Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তকে কাঁদিয়ে নায়ক ইমন

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

এক হাতে ব্যাট, আরেক হাতে হেলমেট উঁড়িয়ে ধরা, মুষ্ঠিবদ্ধ হাত আকাশে ছোঁড়া, চেনা এসব উদযাপন হয়ে গেল। এরপর ড্রেসিং রুমের দিকে তাকিয়ে পেশী ফুলিয়ে দেখালেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তা তিনি দেখাতেই পারেন। পেশী শক্তির প্রদর্শনী মেলে ধরেই তো তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান পৌঁছে গেলেন সেঞ্চুরিতে!
শতরান স্পর্শ করলেন যে শটে, শান্তর সেটি দশম ছক্কা। পরের বলেই আরেকটি ছক্কায় স্পর্শ করলেন তামিম ইকবালের ১১ ছক্কার রেকর্ড। এক ইনিংসে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের সবচেয়ে বেশি ছক্কার কীর্তি এখন যৌথভাবে এই দুজনের। ফরচুন বরিশালের বোলারদের নাকের পানি চোখের পানি একাকার করে শান্ত ফিরলেন ইনিংসের শেষ ওভারে। মিনিস্টার গ্রæপ রাজশাহী অধিনায়কের নামের পাশে তখন ৫৫ বলে ১০৯ রান।
গতকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ছক্কার রেকর্ডের পাশাপাশি তামিমের আরেকটি কীর্তিও স্পর্শ করলেন শান্ত। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে স্বাদ পেলেন তিনি একাধিক টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরির। এই বছরের শুরুতে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ম্যাচে অপরাজিত ১১৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। ২০ ওভারের ক্রিকেটে তামিমের সেঞ্চুরি ৩টি।
এই ম্যাচের শুরুর দিকে শান্তর ব্যাট ছিল অনেকটাই শান্ত। ৫ ওভার শেষে তার রান ছিল ১২ বলে ৭। এরপরই অশান্ত হয়ে ওঠেন। বল আছড়ে ফেলতে থাকেন মাঠের নামা প্রান্তে। মিরাজের এক ওভারে দুটি ছক্কায় ফিফটি স্পর্শ করেন ৩২ বলে। ছক্কার মালা সাজিয়ে শতরান প‚রণ করেন ৫২ বলে। দ্বিতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসাবে টি-টোয়েন্টিতে একাধিক সেঞ্চুরির মালিক হলেন তিনি। শান্তর দুইটা সেঞ্চুরিই এই বছরে এসেছে। প্রথমটি এই বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) খুলনার পক্ষে করেছিলেন।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্রæততম সেঞ্চুরির রেকর্ড তামিমের, ৫০ বলে। শান্তর আগের সেঞ্চুরি ছিল ৫১ বলে। আনিসুল ইসলাম ইমনের সঙ্গে এ দিন উদ্বোধনী জুটিতে ১২.২ ওভারে ১৩১ রানের জুটি গড়েন শান্ত। ইমন করেন ৩৯ বলে ৬৯। ২০ ওভারে রাজশাহীর রান ৭ উইকেটে ২২০।
এই ম্যাচ জিততে হলে রেকর্ড গড়ে জিততে হবে বরিশালকে। হারলে টুর্নামেন্ট থেকেও পা পিছলে যাবে তাদের- এই যখন সমীকরণ। ঠিক তখনই কাÐারির ভুমিকায় পারভেজ হোসেন ইমন। দলের প্রয়োজন চার, যুব দলের এই তারকা ব্যাটসম্যানেরও দরকার তখন চার। দুর্দান্ত কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারিতে দুটিই হয়ে গেল একসঙ্গে। বাঁধনহারা উচ্ছ¡াসে মাতলেন পারভেজ। রান তাড়ার অসাধারণ এক উপাখ্যান রচিত হলো শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে। শান্তর বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে যে রান পাহাড় গড়েছিল রাজশাহী, পারভেজের রেকর্ড গড়া দ্রæততম সেঞ্চুরিতে তা টপকে গেল বরিশাল।
রান খরার বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে হঠাৎই এলো রানের জোয়ার। পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা দুই দলের লড়াইয়েই হয়ে গেল রান তাড়ার রেকর্ড। মিনিস্টার গ্রæপ রাজশাহীর ২২০ রান টপকে ফরচুন গ্রæপ বরিশাল জিতে গেল ৮ উইকেট।
বাংলাদেশে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রান তাড়ার রেকর্ড এটিই। এই দুঃসাধ্য কাজটি বরিশাল করেছে ১১ বল বাকি রেখেই। গত জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ঢাকা প্লাটুনের ২০৫ রান তাড়ায় খুলনা টাইগার্সের জয় ছিল বাংলাদেশে রান তাড়ার আগের রেকর্ড। খুলনাও জিতেছিল ৮ উইকেটে, ঠিক ১১ বল বাকি রেখেই। গত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য পারভেজ খেলেন ৪২ বলে ১০০ রানের অপরাজিত ইনিংস। তার অসাধারণ ইনিংসে ছিল ৯টি চার ও ৭টি ছক্কা। বেশ অনেকটা ব্যবধানে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের দ্রæততম সেঞ্চুরি এটিই। ২০১৯ বিপিএলে গড়া তামিম ইকবালের ৫০ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড এখন অতীত। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে বিপিএলের ফাইনালে ৫০ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছিলেন বরিশাল অধিনায়ক। সেবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে মাত্র ৬১ বলে খেলেছিলেন ১৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস। প্রতিপক্ষ ছিল ঢাকা ডায়নামাইটস।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
মিনিস্টার গ্রæপ রাজশাহী : ২০ ওভারে ২২০/৭ (শান্ত ১০৯, ইমন ৬৯, রনি ১৮, সোহান ১২; তাসকিন ০/৪৯, মিরাজ ০/৩৫, সুমন ২/৪৩, আবু জায়েদ ০/১১, কামরুল ৪/৪৯, আফিফ ০/৩২)।
ফরচুন বরিশাল : ১৮.১ ওভারে ২২১/২ (সাইফ ২৭, তামিম ৫৩, পারভেজ ১০০*, আফিফ ২৬*; সাইফুদ্দিন ১/৪০, মেহেদি ০/৪০, ইবাদত ০/৩৯, মুকিদুল ০/২৬, ফরহাদ ০/৪৭, সানি ০/১১)।
ফল : ফরচুন বরিশাল ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : পারভেজ হোসেন ইমন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ