ৫ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় তিনি খেলেন ৪৭ রানের ঝকঝকে ইনিংস। দারউইশ রসুলি ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। আর ৩ রান করে শুরুতেই আউট হন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। শেখ মেহেদী হাসান ও মাহমুদউল্লাহ একটি করে উইকেট পান।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্ত ব্যাটিং। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দেড়শ ছাড়ানো স্কোর এসেছিল। তবে সেখান থেকে লিটন দাসের ইনিংসটি বাদ দিলে একই দৃশ্য ফুটে উঠবে। কাল দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যাটারদের ব্যর্থতা আরও স্পষ্ট হয়ে ধরা দিলো। আফগান বোলারদের সামনে কঠিন পরীক্ষা দেওয়া বাংলাদেশ নির্ধারিত ওভারে মামুলী স্কোর করতে হারায় ৯ ব্যাটারকে! সিরিজের প্রথম ম্যাচে রেকর্ডগড়া জয়ে ভালো অবস্থানেই ছিল স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলে সিরিজ নিশ্চিত হবে। এমন সমীকরণে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং নিলেও সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। টপ অর্ডার ভেঙে পড়ায় বিপদে পড়ে তারা। পরে মুশফিকুর রহিম নিজের শততম টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি বাঁধলে ১০০ ছাড়ায় দলীয় স্কোর।

ব্যাটিংয়ের শুরু থেকেই ধুঁকেছেন স্বাগতিক ব্যাটাররা। চার মেরেই আউট মুনিম শাহরিয়ার (৪)। আগের ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করা লিটন দাসও (১৩) টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন নাঈম শেখ (১৩)। এরপর অহেতুক শট খেলে উইকেট বিলিয়ে দেন সাকিব আল হাসান (৯)। ফলে ধসে পড়ে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশকে টেনে তোলেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। বিপদের সময় দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ইনিংস মেরামতের কাজে লেগে পড়েন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার। তবে দারুণ ইনিংসের ইঙ্গিত দিয়েও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ১৪ বলে তিন চারের মারে করেন ২১ রান। সঙ্গীকে হারিয়ে মুশফিকও পথ হারান। তিনি নিজের শততম টি-টোয়েন্টিকে স্মরণীয় করে রাখতে পারেননি। ২৫ বলে চার বাউন্ডারিতে ৩০ রান করে বিদায় নেন মুশফিক। এরপর আফিফ হোসেন ৭, মুস্তাফিজুর রহমান ৬* ও নাসুম আহমেদ ৫* রার করলে মাত্র ১১৫ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।

চার ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করে আফগানিস্তানের সবচেয়ে সফল বোলার ফজলহক ফারুকী। তার সমান ৩ উইকেট নিতে আজমতউল্লাহ চার ওভারে দেন ২২ রান। এছাড়া রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবী নেন একটি করে উইকেট।



 

Show all comments
  • Dip Haldar ৬ মার্চ, ২০২২, ৮:১৫ এএম says : 0
    একটা বিষয় বুঝতে পারছি না। নিজের দেশের মাটিতে খেলা তাও নিজেদের মতো করে মিরপুরের পিস তৈরি করে। সেখানে আফগান বোলার ও ব্যাটার কি করে এতো ভালো পারফরমেন্স করে ???
    Total Reply(0) Reply
  • Farhan Rehnum ৬ মার্চ, ২০২২, ৮:১৬ এএম says : 0
    টি-টুয়ান্টি থেকে মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক, ব্যাটসম্যান সাকিবকে সরিয়ে দেখার সময় এসেছে। বিসিবি বস তো অবশ্যই, সবার এটা বুঝা উচিত, টি২০ তে আমরা এতো এতো বাজে খেলেছি যে তাদের সরিয়ে দিলে এর থেকে বাজে কিছু হবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Jahangir Alam Rakib ৬ মার্চ, ২০২২, ৮:১৬ এএম says : 0
    আসলে আমাদের কাছে আবেগের অন্য নাম ক্রিকেট। কিন্তু সত্যি কথা হল বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম ও ম্যানেজম্যান্ট টি টুয়েন্টি কিভাবে খেলতে হয় এটাই বুঝে না!
    Total Reply(0) Reply
  • Koysor Ahmed Tanim ৬ মার্চ, ২০২২, ৮:১৭ এএম says : 0
    মাশরাফির বাংলাদেশ টিম আর এই বাংলাদেশ টিমের আকাশ পাতাল ফারাক।সবার কেমনজানি ঘা ছাড়া ভাব।
    Total Reply(0) Reply
  • সুকান্ত এস কে বিশ্বাস ৬ মার্চ, ২০২২, ৮:১৭ এএম says : 0
    সৌম্য সরকার আর মৃত্যুজ্ঞয় চৌধুরীকে একাদশে জায়গা দেওয়া হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • mamoon ৬ মার্চ, ২০২২, ১:০১ পিএম says : 0
    masrafi ke abar captain kora uchit, ar bortoman player der sojuk shobida kere nea, vikhari banano uchit
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ