নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ক’দিন আগেই দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে বাংলাদেশ সফর করে গেছে অস্ট্রেলিয়া। ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটিতে পরিণতি, ৪-১ ব্যবধানে অজিদের নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে মাহমুদউল্লাহর দল। সামনেই সমান সংখ্যক ম্যাচের আরেক সিরিজ। আজই ঢাকায় পা রাখছে নিউজিল্যান্ড দল। কিউইরাও বাংলাদেশে আসছে দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে! ক’দিন আগেই একই সঙ্গে তারা ঘোষণা করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াডও। তখন থেকেই সমালোচনার খোরাক জুগিয়েছে দল নির্বাচন নিয়ে ক্রিকেট নিউজিল্যান্ডের খোড়া যুক্তি।
আজই বাংলাদেশে আসতে যাওয়া কিউইদের ১৪ সদস্যের স্কোয়াডে নেই বিশ্বকাপ দলের কেউ। বাংলাদেশ সফরের পর এই দলটিই যাবে পাকিস্তানে। দেশটিতে ১৮ বছর পর দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলবে কিউইরা। সফরে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সিরিজ খেলবে ব্ল্যাকক্যাপসরা। পাকিস্তান সফরের পর ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজও খেলবে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সফরে নিউজিল্যান্ডের নেতৃত্ব দেবেন টম ল্যাথাম। কেন উইলিয়ামসন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলের অধিনায়ক ঠিকই থাকবেন। বিশ্বকাপের দলে মিচেল স্যান্টনার, ইশ সোধি, টড অ্যাস্টল, জিমি নিশাম, ড্যারিল মিচেল, ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সৌদি, লকি ফার্গুসন, কাইল জেমিসন, টিম সাইফার্ট, মার্টিন গাপটিল, ডেভন কনওয়েরা আছেন। তারা আসছেন না বাংলাদেশ সফরে, যাচ্ছেন না পাকিস্তানে ওয়ানডে সিরিজেও!
১৫ সদস্যের বিশ্বকাপের দলের বাইরে বাড়তি সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে অ্যাডাম মিলনেকে। বাংলাদেশে না এলেও পাকিস্তানে টি-টোয়েন্টি সিরিজে যাবেন বিশ্বকাপের দলে থাকা গাপটিল, চ্যাপম্যান, অ্যাস্টল ও সোধি। বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের পাঁচ টি-টোয়েন্টির সিরিজ শুরু ১লা সেপ্টেম্বর। পরের ম্যাচগুলো হবে যথাক্রমে ৩, ৫, ৮ ও ১০ সেপ্টেম্বর। সব কটি ম্যাচই হবে মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়া সিরিজের ম্যাচগুলো সন্ধ্যা ছয়টায় শুরু হলেও নিউজিল্যান্ডের দর্শকের কথা ভেবে এ সিরিজের ম্যাচগুলো শুরু হবে বিকেল চারটায়। তবে এবারও মাঠে প্রবেশ করতে পারবেন না কোনো দর্শক।
কিউই শিবিরের পাকিস্তান সফর শুরু হবে ১৭ই সেপ্টেম্বর টি-টোয়েন্টি দিয়ে, ওয়ানডে সিরিজ শুরু ২৫শে সেপ্টেম্বর থেকে। টানা জৈব সুরক্ষা বলয়ের ধকল এড়াতে এবং আইপিএলে দলের সেরা তারকা কেন উইলিয়ামসন, কাইল জেমিসন ও ট্রেন্ট বোল্টদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই বাংলাদেশ সফরে দ্বিতীয় সারির ক্রিকেটারদের পাঠাচ্ছে এনজেডসি! বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কিংবা ক্রিকেটারদের পক্ষ থেকে এই দল পাঠানো নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য না শোনা গেলেও এক হাত নিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও নির্বাচক ইনজামাম-উল-হক। নির্দিষ্ট কোনো দেশের প্রতি ‘বিশেষ’ গুরুত্ব বিবেচনায় সফরের দল নির্বাচন করায় বেজায় চটেছেন পাকিস্তানের এই ব্যাটিং কিংবদন্তি। বেশ কিছু দলের প্রায়ই এমন করার পরও চুপ থাকা এবং কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় আইসিসিকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন ইনজি।
বিশ্বকাপ, আইপিএল এবং ভারত সফরে কেন উইলিয়ামসন, ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদিরা খেলতে পারে কিন্তু তারা পাকিস্তান সফরে যেতে পারেন না, এটা কোনভাবেই মানতে পারছেন না ইনজামাম। তিনি তার অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, মূল ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলতে না পারায় পাকিস্তান দলের অনুশীলন ঠিকমতো হচ্ছে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে একটি সুযোগ ছিল, বৃষ্টির জন্য খেলতেই পারলাম না আমরা। অন্য দলগুলি কি আমাদেরকে ‘বি’ দল মনে করে নাকি খেলতেই চায় না? আইসিসি কি করছে? তারা কি ঘুমিয়ে আছে? তারা কি বার্তা দিতে চাচ্ছে?’
সাম্প্রতিক সময়ে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় শুধু নিউজিল্যান্ড নয় বাকি দলগুলোর ওপরও ক্ষোভ ঝেড়েছেন ইনজামাম, ‘পাকিস্তান দল যেখানেই যাচ্ছে, মূল ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলার সুযোগ পাচ্ছে না। আমি এটা বুঝতেই পারছি না। এপ্রিলে দক্ষিণ আফ্রিকায় গেলাম আমরা, তাদের ক্রিকেটারদের তারা আইপিএলে পাঠিয়ে দিল। সামনে নিউজিল্যান্ড আসছে পাকিস্তানে, তাদের ৮ ক্রিকেটারকে তারা পাঠিয়ে দিচ্ছে আইপিএলে। আমার কাছে তো বিস্ময়কর লাগছে। এমনকি ইংল্যান্ড সফরেও, কোভিডের কারণে পুরো ইংল্যান্ড দলই বদলে গিয়েছিল।’
সামনের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি বলতে বাংলাদেশের এই সিরিজটিই। নিউজিল্যান্ডের দুর্বল, দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে খেলে বিশ্বকাপের মতো আসরের প্রস্তুতি মোটেও ভালো হবার কথা নয় তামিম-সাকিবদের এমনকি পাকিস্তানেরও। এই ব্যপারটিকে সামনে এনে ইনজামাম ক্ষোভ ঝাড়েন এভাবে, ‘আমার ভাবতে অবাক লাগে, ক্রিকেটাররা এমনকি বোর্ডও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে নয়! আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য এটা অপমানজনক। পুরো ব্যাপারটি দেখলে বুঝবেন, কেবল পাকিস্তানের সঙ্গেই এরকম হচ্ছে। আমাদের পুরো প্রস্তুতি নির্ভর করছে জিম্বাবুয়ে, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের ওপর।’
তবে একটি দিক দিয়ে কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে বাংলাদেশ। এই সিরিজের পর ২০২৩ সাল পর্যন্ত সফর পরিকল্পনায় (এফটিপি) নিউজিল্যান্ডের মতো বড় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নেই বাংলাদেশের। বড় দলকে হারিয়ে র্যাঙ্কিংয়ে বড় লাফ দেওয়ার এটাই মোক্ষম সুযোগ। দলটি যেহেতু আনকোড়া, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বড় জয় আশা করতেই পারে রাসেল ডমিঙ্গোর দল। ৩-২ ব্যবধানের সিরিজ জয়ও বাংলাদেশকে র্যাঙ্কিংয়ের ১০ নম্বর থেকে নিয়ে আসবে ৬ নম্বরে। আর ফলাফলটা যদি ৪-১ কিংবা ৫-০ হয়, তাহলে উঠবে ৫ নম্বরে। সে ক্ষেত্রে ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার পথটাও সুগম হবে বাংলাদেশের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।