Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেই সাকিব কই

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০২১, ১২:০৪ এএম

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গত জানুয়ারিতে ওয়ানডে সিরিজে খেলেছিলেন চারে। এরপর গত মার্চে বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ডের সফরে ছুটিতে থাকায় ছিলেন না দলে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান ওয়ানডে সিরিজে আবার পছন্দের তিন নম্বর পজিশনে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু রানের দেখা পাননি প্রথম দুই ম্যাচে। মিরপুরে প্রথমটিতে টাইমিং পেতে ভুগেছিলেন সাকিব আল হাসান। ব্যাটে-বলে সংযোগ হচ্ছিল না ঠিকমতো। এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ৩৪ বলে আউট হয়েছিলেন ১৫ রান করে। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মারতে গিয়ে লং-অনে দিয়েছিলেন ক্যাচ। মনোসংযোগের ওভাবেই কি-না দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বলের সঙ্গে ব্যাটের সখ্যাতা খুঁজতে খুঁজতে রানের খাতাই খোলা হয়নি তার। ৩ বলে খেলে পড়েছিলেন এলবিডবিøউয়ের ফাঁদে।
তবে দলের সেরা তারকা ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও ইতোমধ্যে সিরিজ পকেটে পুড়েছে বাংলাদেশ দল। সেই সন্তুষ্টিতেই কি-না, শেষ ম্যাচের আগের দিন আরেক অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আশা দেখেছিলেন। বলেছিলেন, ‘সাকিবকে নিয়ে বলার কিছু নেই। সে তার নিজের খেলাটা জানে। ও জানে কখন কী করা প্রয়োজন। একটা ছেলে ১০-১২ বছর ধরে এক নম্বর অলরাউন্ডার হয়ে আছে, এটা কোনো ঠাট্টা না। ও জানে ওর কখন ব্যাটিং করা প্রয়োজন, কখন কতটুকু ব্যাটিং করলে ওর জন্য ভালো হবে।’
তবে দীর্ঘ দিনের এই সতীর্থের আশা নিরাশায় পরিণত করেছেন সাকিব। গতকাল আউট হয়েছেন ৪ রান করে! ২৮৭ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই নাঈম শেখের উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। দলের যখন তার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের দিকে তাকিয়ে, ঠিক তখনই কাÐজ্ঞ্যানহীন এক শটে বিদায় নেন ৭ বল খেলে। দুশমন্থ চামিরার গতিময় শর্ট বল সামলাতে না পেরে বিদায় নেন। বলটি যে খুব আহামরি ভালো ছিল তা কিন্তু নয়। বরং চতুরতায় সাকিবকে হারিয়ে দিয়েছে তরুন এই পেসার। সাকিবের শরীর তাক করে শর্ট বলটি করেন চামিরা। পুল করার চেষ্টায় সাকিবের রিফ্লেক্স ছিল কম, তাই টাইমিংও হয়নি ঠিকমতো। বল লাগে ব্যাটের ওপরের দিকে। স্কয়ার লেগে রমেশ মেন্ডিসের লাফানোর টাইমিং ছিল নিখুঁত। দারুণ ক্যাচ নেন তিনি।
অথচ সুদীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তিন নম্বরেই সবচেয়ে সফলতা উপভোগ করেছেন সাকিব। এই পজিশনে ২৫ ইনিংসে ৫৪.১৮ গড়ে ও ৮৭.৪৫ স্ট্রাইক রেটে তার রান ১১৯২। অন্য যে চারটি পজিশনে তিনি খেলেছেন, সেগুলোর চেয়ে তিন নম্বরেই তার রান ও স্ট্রাইক রেট সবচেয়ে বেশি।
ঐ দুই ম্যাচে বল হাতেও করতে পারেননি নামের প্রতি সুবিচার, ঝুলিতে মোটে তিন উইকেট- ১/৪৪ ও ২/৩৮। গতকাল বল কিছুটা ভালো করলেও ছিলেন একেবারেই উইকেটশূন্য! ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে দিয়েছেন ৪৮টি রানও। তবে কিছুটা দুর্ভাগাও বলতে হবে তাকে। দু’দুবার শ্রীলঙ্কান সেঞ্চুরিয়ার কুশল পেরেরার উইকেট পেতে পারতেন দেশসেরা এই অলরাউন্ডার। তবে সতীর্থদের অসহযোগীতায় সেটি হয়নি।
২৫তম ওভারের শেষ বলে সাকিব আল হাসানকে লং অনের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে বল আকাশে তোলেন পেরেরা। ক্যাচ নেওয়ার মতো পজিশনে ছিলেন না আফিফ। আফিফ হোসেনের জন্য ক্যাচটা কঠিন মনে হলেও অসম্ভব ছিল না। অথবা আফিফ নিজে চেষ্টা না করে সামনের ফিল্ডার সৌম্য সরকারকে সুযোগ দিলে সহজেই বলের নিচে আসতে পারতেন সৌম্য।
বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের আগের ওভারের তৃতীয় বলে রিভার্স সুইপ করেছিলেন ৬৬ রানে থাকা পেরেরা। নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় বল উঠে যায় শর্ট থার্ডম্যান অঞ্চলে। পয়েন্টের ফিল্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ। ডাইভ দিয়েও ক্যাচটি নিতে পারেননি তিনি। তবে আন্তর্জাতিক ম্যাচে ফিফটি-ফিফটি সুযোগকে শতভাগ নিজের করে নেওয়াই তো প্রত্যাশিত। উইকেটটি পেলেই রেকর্ড হয়ে যেত সাকিবের। দেশসেরা বোলার মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ছাড়িয়ে উঠতে পারতেন উইকেট শিকারির চূড়ায়। দুজনেই ২৬৯ উইকেট নিয়ে আপাতত যৌথভাবে আছেন শীর্ষে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ