Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চ্যাম্পিয়নের মতোই শুরু খুলনার

অপুর ক্যারিয়ার সেরা বোলিং

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০২১, ১২:০৮ এএম

দুই ঢাকার দাপুটে জয়

ম্যাচের ভাগ্য অনেকটাই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল দুই দলের প্রথম ইনিংস শেষে। দারুণ এক সেঞ্চুরিতে ফলো অনে পড়া সিলেটের ইনিংস পরাজয়ের শঙ্কা দ‚র করেন জাকির হাসান। তবে হার এড়াতে পারেনি দলটি। তাদের সহজেই হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখার অভিযান শুরু করেছে খুলনা। গতকাল খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে জাতীয় লিগের প্রথম স্তরের ম্যাচে সিলেটকে ৮ উইকেটে হারায় স্বাগতিকরা। ৬৮ রানের লক্ষ্য স্বাগতিকরা ছুঁয়ে ফেলে ৯.৩ ওভারেই। খুলনার ৩৭৫ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ১৩৪ রানে অলআউট হয়ে ফলো অনে পড়ে সিলেট। জাকিরের ১৫ চারে ১৪০ রানের লড়াকু ইনিংসে দ্বিতীয় ইনিংসে তারা করে ৩০৮ রান। এই ইনিংসের জন্য তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
এদিকে, জয়ের পাল্লা কিছুটা ভারীই ছিল ঢাকার দিকে। শেষ দিনে দুর্দান্ত বোলিং করে সেটিকে নিয়ামকে পরিণত করলেন নাজমুল ইসলাম অপু। বাঁহাতি এই স্পিনারের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ¯্রফে উড়ে গেল রংপুর। গতকাল বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে জাতীয় লিগের প্রথম স্তরের ম্যাচে রংপুরের বিপক্ষে ৮০ রানের জয় তুলে নিয়েছে ঢাকা। ২৬৪ রানের জয়ের লক্ষ্যে শেষ দিনে রংপুরের প্রয়োজন ছিল ২২৯, হাতে ছিল আট উইকেট। শেষ পর্যন্ত তারা গুটিয়ে যায় ১৮৩ রানে। প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিতে অপু এদিন একাই নেন ৫ উইকেট। আগের দিনের এক উইকেটসহ ৬৪ রানে ইনিংসে তার প্রাপ্তি ৬টি। তার আগের সেরা ছিল ২১ রানে ৫ উইকেট। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে ম্যাচে এই প্রথম ১০ উইকেট পেলেন তিনি। প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট।
এদিকে রাজশাহীতে ছিল রোমাঞ্চকর শেষের হাতছানি। শেষ পর্যন্ত ছড়ালো না তেমন কোনো উত্তেজনা। জাতীয় লিগের ম্যাচে পেসারদের নৈপুণ্যে স্বাগতিকদের বিপক্ষে সহজেই জিতেছে চট্টগ্রাম। দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচটিতে শেষ দিনে রাজশাহীর দরকার ছিল ১৩৬ রান, হাতে ছিল ৫ উইকেট। কিন্তু মেহেদি হাসান রানার বোলিং তোপে কেবল ৪৭ রান যোগ করেই তারা গুটিয়ে গেছে। ৮৮ রানের জয়ে প্রথম স্তরে ফেরার অভিযান শুরু করল মুমিনুল হকের দল। শেষ দিনে ৩ উইকেট নিয়ে দলের জয়ে গুরুত্বপ‚র্ণ ভ‚মিকা রাখেন বাঁহাতি পেসার মেহেদি রানা।
রাজশাহীর ২৮৩ রানের লক্ষ্যে ভরসা হয়ে টিকে ছিলেন জুনায়েদ সিদ্দিক। সঙ্গীর অভাবে এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান অপরাজিত থেকে যান ৬৮ রানে। তার ১৬৩ বলের ইনিংসে চার আছে পাঁচটি। জিততে জুনায়েদ ও ফরহাদ রেজা জুটির দিকে তাকিয়ে ছিল রাজশাহী। এ জুটিকে দ্রæতই থামিয়ে দেন মেহেদি রানা। দিনের চতুর্থ ওভারে বিদায় করেন রেজাকে। পরের ওভারে এলবিডবিøউ করেন প্রিতম কুমারকে। তাইজুল ইসলামকে ইফরান হোসেন বোল্ড করার পর শফিকুল ইসলামকে এলবিডবিøউ করে জয় নিশ্চিত করেন মেহেদি রানা। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সময় চোট পাওয়া আসাদুজ্জামান পায়েল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে মেহেদি রানার শিকার ৩৫ রানে চার উইকেট। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫৭ রানে সাত উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা তিনি।
এছাড়া, শেষ দিনে তেমন একটা লড়াই করতে পারেনি বরিশাল। আগের দিন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি মুঠোয় নেওয়া ঢাকা মেট্রো কাজ সেরেছে এক সেশনেই। জয় দিয়ে জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম স্তরে ফেরার অভিযান শুরু করেছে দলটি। দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে ৮ উইকেটে জিতেছে মেট্রো। বরিশাল বিভাগীয় স্টেডিয়ামে ৩১ রান যোগ করে ২০৮ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ২ উইকেট হারিয়ে ৩৭ রানের ছোট লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মেট্রো। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মেট্রোর শহিদুল ইসলাম। আটে নেমে দারুণ সেঞ্চুরিতে দলকে প্রথম ইনিংসে এনে দেন বড় সংগ্রহ। সেই সঙ্গে দুই ইনিংস মিলিয়ে এই পেসার নেন ৩ উইকেট।
১৭২ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা বরিশাল ৭ উইকেটে ১৭৭ রানে তৃতীয় দিন শেষ করে। ৫ রানে এগিয়ে থেকে চতুর্থ দিন শুরু করেছিল তারা। ফুড পয়জনিংয়ের কারণে তৃতীয় দিন ব্যাট করতে পারেননি অধিনায়ক ফজলে মাহমুদ রাব্বি। শেষ দিনের শুরুতে নেমে দলের বিপদে তেমন কিছু করতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। দিনের তৃতীয় ওভারে ফিরে যান আবু হায়দার রনির বলে এলবিডবিøউ হয়ে। আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান মনির হোসেনকে বোল্ড করে দেন বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানি। নিজের দ্বিতীয় বলেই তানভির ইসলামকে এলবিডবিøউ করে স্বাগতিকদের ইনিংস গুটিয়ে দেন আল আমিন। অল্প রান তাড়ায় আনিসুল ইসলাম ইমন ও শামসুর রহমানের উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মেট্রো। দুজনই বাঁহাতি স্পিনার তানভিরের শিকার।
দ্বিতীয় রাউন্ড শুরু আগামী সোমবার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
ঢাকা-রংপুর, সিকেএসপি-৪
ঢাকা : ৩৬৫ ও ২য় ইনিংস : ১২৮।
রংপুর : ২৩০ ও ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ২৬৪) (আগের দিন ৩৫/২) ৮৬.২ ওভারে ১৮৩ (সোহরাওয়ার্দী ২০, মাহমুদুল ১৫, নাইম ৬১, নাসির ১৬, আকবর ২৮; নাজমুল অপু ৬/৬৪, আরাফাত জুনি. ১/৬৪, সাইফ ১/১৪, তাইবুর ২/২১)।
ফল : ঢাকা ৮০ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : নাজমুল ইসলাম অপু।

খুলনা-সিলেট, খুলনা
সিলেট : ১৩৪ ও ২য় ইনিংস : (ফলো অন) (আগের দিন ২৫০/৫) ১০৪.৫ ওভারে ৩০৮ (জাকির ১৪০, কাপালী ২৩; হালিম ৪/৬২, মাসুম ১/৬১, জিয়াউর ১/৩৬, মইনুল ৩/৩৬)।
খুলনা : ৩৭৫ ও ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৬৮) ৯.৩ ওভারে ৭৩/২ (রবি ১৪, ইমরান ৩৩*, ইমরুল ১৮, তুষার ১*; খালেদ ১/৩২, রেজাউর ১/৫)।
ফল : খুলনা ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : জাকির হাসান।

রাজশাহী-চট্টগ্রাম, রাজশাহী
চট্টগ্রাম : ২৮৭ ও ২য় ইনিংস : ১৪৭
রাজশাহী : ১৫২ ও ২ম ইনিংস : (লক্ষ্য ২৮৩, আগের দিন ১৪৭/৫) ৬৯ ওভারে ১৯৪ (জুনায়েদ ৬৮*, রেজা ২৫; ইফরান ৩/৪০, মেহেদি রানা ৪/৩৫, হাসান ১/৩৬, ইয়াসির ১/১৫)
ফল : চট্টগ্রাম ৮৮ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মেহেদি হাসান রানা।

বরিশাল-ঢাকা মেট্রো, বরিশাল
বরিশাল : ৭৬ ওভারে ২৪১ ও ২য় ইনিংস : (আগের দিন ১৭৭/৭) ৭৩.২ ওভারে ২০৮ (মনির ১৮, রাব্বি ১৪*; শহিদুল ২/৪৩, আবু হায়দার ৩/৪২, আরাফাত ২/৫৮, আল আমিন ১/২২, শামসুর ১/২)।
ঢাকা মেট্রো : ৪১৩ ও ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৩৭) ১১.৫ ওভারে ৩৭/২ (আনিসুল ১০, জাহিদুজ্জামান ১৫*, শামসুর ৪, মার্শাল ১*; তানভির ২/১৩, আশরাফুল ০/২)।
ফল : ঢাকা মেট্রো ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : শহিদুল ইসলাম

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ