Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

একেই বলে টেস্ট ক্রিকেট!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

অভিষেকেই দ্বীপ্ত সাদমান ইসলাম। মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনই ওপেনিং জুটির কান্না থামানো ইনিংস এলো তার হাত ধরে। ফিফটির দেখা পেয়ে উজ্জ্বীবিত সাকিব আল হাসান ইনজুরি কাটিয়ে ব্যাটে ফিরলেন সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েও। তবে হতাশ করেননি সহ অধিনায়ক। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ধ্রুপদী সেঞ্চুরির পর এগারো ব্যাটসম্যানের দুই অঙ্কে পৌঁছুনোর দিনটি এমনিতেই বাংলাদেশের। পিছিয়ে থাকবেন কেন বোলাররা!
যে উইকেটে সাড়ে পাঁচ সেশন ব্যাট করে বাংলাদেশ তুলল ৫০৮ রান, খানিকের মধ্যেই সেই উইকেটই পরিণত মাইন্ডফিল্ডে! প্রায় দুই দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটারদের ফিল্ডিংয়ে ব্যস্ত রাখল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকেলের এক সেশন ব্যাটিংয়ে গিয়েই নাকাল ক্যারিবীয়ান শিবির। মাত্র ১২ ওভারের এক ঝড়েই লণ্ডভণ্ড সফরকারী টপ অর্ডার।
সারাদিন বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল মিরপুর টেস্টে হয়ত গড়াতে পারে পাঁচদিনেও। কিন্তু এখন ম্যাচের যা পরিস্থিতি তাতে তৃতীয় দিনেই খেলা শেষ হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। পুরো ম্যাচ বগলদাবাই করে রেখেছে বাংলাদেশ। গতকাল শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরিতে ৫০৮ রান করে অলআউট হওয়ার সময় চলছিল শেষ সেশনের খেলা। বিকেলের আলোয় ওই সময় ব্যাটিং পেয়ে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা উইন্ডিজের। ২৯ রানে ৫ উইকেট খোয়ানো ক্যারিবিয়ানদের বোর্ডে দিনশেষে জমা পড়েছে ৭৫ রান।
ব্যাটে-বলে ঝলমলে দিনে দল হিসেবে বাংলাদেশের খাতায় জমা হয়েছে দুই রেকর্ড। এই প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের এগারোজন ব্যাটসম্যানই যেতে পেরেছেন দুইঅঙ্কে। সব মিলিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে এমন ঘটনার নজির চৌদ্দতম। বাংলাদেশের পরের রেকর্ডটির ভাগীদার কেউ নেই। টেস্ট ক্রিকেটে স্পিনারদের বলে এই প্রথম কোন দলের প্রথম পাঁচজন ব্যাটসম্যান বোল্ড হয়েছেন।
বল হাতে নিয়ে প্রথম ওভারেই ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে বোল্ড করে শুরু অধিনায়ক সাকিবের। ষষ্ঠ ওভারে কিরন পাওয়েলের স্টাম্প যায় মেহেদী হাসান মিরাজের বলে। দু’ ওভার পর সুনিল আম্রিসকে সোজা বলে বোল্ড করেন সাকিব। এর রেশ থাকতেই পরের ওভারে রোস্টন চেজ বোল্ড হয়ে যান মিরাজের বলে। এক ওভার পরে শাই হোপকেও বোল্ড করে উৎসবের রেনু মিরপুরের গ্যালারিতে ছড়িয়ে দেন মিরাজ।
এরআগে পুরোদিনই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা দেখিয়ে গেছেন নিজেদের মুন্সিয়ানা। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মাহমদুউল্লাহ আর সাকিব নির্বিঘে পার করে দেন প্রথম আধা ঘণ্টা। সেঞ্চুরির পথে থাকা সাকিব ৮০ রানে কেমার রোচের বলে গালিতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে ভাঙে ১১১ রানের জুটি।
কিন্তু ওতে বিশেষ ক্ষতি হয়নি বাংলাদেশের। হুট করে টেস্ট দলে ফেরা লিটন দাস দাঁড়িয়ে যান মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে। আট নম্বরে নেমে গড়ে তুলেন ৯২ রানের জুটি। লাঞ্চের পর পরই রান বাড়ানোর তাড়ায় ফেরেন ফিফটি তুলে দারুণ খেলতে থাকা লিটন।
বাকিটা পথ মিরাজ, তাইজুল, নাঈমদের নিয়ে ছোট ছোট জুটি গড়ে একাই টেনেছেন মাহমুদউল্লাহ। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিরেছেন ক্যারিয়ার সেরা ১৩৬ রান করে।
চা-বিরতির পর ৫০৮ রানে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হওয়ার সময় সব আলো মাহমুদউল্লাহর দিকে। কিন্তু দিনশেষে তাকেও যেন ছাপিয়ে গেছে স্পিনারদের কারিকুরি কিংবা বলা যায় উইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের দুর্বল টেকনিক, স্পিন দেখেই থরথর কাঁপুনি।

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ