Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বড় জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়ালো আফগানিস্তান

জাহেদ খোকন | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২২, ১২:১২ এএম

বাংলাদেশ : ৪৬.৫ ওভারে ১৯২/১০
আফগানিস্তান : ৪০.১ ওভারে ১৯৩/৩
ফল : আফগানিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী
সফরকারী আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ওয়ানডের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। তারপরও বাড়তি গুরুত্ব ছিল সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটির। কেননা, এই ম্যাচ জিতলেই পাওয়া যেত বিশ্বকাপ সুপার লিগের আরও ১০ পয়েন্ট, একইসঙ্গে পাকিস্তানকে টপকে আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়েও ষষ্ঠ স্থানে উঠতেন তামিম ইকবালরা। কিন্তু না, কিছুই হলো না। বিবর্ণ ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ের কারণে হারতে হলো বাংলাদেশকে। অন্যদিকে সিরিজের শেষ ম্যাচে ৭ উইকেটের বড় জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়ালো আফগানিস্তান।

গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ৪৬.৫ ওভারে মাত্র ১৯২ রানে অলআউট হয়। সহজ লক্ষ্য ৩ উইকেট হারিয়ে ৫৯ বল হাতে রেখেই টপকে যায় আফগানিস্তান। তিন ক্যাচ মিসের সুযোগে অপরাজিত শতক হাঁকিয়েছেন আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। এই হারে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শেষ করল বাংলাদেশ।

১৯৩ রানের মামুলি লক্ষ্যে আফগানিস্তান শুরু থেকেই ছিল আগ্রাসী। দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও রিয়াজ হাসান শুরুতে হাত খুলে খেলছিলেন। ১৬তম ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে আসে সাফল্য। তার বলে পরাস্ত হওয়া রিয়াজ হাসান ক্রিজের সামান্যতম বাইরে ছিলেন। প্রথম দফায় বেলস ফেলতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। ততক্ষণে রিয়াজ ভেতরে ঢুকতে পারেননি। বাইরেই ছিল পা। মুশফিক দ্বিতীয় চেষ্টায় ঠিকই স্টাম্পড করেছেন রিয়াজকে। তাতে ভাঙে আফগানিস্তানের ৭৯ রানের উদ্বোধনী জুটি। রিয়াজ ৪৯ বলে ৩৫ রান করে ফিরেছেন। তবে ক্রিজের অন্যপ্রান্ত আগলে দারুণ খেলে জয় তুলে নেন গুরবাজ। এ সময় তিনবার ক্যাচও তুলেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনোবারই তার ক্যাচ নিতে পারেননি বাংলাদেশের কোনো ফিল্ডার। পরে এই ব্যাটারই আগ্রাসী ভঙ্গিতে ব্যাট চালিয়ে ছিনিয়ে আনেন জয়। সেঞ্চুরি করে দলকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। গুরবাজ খেলেন হার না মানা ১০৬ রানের ইনিংস। তার ১১০ বলের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৭ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায়।

তবে মাঝে জোড়া ধাক্কায় মেহেদী হাসান মিরাজ হারের ব্যবধান কিছুটা কমান। রহমত শাহ ৪৭ রানে ও হাশমতউল্লাহ শহীদি ২ রানে আউট হন। মিরাজ ৮.১ ৩৭ রান খরচায় নেন ২ উইকেট। সাকিব ৪৭ রান দিয়ে শিকার করেন ১ উইকেট।

এর আগে চট্টগ্রামে কাল ৫০তম ওয়ানডে খেলতে নেমেছিলেন লিটন দাস। মাইলফলকের ম্যাচটা হাফসেঞ্চুরিতেও রাঙিয়ে ছিলেন তিনি। শুরুর জড়তা কাটিয়ে এমন ছন্দ তুলেছিলেন, মনে হচ্ছিল সেঞ্চুরিটাও বুঝি পেয়ে যাবেন। কিন্তু ৮৬ রানে ব্যাট করতে থাকা এ ব্যাটার ফেরার পরেই যেন এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং। বাকিরা কোনো ভ‚মিকাই রাখতে পারেননি! লিটনের ১১৩ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার। অধিনায়ক তামিমের বিদায়ের পর মূলত লিটনের ব্যাটেই জড়তা কাটিয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। এই সময় তাকে সঙ্গ দেন সাকিবও। কিন্তু সফট ডিসমিসালে ইনিংস লম্বা হয়নি তার। অথচ এক পর্যায়ে লিটনের যোগ্য সঙ্গীই হয়ে উঠেছিলেন। ৪৩ রানে প্রথম উইকেট পড়ার পর ৬১ রান যোগ করে এই জুটি। শতরানও ছাড়ায় তাদের কল্যাণে। ক্রিজে পোক্ত হয়ে ওঠার পথেই সাকিব বোল্ড হন ওমারজাইয়ের বলে। ৩৬ বল খেলে ৩ চারের মারে সাকিব করেন ৩০ রান। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিরোধ গড়ার কথা থাকলেও মুশফিকুর রহিম চাপ বাড়িয়ে দেন আরো। রশিদ খানের বলে ২৭তম ওভারে গ্লাসভসবন্দি হন তিনি। প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি সিরিজে অভিষেক হওয়া ইয়াসিরও। রশিদের পরের ওভারেই গুলবাদিনের ক্যাচে পরিণত হন তিনি। আউট হওয়ার আগে মুশফিক করেন ৭ রান আর ইয়াসির মাত্র ১।

তখন শুধু একপ্রান্ত আগলে থাকা লিটনের ব্যাটেই এগিয়ে চলতে থাকে তামিম বাহিনী। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির বার্তা দিচ্ছিলেন লিটন। কিন্তু হঠাৎ ৮৬ রানে নবীকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ হন গুলবাদিন নাইবের। লিটনের বিদায়ের পরেই দিশা হারায় বাংলাদেশের ব্যাটিং। যখন নাকি রান উঠানোর দিকেই মনোযোগ থাকার কথা, তখন ব্যাটাররা শুধু আসা-যাওয়ার মিছিলেই সামিল হন অবিবেচকের মতো। প্রথম ম্যাচ জয়ের নায়ক আফিফ হোসেন দলীয় ১৬০ রানে নবীর বলে ক্যাচ তুলে ফিরেন। করেন মাত্র ৫ রান। তার মতো ব্যর্থ ছিলেন মিরাজও। রান আউটে অফস্পিনিং অলরাউন্ডার ফিরেছেন ৬ রান তুলে। রশিদের বলে তাসকিন লেগ বিফোরে ফিরলে পতন হয় অষ্টম উইকেটের। অথচ তখনও একপ্রান্ত আগলে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু বাকি দুই ব্যাটার শরিফুল ও মুস্তাফিজুর রহমান দ্রুত ফিরে গেলে দুইশোর আগেই শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। শেষের দুই ব্যাটারই ফিরেছেন রান আউটে! না হলে ইনিংসটা আরো বড় হতে পারত। মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত থাকেন ২৯ রানে। আফগানদের দুই স্পিনারই ইনিংসের দৃশ্যপট বদলে দেন। রশিদ খান ৩৭ রানে নেন ৩ উইকেট। ২৯ রানে দু’টি নেন নবী। একটি করে উইকেট শিকার করেন ফজল হক ফারুকী ও আজমতউল্লাহ ওমারজাই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ