Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যাটিং দুর্ভাবনা নিয়ে লঙ্কার পথে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

নিউজিল্যান্ড সফরে তিনটি করে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি থাকলেও ছিল না টেস্ট। তামিম ইকবাল আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বে দুই সিরিজেই দুঃস্বপ্নের ফলাফল সকলের জানা। এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন, আলোচনাও। সাদা পোষাকে বাংলাদেশ সবশেষ খেলেছিল ঘরের মাটিতে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। আনকোড়া সেই দলটির সঙ্গেও নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে মুমিনুল হকের দলকে। যাচ্ছেতাই ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনীতে লজ্জাজনক হারের টালি সাজিয়েছিল লাল-সবুজের দল। এবার ঘুরে ফিরে আরেকটি টেস্ট পরীক্ষায় নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ, প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। খেলাটিও তাদের মাটিতে। বলা বাহুল্য, আরো কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে রাসেল ডমিঙ্গোর দলকে। দেশের বাইরে সবশেষ পাঁচ টেস্টেই যে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ!

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ দুটি খেলতে লঙ্কার উদ্দেশ্যে আজই ঢাকা ছাড়ছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট শুরু ২১ এপ্রিল, দ্বিতীয়টি ২৯ এপ্রিল। করোনা পরবর্তি জৈব-সুরক্ষা বলয়ে দুটি ম্যাচই হবে পাল্লেকেলেতে। দেশ ছাড়ার আগে গতকাল নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন টেস্ট অধিনায়ক। মিরপুরে শেষ দিনের অনুশীলনের ফাঁকে মুমিনুল জানালেন, ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলেও বোলিংয়ে আশা দেখছেন দলপতি।

বাংলাদেশের সবশেষ তিনটি টেস্ট সফর ছিল নিউজিল্যান্ড, ভারত ও পাকিস্তানে। তিন সফরে পাঁচ টেস্টে একটি ইনিংস ছাড়া বড় কোনো স্কোর গড়তে পারেনি দল। বিদেশে সবশেষ আট ইনিংসে দলকে এমনকি আড়াইশ রানও এনে দিতে পারেননি ব্যাটসম্যানরা। এই আট ইনিংসে নেই একটি ব্যক্তিগত সেঞ্চুরিও। ব্যর্থতার সেই বৃত্ত ভাঙতে এবার শ্রীলঙ্কা সফরের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ। সফরপ‚র্ব সংবাদ সম্মেলনে মুমিনুল বললেন, তার দাবি বেশি ব্যাটসম্যানদের কাছে, ‘আপনি যদি সর্বশেষ চার-পাঁচটা সিরিজ দেখেন, আমার মনে হয়, আপনিও আমার সঙ্গে একমত হবেন। পেস বোলাররা খুবই ভালো করছে, এমনকি স্পিনাররাও। ওই হিসেবে চিন্তা করলে আমি বোলারদের নিয়ে খুব খুশি। এখানে ব্যাটিংটা অনেক গুরুত্বপ‚র্ণ। খালি বোলিং নয়। শেষ দুই-তিনটা সিরিজে ব্যাটিংটা তেমন আশানুরূপ হয়নি, যেটা আমাদের প্রত্যাশা ছিল। আমার কাছে ব্যাটিংটা অনেক বেশি গুরুত্বপ‚র্ণ।’

২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কায় সবশেষ টেস্টে জিতেছিল বাংলাদেশ। দেশের শততম সেই টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন সাকিব আল হাসান। শেষ ইনিংসে ১৯১ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়ায় ৮২ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেছিলেন তামিম ইকবাল। ব্যাটসম্যানদের এবার নিতে হবে নতুন মাঠের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ। পাল্লেকেলেতে কখনও টেস্ট খেলেনি বাংলাদেশ। এই মাঠে সাকুল্যে খেলেছে চারটি ম্যাচ, এক ওয়ানডের সঙ্গে তিনটি টি-টোয়েন্টি। এবার আট বছরের মধ্যে প্রথমবার পাল্লেকেলেতে খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের নভেম্বরে এই মাঠে হয় সবশেষ টেস্ট। দুই দলের স্পিনারদের রাজত্বের সেই ম্যাচে ৫৭ রানে জেতে ইংল্যান্ড। তবে বাংলাদেশ অধিনায়কের ধারণা, বাড়তি বাউন্স মিলতে পারে পাল্লেকেলেতে, ‘আমি আগে ওখানে খেলিনি। প্রথম যখন হয় (স্টেডিয়াম), অন‚র্ধ্ব-১৯ দলে থাকার সময়, ২০০৮ বা ২০০৯ সালে, তখন খেলেছি। এখন শুনেছি যে, একটু বাউন্স আছে। একটু ঘাস থাকতে পারে। শ্রীলঙ্কার উইকেট যেমন থাকে স্পোর্টিং, ওইরকমই। আমার মনে হয়, খুব ভালো ক্রিকেট হবে এবং চ্যালেঞ্জিং হবে।’

আইপিএলে খেলার জন্য দুই ম্যাচের এই টেস্ট সিরিজ থেকে ছুটি নিয়েছেন সাকিব। এই সিরিজের জন্য ম্যানেজমেন্টের ভাবনায় না থাকায় ভারতের টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলতে গেছেন মুস্তাফিজও। দু’জনের জন্য হাহাকার থাকলেও সেটি নিয়ে না ভেবে দলগত পারফরম্যান্সের কথা ভাবা জরুরী বলে মনে করছেন মুমিনুল, ‘আমার মনে হয় না, সাকিব ভাই, মুস্তাফিজ বা একাদশে (কেউ) না থাকলে দল ফল পাবে না। খেলোয়াড় তো আরও আছে। তাদের তো ১০-১২টা হাত না। অন্য যারা আছে, তাদেরও ১০-১২টা হাত না। আমার মনে হয় না এর কোনো প্রভাব পড়ে। আমরা হয়তো দলগতভাবে খেলতে পারছি না, এই কারণে ফল হচ্ছে না। আর কোনো কিছু না।’

গত ফেব্রæয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে চোটের জন্য খেলেননি সাকিব। মাহমুদউল্লাহ বেশ কিছু দিন ধরেই টেস্ট দলের বাইরে। সেরা দল সবসময় পাওয়া যাবে না, এই বাস্তবতা মেনে নিয়ে মুমিনুল তরুণদের তাগিদ দিলেন সুযোগ কাজে লাগানোর, ‘এবার সাকিব ভাই নেই, হয়তো এমনও সিরিজ হতে পারে যেখানে ২-৩ জন সিনিয়র ক্রিকেটার থাকবে না। এর মধ্যে যারা খেলবে, তাদের জন্য, আমি বারবারই কথাটা বলে আসছি, তাদের এটা ভালো সুযোগ। অন্য যারা খেলবে, তাদের জন্য ভালো সুযোগ এবং সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়াটা ভালো।’

 



 

Show all comments
  • Mohammad Wahiduzzaman ১২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৪৭ পিএম says : 0
    খেলতে যাওয়ার আগেই তো হেরে বসে আছে। দলনেতা যদি এভাবে খেলার আগেই হেরে বসে থাকে তাহলে মাঠে অন্য খেলোয়াররা আর কি খেলবে?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ