নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
নিউজিল্যান্ড বরাবরই পেস বান্ধব। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বরাবরই সেখানে গিয়ে দিতে হয়েছে কঠিন সব পরীক্ষা। গতি আর সুইংয়ের সাথে বাউন্ডে তালগোল পাকিয়ে অল্পে গুটিয়ে যাবার লজ্জা যেমন আছে, ঠিক আছে উল্টো চিত্রও। দাপুটে সব মারদাঙ্গা ব্যাটসম্যানদের বীপরিতে নখদন্তহীন, সাদামাটা, নির্বিষ বোলিংয়ে মার খেতে হয়েছে তাবৎ বোলারদেরই। অথচ এবার যেন পাশার দানের মতো পাল্টে গেল দৃশ্যপট। যেন ‘হারু পার্টি’ হিসেবে বাংলাদেশের জায়গায় নামটি উচ্চারিত হবার পালা নিউজিল্যান্ডের! পালা নয়া ইতিহাস রচনার।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে প্রথম দিন থেকে বল হাতে দাপুটে শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, এমনকি মুমিনুল হকের সামনেও যেন অসহায় টম ল্যাথাম, রস টেইলর, টম বøান্ডলরা। পরে সেই একই উইকেটে ব্যাট হাতে ট্রেন্ট বোল্ট, কাইল জেমিসনদের উপর ছড়ি ঘুড়িয়েছেন নবাগত মাহমুদুল হাসান জয় থেকে শুরু করে নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, মুমিনুল আর মিরাজরা। দুই ইনিংসে কোথাও ছিলেন না তিনি। একটি বারের জন্যও উচ্চারিত হয়নি তার নাম। যখন এলেন দৃশ্যপটে, তখন এলেন ইতিহাসের বারতা নিয়েই- ইবাদত হোসেন।
গতকাল ৪৮ থেকে ৬০ ওভার পর্যন্ত রীতিমতো কাঁপুনি ধরালেন কিউই ব্যাটসম্যানদের মনে। ৭ ওভারের স্মরণীয় স্পেলে মাত্র ১৬ রান দিয়ে চোখের পলকে ৩ উইকেট নিয়ে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিলেন এই পেসার। ৬৯ রান করে দারুণ খেলতে থাকা ইয়ংকে ভেতরে আসা বলে সরাসরি বোল্ড হলেন। এরপর আগের ইনিংসে অর্ধশত করা হেনরি নিকোলসও বোল্ড বিদ্যুৎ-গতির ইয়র্কারে। এরপর টম বøান্ডেল আউট ভেতরে আসা বলে এলবিডবিøউ হয়ে। চোখের পলকে ১৩৬ রানে ২ উইকেট থেকে কোনো রান যোগ না করেই ১৩৬ রানে ৫ উইকেটের দল নিউজিল্যান্ড! সেখান থেকে মাত্র ১৭ রানে এগিয়ে থেকে চতুর্থ দিন শেষ করে স্বাগতিকেরা। ম্যাচের যা পরিস্থিতি, তাতে বাংলাদেশ দলের মানসপটে এখন ‘জয়’ শব্দটাই ঝিলমিল করছে। যেটি হবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়।
ঘুমের ঘোরে দেখা কোন বিভ্রান্তিমূলক দৃশ্য নয়, অতি মনোহর কোন স্বপ্নও নয়। রীতিমতো বাস্তব। নিউজিল্যান্ডের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে টেস্টে হারিয়ে দেওয়ার প্রায় অবিশ্বাস্য এক সমীকরণের সামনে আসলেই দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। ১৩০ রানের বড় লিডের পর নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে হানা দিয়ে দারুণ এক সম্ভাবনা তৈরি করেছেন পেসার ইবাদত। বে ওভালে চতুর্থ দিন শেষেও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের হাতে। প্রথম ইনিংসে ১৩০ রানে পিছিয়ে থাকা নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে তুলেছে ৫ উইকেটে ১৪৭ রান। বাংলাদেশ থেকে তারা এগিয়ে আছে কেবল ১৭ রানে। পথের কাঁটা হয়ে ৩৭ রান করে ক্রিজে আছেন একাধিক জীবন পাওয়া অভিজ্ঞ রস টেইলর। শেষ দিনে বাকি ৫ উইকেট দ্রæত ফেলে দিয়ে ম্যাচ জেতার সুযোগ থাকছে মুমিনুলের দলের। এমন একটি দিনে বাংলাদেশের নায়ক ইবাদত। ডানহাতি এই পেসার ১৭ ওভার বল করে ৩৯ রান দিয়ে পেয়েছেন ৪ উইকেট।
অথচ দিনটা শেষ হতে পারত আক্ষেপ সঙ্গী করে। দুটি ক্যাচ হাতছাড়ার পর একটি রান আউটের সুযোগ হারায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সুযোগ হাতছাড়া না করলে টেইলর-ইয়ং ফিরতে পারতেন অনেক আগে, মিরাজের বলে। টেইলর হতে পারতেন রান আউটও। সেসব সুযোগ হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের। তবে জাদুকরী এক স্পেলে সেই আক্ষেপে খুব বেশি সময় পুড়তে দেননি ইবাদত।
এর আগে ৬ উইকেটে ৪০১ রান নিয়ে নেমে ইয়াসির আলি রাব্বির সঙ্গে জুটি জমিয়ে তুলেছিলেন মিরাজ। প্রথম সেশনের বেশিরভাগ সময় তারা ক্রিজে থাকলেও হুট করেই নামে ধস। ৪৭ করা মিরাজের বিদায়ে ভাঙ্গে সপ্তম উইকেটে ৭৫ রানের জুটি। সঙ্গীর বিদায়ে আস্থার সঙ্গে খেলতে থাকা ইয়াসিরও ২৬ রান করে থামান দৌড়। এরপর দ্রæত বাংলাদেশের লেজ ছেঁটে ফেলেন বোল্ট-সাউদিরা। শেষ দিকে তড়িঘড়ি গুটিয়ে গেলেও লিড যথেষ্ট বড় হওয়ায় ম্যাচ জেতার পথেই থাকে বাংলাদেশ। ৪৫৮ রানে গুটিয়ে যাওয়া লিড বেড়ে দাঁড়ায় ১৩০ রানের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড : ৩২৮ ও দ্বিতীয় ইনিংস : ৬৩ ওভারে ১৪৭/৫ (ল্যাথাম ১৪, ইয়ং ৬৯, কনওয়ে ১৩, টেইলর ৩৭*, নিকোলস ০, বø্যান্ডেল ০, রবীন্দ্র ৬*; তাসকিন ১/২২, শরিফুল ০/৩০, মিরাজ ০/৪৩, ইবাদত ৪/৩৯, মুমিনুল ০/৭)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ১৭৬.২ ৪৫৮ (সাদমান ২২, জয় ৭৮, শান্ত ৬৪, মুমিনুল ৮৮ মুশফিক ১২, লিটন ৮৬, ইয়াসির ২৬, মিরাজ ৪৭, তাসকিন ৫; সাউদি ২/১১৪, বোল্ট ৪/৮৫, জেমিসন ১/৭৮, ওয়াগনার ৩/১০১)। চতুর্থ দিনে শেষে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।