ভারত-ইংল্যান্ড চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটি রোমাঞ্চের অপেক্ষায় রয়েছে। মঙ্গলবার ম্যাচের শেষ দিনে স্বাগতিক ভারতের জন্য অপেক্ষা করছে আরো কঠিন লড়াই। কারণ সুযোগ থাকা সত্বেও ভারতীয়দের ফলো অন করায়নি ইংল্যান্ড। দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় সফরকারীরা দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যায় দুইশ রানেই আগেই। তবুও প্রথম টেস্টে ইংলিশরাই চালকের আসনে রয়েছে। অন্যদিকে ভারতের ম্যাচ বাঁচানোর আশা ভালোভাবেই টিকে আছে। সব মিলিয়ে রোমাঞ্চের অপেক্ষায় দু’দলের মধ্যে প্রথম টেস্টটি।

সোমবার চেন্নাইয়ে ৪২০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারত তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাচের চতুর্থ দিন শেষে ১ উইকেটে তুলেছে ৩৯ রান। ওপেনার রোহিত শর্মা আউট হওয়ার পর ভারতকে এগিয়ে নিচ্ছেন শুবমান গিল ও চেতেশ্বর পুজারা। ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনে জয়ের জন্য স্বাগতিকদের প্রয়োজন ৩৮১ রান, আর সফরকারীদের দরকার ৯ উইকেট।

এর আগে ভারত তাদের প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ৩৩৭ রানে। এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করা ওয়াশিংটন সুন্দর অপরাজিত থাকেন ক্যারিয়ার সেরা ৮৫ রানে। এরপর ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস থামে ১৭৮ এ।

ম্যাচের চতুর্থ দিনটি ছিল স্পিনারদের জন্যই। ১৫ উইকেটের ১১টিই শিকার করেছেন তারা। ইংল্যান্ডকে দ্বিতীয় ইনিংসে দু’শর নিচে থামিয়ে দেওয়ার মূল কারিগর ভারতের অফ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তিনি ৬১ রানে তুলে নেন ৬টি উইকেট। এমন কৃতিত্বে সবচেয়ে বেশিবার পাঁচ উইকেট শিকারী তালিকায় ইয়ান বোথামকে ছাড়িয়ে গেছেন অশ্বিন (২৮)। টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায়ও ইংলিশ অলরাউন্ডারকে (৩৮৩) পেছনে ফেলেছেন ভারতীয় অফ স্পিনার (৩৮৬)।

আগের দিনের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২৫৭ রান হাতে নিয়ে সোমবার দিন শুরু করে ভারত। সাবধানী ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন গত পরশুর দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান সুন্দর ও অশ্বিন। ৮২ বলে হাফসেঞ্চুরি স্পর্শ করেন সুন্দর। ৯১ বলে ৩১ রান করা অশ্বিনকে কট বিহাইন্ড করে ৮০ রানের জুটি ভাঙেন জ্যাক লিচ। এরপর আর সুন্দরকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ। লিচের বলে শাহবাজ নাদিম আউট হওয়ার পর ইশান্ত শর্মা ও জাসপ্রিত বুমরাহকে আউট করে দ্রুত ভারতের ইনিংস শেষ করে দেন জেমস অ্যান্ডারসন।

২৪১ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। অশ্বিনের বলে অজিঙ্কা রাহানের হাতে ধরা পড়েন ররি বার্নস। পরে ডম সিবলিকেও থামান ভারতীয় এই অফ স্পিনার। ইশান্তের বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়ে ফিরে যান ড্যান লরেন্স। এরই সঙ্গে টেস্টে ভারতের তৃতীয় পেসার হিসেবে ৩০০ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েন ইশান্ত।

দ্রুত রান তুলতে থাকা জো রুটকে ফিরিয়ে দেন বুমরাহ। প্রথম ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি করা ইংলিশ অধিনায়ক (৩২ বলে ৪০) এলবিডব্লিউ হন। এরপর অলি পোপ, জস বাটলারকে ইনিংস বড় করতে দেননি নাদিম। ফলে বেশিদূর এগোয়নি ইংল্যান্ডের ইনিংস।

বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় দিনের শেষ ঘণ্টায় ব্যাটিংয়ে নেমে ভারত হারায় রোহিত শর্মাকে। তাকে বোল্ড করেন লিচ। বাকি সময় নিরাপদেই কাটিয়ে দেন গিল ও পুজারা।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫৭৮

ভারত ১ম ইনিংস : (আগের দিন ২৫৭/৬) ৯৫.৫ ওভারে ৩৩৭ (সুন্দর ৮৫*, অশ্বিন ৩১, নাদিম ০, ইশান্ত ৪, বুমরাহ ০; অ্যান্ডারসন ১৬.৫-৫-৪৬-২, আর্চার ২১-৩-৭৫-২, স্টোকস ৬-১-১৬-০, লিচ ২৪-৫-১০৫-২, বেস ২৬-৫-৭৬-৪, রুট ২-০-১৪-০)।

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস : ৪৬.৩ ওভারে ১৭৮ (বার্নস ০, সিবলি ১৬, লরেন্স ১৮, রুট ৪০, স্টোকস ৭, পোপ ২৮, বাটলার ২৪, বেস ২৫, আর্চার ৫, লিচ ৮*, অ্যান্ডারসন ০; অশ্বিন ১৭.৩-২-৬১-৬, নাদিম ১৫-২-৬৬-২, ইশান্ত ৭-১-২৪-১, বুমরাহ ৬-০-২৬-১, সুন্দর ১-০-১-০)।

ভারত ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৪২০) ১৩ ওভারে ৩৯/১ (রোহিত ১২, গিল ১৫*, পুজারা ১২*; আর্চার ৩-২-১৩-০, লিচ ৬-১-২১-১, অ্যান্ডারসন ২-১-২-০, বেস ২-০-৩-০)।