নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
২০১০ সালে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে এসে নাস্তানাবুদ হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। এক ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পরও সেবার ৪-০ তে হোয়াটওয়াশ হয়েছিল তারা। সেই সিরিজেই অভিষেক হয় পেসার হামিশ বেনেটের। এক দশকের বেশি সময় পর আরেকটি বাংলাদেশ সফরে এসেছেন ৩৪ পেরুনো এই পেসার। বিশ্বকাপ স্কোয়াডের কোন সদস্য না থাকায় এই সিরিজ কিউই ক্রিকেটারদের জন্য অনেকটা লক্ষ্যহীন মঞ্চ। তবে হামিশ মনে করেন, এই দেশের কঠিন কন্ডিশনে জেতার চ্যালেঞ্জ থেকে খুঁজতে পারেন প্রেরণা।
গতপরশু দুপুরে বাংলাদেশে এসেই হোটেলে কোয়ারেন্টিনে চলে গেছে নিউজিল্যান্ড দল। এর আগে গত শুক্রবার বাংলাদেশে আলাদাভাবে আসেন কিউই আরও দুই ক্রিকেটার কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম আর ফিন অ্যালেন। মঙ্গলবারই জানা যায় ফিন অ্যালেন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে হামিশ জানিয়েছেন, অ্যালেনের অবস্থা এখন অনেকটা ভালোর দিকে। এদিকে দলের বাকি সবার কোভিড-১৯ রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় আপাতত স্বস্তিতে তারা।
কিন্তু এই স্বস্তি হয়ত দ‚র হয়ে যাবে সিরিজ শুরু হয়ে গেলে। বাংলাদেশে মন্থর ও টার্নিং উইকেটে বড় পরীক্ষা দিতে হবে তাদের। কিন্তু এই সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ডের এই দলের ক্রিকেটারদের অনুপ্রেরণা আসলে কি? কেউই বিশ্বকাপ দলে নেই। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি বা দলে সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারও নেই। গতকাল সকালে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে হামিশ জানান, উপমহাদেশে ভালো করার চ্যালেঞ্জটা নিয়ে দেখাতে পারেন তারা, ‘এই বয়েসে আমি নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলতে চাইব। বিশ্বকাপ দলে থাকতে না পারাটা হতাশার। আমি নিশ্চিত সব খেলোয়াড়ই এটা যায়। কাজেই আমিই একমাত্র না যে হতাশ। কিন্তু এটা একটা সুযোগ উপমহাদেশে নিজের সামর্থ্য প্রমাণের। নিজের কাজটা করে রাখতে পারি। যদি ম‚ল দলে কোন চোট বা অন্য কোন সমস্যা হয়, তখন সুযোগ মিলতে পারে। সেরকম হলে নামটা উপরের দিকে থাকবে ডাক পাওয়ার জন্য।’
ম‚ল ক্রিকেটারদের মতো ম‚ল কোচিং স্টাফদেরও বাংলাদেশে পাঠায়নি নিউজিল্যান্ড। প্রধান কোচ গ্যারি স্টেড, সহকারি কোচ শেন জার্গেনশেন আসেননি। বাংলাদেশ সফরে দায়িত্ব পালন করবেন গেøন পকন্যাল, গ্রায়েম অ্যাল্ডরিজ, থিলান সামারাবিরারা। এর আগে ম‚ল স্কোয়াড নিয়ে এসেও বাংলাদেশের কন্ডিশনে হারতে হয়েছিল। হামিশ মনে করেন সেই হারটাই এবার হতে পারে ম‚ল অনুপ্রেরণার জায়গা, ‘এটা একটা ভিন্ন দল ভিন্ন কোচিং স্টাফ এসেছে। আমরা দল হিসেবে দেশের জন্য খেলতে চাই। বাংলাদেশে আমি আগেও এসেছি, সেবার আমরা ৪-০ ব্যবধানে হেরেছিলাম। আমাদের এখানে খুব বেশি সফলতা নেই। এটাই আমাদের জন্য বিশাল অনুপ্রেরণার জায়গায়। যদি ভালো করতে পারি তাহলে নিউজিল্যান্ড ফিরে বলতে পারব বাংলাদেশে আমরা একটা সিরিজ জিতে এসেছি। আপনি দেখেন অস্ট্রেলিয়া বা অন্য বড় দলের বাংলাদেশে কেমন সংগ্রাম করতে হয়েছে।’
এই সংগ্রামের সঙ্গে বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে বর্তমান কোভিডনীতির দিকেও। করোনা মহামারীর এই সময়ে জৈব সুরক্ষা বলয়, কোয়ারেন্টিন, আইসোলেশন এসব শব্দ ক্রিকেটারদের জন্য রীতিমতো অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছে। তাদের কোয়ারেন্টিনের ধকল সামলাতে উল্টো ভাবনায় পড়ছে ক্রিকেট বোর্ডগুলো। বাকিরা যেখানে হাঁপিয়ে উঠেছেন, কিউই শিবিরে একজনের নাম বললেন হামিশ। বললেন, তিনি উপভোগ করেন এই সময়টা! তিনি নিউজিল্যান্ডের তরুণ পেসার বেন সিয়ার্স। কোয়ারেন্টিনের কথা শুনলেই বরং নেচে উঠে তার মন। অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা এই পেসারের নেশাই যে বই পড়া।
যুব বিশ্বকাপ খেলতে এর আগেও বাংলাদেশে এসেছিলেন একবার। এবার মূল তারকারা না থাকায় এলেন জাতীয় দলের হয়ে। ২৩ পেরুনো সিয়ার্সকে নিয়ে অনেক আশা নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটের। জোরে বল করার সামর্থ্যে কাইল জেমিসনের সঙ্গে তুলনা করা হয় তাকে। জাতীয় দলের হয়ে নিজের প্রথম সফরে তরুণ এই পেসারের পাশে থাকছেন অভিজ্ঞ পেসার বেনেট। তিনিই জানালেন, বাকিদের সবার থেকে আলাদা তাদের দলের এই নবীন সদস্য। বাংলাদেশে এসে তিনদিনের আইসোলেশন পেয়েই আনন্দে ভাসছেন সিয়ার্স, ‘সে এখানে ২০১৬ সালে যুব বিশ্বকাপ খেলতে এসেছিল। সে তিনদিনের কোয়ারেন্টিন খুবই পছন্দ করছে, কারণ সে বই পড়তে ভালোবাসে। আমি এমন কাউকেই দেখিনি যে দুই সপ্তাহের কোয়ারেন্টিনের কথা শুনলে রোমাঞ্চিত হয়ে পড়ে, কারণ তাহলে বাধাহীনভাবে সে বই পড়তে পারবে।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা পড়েনি। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে মাত্র ১২ ম্যাচ খেলেছেন। তবে জোরে বল করার সামর্থ্যে তাতেই তার উপর আস্থা রেখেছেন কিউই নির্বাচকরা। বাংলাদেশের কন্ডিশনে জোরে বল করে সাফল্য পাওয়া বেশ কঠিন। তবে হামিশের আশা, গতির সঙ্গে বৈচিত্র্য যোগ করতে পারবেন এই তরুণ, ‘আমি আশা করব সে ছুটবে এবং জোরে বল করবে। কন্ডিশন অবশ্যই আদর্শ না। কিন্তু আগ্রাসী থাকা যায়, গতি বৈচিত্র্যও আনা যায়। আমার মতো এখানে অভিষেক হলে সে খুশি হবে।’
গতপরশু ঢাকায় পা রেখে তিন দিনের কোয়ারেন্টিনে যাওয়া নিউজিল্যান্ড দল সব ঠিক থাকলে ২৭ আগস্ট থেকে শুরু করবে অনুশীলন। ১ সেপ্টেম্বর থেকে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।