নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
নিউজিল্যান্ডে এখন ঠিক কয়টা বাজে? সেখানে তো মধ্যরাত! কেইন উইলিয়ামসনরা ঘুমিয়ে আছেন নিশ্চয়ই, নাকি রাত জেগে দেখেছেন বাংলাদেশ আর অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দেখতে? সেটি জানতে পারলে মন্দ হতো না। ঠিক এ মুহূর্তে কি ভাবনা চলছে নিউজিল্যান্ড দলের ক্রিকেটারের মনে? আর সপ্তাহ দু’য়েক পরেই যে বাংলাদেশ সফরে আসবে কিউইরা। প্রতিপক্ষ দলের এমন বিধ্বংসী রূপ দেখে নিশ্চয়ই রাতের ঘুম ভালো না হওয়ার কথা তাদের। প্রতিবেশীদের হারে আসার আগেই একটা প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরও শুনল কিউইরা।
উপমহাদেশের উইকেট এমনিতেই স্পিন সহায়ক। বাংলাদেশে আসার আগে সে ভাবনা ভেবেই এসেছে অস্ট্রেলিয়া। স্কোয়াডে তিনজন বিশেষায়িত স্পিনারও রেখেছিল তারা। কিন্তু লাল-সবুজের ডেরায় পা রেখে যে এতোটা পরীক্ষা দিতে হবে, সেটি বোধহয় কল্পনাতেও আনতে পারেনি ম্যাথু ওয়েডের দল। কিংবা আনলেও স্পিনের বদলা যে স্পিনে নেওয়া সম্ভব নয়, সে ভাবনা নেহায়েতই বোকামি ছিল বৈকি!
বাংলাদেশের স্পিন সামলাতে যে দক্ষতা প্রয়োজন তা ছিল না অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের। মন্থর উইকেটে বাংলাদেশি স্পিনারদের খেলতে রীতিমতো খাবি খেয়েছে অজি ব্যাটসম্যানরা। এর সুফল পেয়েছে স্বাগিতিকরা। প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলতে নেমে প্রথম তিন ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে রেখেছিল টাইগাররা।
সিরিজের চতুর্থ ম্যাচটি অবশ্য জিততে পারেনি স্বাগতিকরা। সে ম্যাচে একমাত্র জয়টি পায় অস্ট্রেলিয়া। ৩ উইকেটে বাংলাদেশকে হারায় তারা। গতকাল সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে আগে ব্যাট করে স্কোরবোর্ডে ১২২ রানে পুঁজি পায় অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। এই ১২৩ রানের লক্ষ্যও টপকাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। টাইগার বোলারদের হাতে নাস্তানাবুদ হয়ে গুটিয়ে যায় মাত্র ৬২ রানে। এটিই টি-টোয়েন্টিতে তাদের সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড। এর আগে টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ডটি ছিল ৭৯ রানে, ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। শেষ ম্যাচটি ৬০ রানে জিতে ৫ ম্যাচ সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।
অস্ট্রেলিয়াকে ৬২ রানে থামিয়ে টি-টোয়েন্টি রানের দিক থেকে নিজেদের দ্বিতীয় বড় জয় পেল বাংলাদেশ। রেকর্ড এখনও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০১২ সালে বেলফাস্টে তাদের ৭১ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে রানের দিক থেকে এটি অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম বড় পরাজয়। সবচেয়ে বড় হারটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০০৫ সালে সাউদাম্পটনে অস্ট্রেলিয়া হেরেছিল ১০০ রানে।
আগের চার ম্যাচের মতো গতকালও শুরতেই উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে আউট হয়েছেন আগের ম্যাচের নায়ক ড্যান ক্রিস্টিয়ান। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ৩ বলে ৩ রান করে। এরপরই শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ান ব্য্যটসম্যানদের যাওয়া আসার মিছিল। চতুর্থ ওভারে নাসুমের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে ফিরেছেন এই সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার সেরা ব্যাটসম্যান মিচেল মার্শ (৪)। এক প্রান্তে আশা দেখিয়েছিলেন অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। অষ্টম ওভারে সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে ২২ বলে ২২ রান করে ফেরেন তিনিও। সাকিবের স্পিনের সামনে আর দাঁড়াতেই পারেননি অ্যাগার-টার্নাররা। ৩.৪ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। ম্যাচসেরা পুরস্কারও উঠেছে বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের হাতেই।
এর আগে আগের দুই ম্যাচের মতো টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ওপেনিং জুটির দুর্দশা কাটাতে সৌম্যকে চারে নামিয়ে নাঈমের সঙ্গে জুটি বাধেন মেহেদী হাসান। পরিবর্তনের ফলও এসেছিল হাতেনাতে। আগের চার ম্যাচে (১৫,৯, ৩,২৪) রানের ওপেনিং জুটির পর আজ ৪২ রানের জুটি গড়েছেন নাঈম-মেহেদী। দুজনের দারুণ জুটির পরও বাংলাদেশের স্কোর ১২২ রানের বেশি আগায়নি। এ জন্য অবশ্য মিরপুরের সেøা উইকেটের সঙ্গে ব্যাটসম্যানদের দায়ও আছে।
প্রথমটা শুরু ওপেনার মেহেদীকে দিয়ে। বাংলাদেশ ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আউট হয়েছেন এই অলরাউন্ডার। এই ওভারে বলের লাইন খুঁজে পেতেই হিমশিম খেয়েছেন অ্যাস্টন অ্যাগার। ওয়াইডও দেন তিনটি। থেমে আসা বলটাতে আগেভাগে শটড় খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন মেহেদী (১৩)। শুরুতে দুই অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা আর টার্নারকে দারুণ স্বছন্দে খেললে সময়ের সঙ্গে ছন্দ হারিয়েছেন আরেক ওপেনার নাঈম। মূলত পেসাররা আক্রমণে আসার পর আর হাতে খুলে খেলতে পারেননি নাঈম।
মিরপুরের সেøা উইকেটের সুবিধা দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন নাথান এলিস-ড্যান ক্রিস্টিয়ানরা। ক্রিস্টিয়ানের সেই সেøা বোলিং বৈচিত্র্যের কাছে হার মেনে ২৩ বলে ২৩ রান করে ফেরেন নাঈম। এরপর ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার মিছিলে ছিলেন সাকিব (১১), মাহমুদউল্লাহ (১৯)। সৌম্য সরকার যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। ভালো কিছুর আশা জাগিয়ে ক্রিস্টিয়ানের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরেছেন ১৮ বলে ১৬ রান করে। অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত ১২২ রানে থেমেছিল বাংলাদেশের ইনিংস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।