নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে জয়ের ধারা অক্ষুণ্য রেখেছে আবাহনী লিমিটেড। মঙ্গলবার চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে ৫ উইকেটে হারিয়ে আসরে শতভাগ জয় ধরে রাখে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
একই দিনে আব্দুল মাজিদের সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহ গড়েও জিততে পারেনি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। রাকিবুল হাসানের দলকে মৌসুমের প্রথম পরাজয় উপহার দিয়ে চার ম্যাচে তৃতীয় জয় তুলে নেয় লিজেন্ড অব রূপগঞ্জ। জয়টি ছিল ৪ উইকেটের।
দিনের আরেক ম্যাচে এনামুল হক ও অভিমন্যুর শতকে রানের পাহাড় গড়ে জিতেছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। বৃষ্টি আইনে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে মৌসুমের তিন নম্বর পরাজয় উপহার দিয়ে ২৯ রানে ম্যাচ জিতে নেয় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। ৪ ম্যাচে তৃতীয় জয়ে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে এসেছে এনামুলের দল।
সাভারে টস হেরে ব্যাটে নামা প্রাইম ব্যাংক দলীয় ৫ রানেই ওপেনার রুবেল মিয়াকে হারায়। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেটে ১৯৪ রানের দুর্দান্ত জুটিতে শক্ত ভীত গড়ে যান দুই সেঞ্চুরিয়ান এমানুল ও অভিমন্যু। ১২০ বলে ৮ চারে ১০১ রান করে এনামুলের বিদায়ে ভাঙে জুটি। আগের ম্যাচেও তিন অঙ্কের দেখা পাওয়া এনামুলের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটি ১২তম শতক। ১২৬ বলে ১০ চার ও ১ ছয়ে ১৩৩ রান আসে ম্যাচ সেরা অভিমন্যুর ব্যাট থেকে। দুজনই আবু হায়দারের শিকারে পরিণত হন।
তাদের গড়া ভিতের উপর দাঁড়িয়ে ঝড় তোলেন আরিফুল হক। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৩২ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ৬৭ রান করেন এই পেস অলরাউন্ডার। প্রাইম ব্যাংক পায় ৬ উইকেটে ৩৪৪ রানের বিশাল সংগ্রহ। বৃষ্টি আইনে শেখ জামালের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৯.১ ওভারে ২৩৬। কিন্তু হাতে ৬ উইকেট নিয়েও লক্ষ্যটা পূরণ করতে পারেনি শেখ জামাল।
৫৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খায় তারা। নাসির হোসেন ও অধিনায়ক নুরুল হাসান ১১৪ রানের জুটিতে ধাক্কা সামলালেও বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান করতে পারেননি। নাসির আউট হন ১০ চার ও ২ ছয়ে বলের সমান ৭৬ রান করে। আবু হায়দারকে নিয়ে ৬৫ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত ছিলেন নুরুল। ৪ উইকেটে ২০৬ রানে আটকে যায় তাদের ইনিংস।
মিরপুরে মাজিদের ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি কোন কাজে আসেনি। তার ১২৬ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে ১০৭ রানের ইনিংসের উপর দাঁড়িয়ে নাদিফ চৌধুরী তোলেন ৪৭ বলে ৪টি করে ছক্কা-চারে ৬৪ রানের ঝড়। অন্যরাও ছোট কিন্তু কার্যকারী অবদান রাখায় ৭ উইকেটে ২৯৫ রানের বড় সংগ্রহ পায় মোহামেডান। কিন্তু মোমিনুল হক, নাঈম ইসলাম ও ঋষি ধাওয়ানের ফিফটিতে তা পেরিয়ে যায় রূপগঞ্জ। ৯২ বলে ৮৫ রানের ইনিংস সামনে থেকেই দলের জেয় নেতৃত্ব দেন দলপতি নাঈম। তিনি যখন আউট হন জয়ের জন্য তখন লাগে ৬ বল ৪ রান। ২৬ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকা জাকের আলি হিসাবটা ৪ বল হাতে রেখেই মিলিয়ে নেন। এর আগে নিউজিল্যান্ড থেকে দুঃস্মৃতি নিয়ে ফেরা মুমিনুল খেলেন ৫৪ বলে ৫৫ রানের ইনিংস।
ওদিকে ফতুল্লার লো স্কোরিং ম্যাচে শাইনপুকুরকে ৯ বল হাতে রেখে হারায় আবাহনী। রুবেল হোসেন, নাজমুল ইসলাম ও মোসাদ্দেক হোসেনদের মিলিত বোলিং আক্রমণের সামনে নির্ধারিত ৫০ ওভার ব্যাট করেও ৯ উইকেটে ২০৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারে শাইনপুকুর। ইনিংসে কোন ফিফটি নেই, একমাত্র চল্লিশোর্ধো ইনিংস অধিনায়ক আফিফ হোসেনের, ৪৮। ভারতীয় ব্যাটসম্যান ওয়াশিম জাফরের ফিফটি ও বাকিদের কার্যকারী অবদানে লক্ষ্যটা পূরণ করে আবাহনী। ১০৬ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৭৬ রান করেন জাফর। ওয়ানডাউনে নেমে ৫২ বলে ৪২ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। নিউজিল্যান্ড সফরের দুঃস্মৃতি নিয়ে ফেরা আরেক ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে আসে ৫৭ বলে ৩৩ রানের ইনিংস।
চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে আগামীকাল মিরপুরে প্রাইম দোলেশ্বর ও গাজী গ্রুপ, ফতুল্লায় খেলাঘর ও বিকেএসপি এবং সাভারে ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাব পরস্পরের মুখোমুখি হবে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মোহামেডান-রূপগঞ্জ, মিরপুর
মোহামেডান : ৫০ ওভারে ২৯৫/৭ (অভিষেক ৬, মজিদ ১০৭, তুষার ১৯, রকিবুল ২৯, শুক্কুর ২৫, নাদিফ ৬৪, সোহাগ ১৭, ডি সিলভা ২৩*, আলাউদ্দিন ০*; শহীদ ৩/৭০, ধাওয়ান ১/৪৮, আসিফ ০/৪৪, মুক্তার ১/৬৭, নাবিল ০/৪৯, নাঈম ০/১৬)। রূপগঞ্জ : ৪৯.২ ওভারে ২৯৬/৬ (আজমির ৩, মোহাম্মদ নাঈম ৩৩, মুমিনুল ৫৫, শাহরিয়ার ২৫, নাঈম ৮৫, ধাওয়ান ৫১, জাকের ৩৪*, মুক্তার ১*; শফিউল ২/৬৫, সোহাগ ০/৫৫, সাকলাইন ০/৫৫, আলাউদ্দিন ১/৬০, অভিষেক ০/১৮, ডি সিলভা ০/৪১) । ফল : রূপগঞ্জ ৪ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা : নাঈম ইসলাম।
শাইনপুকুর-আবাহনী, ফতুল্লা
শাইনপুকুর : ৫০ ওভারে ২০৩/৯ (সাদমান ১৬, সাব্বির ১০, উদয় ০, হৃদয় ৩৯, আফিফ ৪৮, শুভাগত ১২, ধীমান ২২, শুভ ২৪*, দেলোয়ার ২, টিপু ৫, শরিফুল ৭*; মাশরাফি ০/১৪, রুবেল ২/২৮, সৌম্য ০/২৭, নাজমুল ২/৪১, সানজামুল ১/৪২, মোসাদ্দেক ৩/৪১, শান্ত ০/১)। আবাহনী : ৪৮.৩ ওভারে ২০৬/৫ (জাফর ৭৬, সৌম্য ৩৩, শান্ত ৪২, মিঠুন ১৫, মোসাদ্দেক ২, সাব্বির ১৩*, মুনিম ২১*; দেলোয়ার ০/২৬, শুভাগত ১/২৭, টিপু ০/৩৪, শরিফুল ৩/৪৪, শুভ ০/৪৭, আফিফ ০/১৭, সাব্বির ০/৯)। ফল : আবাহনী ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা : ওয়াসিম জাফর।
প্রাইম ব্যাংক-শেখ জামাল, সাভার
প্রাইম ব্যাংক : ৫০ ওভারে ৩৪৪/৬ (এনামুল ১০১, রুবেল ০, অভিমন্যু ১৩৩, জাকির ০, আল আমিন ৮, আরিফুল ৬৭*, কাপালী ১৬, নাহিদুল ৮*; শহিদুল ১/৬৯, তাইজুল ১/৫৭, শাকিল ০/৭৬, জিয়া ১/৭১, শাহবাজ ০/৩১, নাসির ০/১১, তানবীর ২/২৭)। শেখ জামাল : (৩৭.১ ওভারে লক্ষ্য ২৩৬) ৩৭.১ ওভারে ২০৬/৪ (ইমতিয়াজ ২৬, ফারদিন ১৭, বিশত ৯, নাসির ৭৬, সোহান ৫৪*, তানবীর ১৬*; মোহর ০/২৩, মনির ১/২৩, নাহিদুল ২/৫১, রাজ্জাক ১/৫২, আরিফুল ০/২৮, কাপালী ০/২৪)। ফল : ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে প্রাইম ব্যাংক ২৯ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা : অভিমান্যু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।