Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতীয় ক্রিকেটের ‘৩৬’ ভাবাচ্ছে শাস্ত্রীকে

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সংখ্যা কোনটি? না, সংখ্যাবিজ্ঞান নিয়ে বসা হয়নি। তবে রবি শাস্ত্রী সম্ভবত এ নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছেন। করছেন গবেষণা। ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলের এ কোচ ভেবে বের করেছেন, তার দেশের ক্রিকেটে ‘৩৬’ সংখ্যাটার তাৎপর্য অনেক বেশি। এই সংখ্যাটা শুধু তার ক্যারিয়ারের উন্নতিতেই ভূমিকা রাখেনি বরং ভারতীয় ক্রিকেটের উত্থানেও ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন শাস্ত্রী। অন্তত তার সা¤প্রতিক টুইট দেখলে এমনটাই মনে হওয়া স্বাভাবিক।
বিরাট কোহলিদের কোচ এ নিয়ে পরশু একটি টুইট করেন, ‘হ্যাঁ...অনেক বেশি ৩৬। আমার ছয় ছক্কা। অ্যাডিলেডে দলের ৩৬। ওয়ানডে সংখ্যা ৩৬। গাভাস্কারের ৩৬। যুবরাজ সিংয়ের ছয় ছক্কা। আরও হতে পারে।’ শাস্ত্রীর ছয় ছক্কা ভারতীয় ক্রিকেটে আশির দশকের গল্প। ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে রঞ্জি ট্রফিতে বরোদার বিপক্ষে এক ওভারে ছয় ছক্কা মারেন মুম্বাইয়ের হয়ে খেলা ভারতের সাবেক এ অলরাউন্ডার।
যুবরাজ সিংয়ের ছয় ছক্কার সময়ও মাঠে ছিলেন শাস্ত্রী। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে স্টুয়ার্ট ব্রডের এক ওভারে ছয় ছক্কা মারেন সাবেক এই ভারতীয় অলরাউন্ডার। শাস্ত্রী তখন ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন। আর সুনীল গাভাস্কারের ৩৬? কী কারণে গাভাস্কার সেদিন ওই ইনিংস খেলেছিলেন, এর ব্যাখ্যা সম্ভবত আজও খুঁজে পাননি ভারতের সমর্থকেরা।
১৯৭৫ বিশ্বকাপে লর্ডসে প্রথম ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ড। আগে ব্যাট করে ডেনিস অ্যামিসের সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ৩৩৪ রান তুলেছিল মাইক ডেনেসের ইংল্যান্ড। ৬০ ওভারের সেই ওয়ানডেতে ভারত তাড়া করতে নেমে অলআউট হয়নি। পুরো ইনিংস ব্যাট করে তারা তুলেছিল ৩ উইকেটে ১৩২ রান! জয়ের লক্ষ্যে নেমে ভারতের এই উল্টো রথযাত্রার মতো ব্যাটিংয়ের পুরোধা ছিলেন গাভাস্কার। তাঁকে কেউ আউট করতে পারেননি। তবে আউট হলেই বোধ হয় ভালো হতো! প্রস্তর যুগের ব্যাটিং বললেও ভুল হয়, ১৭৪ বলে ৩৬ রানে অপরাজিত ছিলেন ভারতীয় কিংবদন্তি। তিনি কেন এত ‘ডট’ বল খেলেছিলেন, তা আজও কারও মাথায় ঢোকেনি।
অ্যাডিলেডে ভারতের ‘৩৬’ বেশি দিন আগের কথা নয়। গত বছর ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে অ্যাডিলেড টেস্টে মাত্র ৩৬ রানে অলআউট হয়েছিল বিরাট কোহলির ভারত। প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউডদের তোপে চুপ হয়ে গিয়েছিল ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপের সব তর্জন-গর্জন। শাস্ত্রী আবার এ দলেরই কোচ। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এটি ভারতের সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড।
যদিও পরে দোর্দন্ড প্রতাপে ফিরে এসেছিল ভারত। চার টেস্টের সেই সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল কোহলিহীন অজিঙ্কা রাহানের দল। দেখিয়েছিল নিজেদের সামর্থ্য।
কোচ হিসেবে ভারতীয় দলকে দিন দিন এগিয়ে নিচ্ছেন শাস্ত্রী। প্রথমে ক্রিকেটার, এরপর ধারাভাষ্যকার ও বিশ্লেষক থেকে কোচ, শাস্ত্রী আছেন সবখানেই। তবে এই শেষ ভূমিকায় শাস্ত্রী নিজেকে পরিণত করে তুললেন কীভাবে, এ প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন বেশ ভালোভাবেই। জানিয়েছেন, ‘যখন দায়িত্ব পেলাম, জানতাম না কিসের মধ্য দিয়ে যাব এবং শেষ হবে কীভাবে। এই ছয় বছরে আমি অনেক শিখেছি, যা গত ৩৫ বছরে শেখা হয়নি। মানব ব্যবস্থাপনা খুব গুরুত্বপূর্ণ। একেক মানুষের ব্যবহার ও ভাবনা আলাদা। এই দলটা বেশ বড়, তাই সবার মানসিকতা বুঝে সেসবের সম্মিলন ঘটানো গুরুত্বপূর্ণ।’
শাস্ত্রীর এই শিক্ষা যেন আগামী সময়গুলোতে ভারতীয় ক্রিকেটে আরও বেশি যুবরাজের ‘৩৬’- এর মতো ঘটনা নিয়ে আসে, গাভাস্কার কিংবা অ্যাডিলেডের মতো নয়, সেটাই প্রত্যাশা থাকবে ভারতীয় সমর্থকদের!



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ