Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপভোগের মন্ত্রে সাফল্যের খোঁজে রাব্বি

‘সাকিব ভাইয়ের বিকল্প নেই’

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

বেশ কিছুদিন থেকেই মিরপুরে ছিলনা কোন ভালো খবর। কেমন যেন বিষাদে ঢাকা পড়ে গিয়েছিলো হোম অব ক্রিকেটের পরিবেশ। সেই শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আলোকিত এক সকালের আবির্ভাব। ক্রিকেটারদের পদচারণায় মুখর, বাজছে প্রস্তুতির ডামাডোল। সেন্টার উইকেটের কয়েক পাশে লাগানো আছে জাল। কল্পিত ফিল্ডারও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২২ গজে পরীক্ষা ব্যাটসম্যানদের। আলতো হাতে খেলে, ফাঁকা জায়গায় ঠেলে, ত্বরিত নিতে হবে এক-দুই রান। প্রধান কোচ স্টিভ রোডসের সঙ্গে ব্যাটসম্যানদের সিঙ্গেল-ডাবলস নেওয়ার সেশন দিয়ে গতকাল শুরু হলো জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য বাংলাদেশ দলের প্রস্ততি। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে নতুন মুখ ফজলে মাহমুদ রাব্বি।

পনেরো বছর ধরে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলছেন। মাঝে খেই হারিয়ে খেলাটেলা ছেড়ে নটা-পাঁচটা চাকরিও শুরু করে দিয়েছিলেন। রাব্বির জন্য জাতীয় দল নিশ্চিতভাবেই ছিল দূরের আকাশ। সেই অধরা স্বপ্ন হঠাৎ বাস্তব হলে রোমাঞ্চে ভাসারই কথা। জাতীয় দলের ক্যাম্পে রাব্বির প্রথম দিনটা কেটেছে তেমনই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দলে থাকা ৩০ বছর বয়সী রাব্বি আছেন অভিষেকের অপেক্ষায়। এই সিরিজে তার দায়িত্বটাও বেশ বড়সড়ো। চোটের কারণে দলের মূল ভরসা সাকিব আল হাসান না থাকায় তাকেই নির্বাচকরা ভেবেছেন বিকল্প। ব্যাট হাতেই যদিও তার নামডাক। কিন্তু বাঁহাতে স্পিনটাও করতে পারেন। গুরু দায়িত্ব পড়েছে তাই তার কাধেই। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শুরুতেই এমন ভার নাকি টেরই পাচ্ছেন না এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, ‘না আমার কাছে ওইরকম মনে হচ্ছে না। এই যে আপনাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে, আমি উপভোগ করছি এইসব।’

অনুশীলনে চাপহীন, ফুরফুরে আছেন। কথাবার্তায় চনমনে ভাব, ব্যাট-বল হাতে মাঠে নেমেও কি এই ভাব রাখা যাবে? রাব্বি এই উত্তর রেখে দিলেন আগামীর কাছে, ‘আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। দেখি না কি হয় (হাসি)। আমি তো এখনও খেলি নি। খেললে বুঝা যাবে আমি কতোটা চাপহীন ক্রিকেট খেলতে পারব।’ এর আগেও বাংলাদেশ দলের প্রাথমিক স্কোয়াডে ছিলেন তিনি। চূড়ান্ত দলে এবারই প্রথম। শুরুর অভিজ্ঞতা তার কাছে বেশ আনন্দের, ‘একদম ভাল, সবাই সবার কাজ নিয়ে খুব চিন্তা করে। কার কি দায়িত্ব, সেটা সবাই খুব ভাল জানে। আমি দেখছি, শেখার চেষ্টা করছি। তারা এক একজন কতোটা সিরিয়াস, এটা আমাকে খুবই অনুপ্রাণিত করছে।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কঠিন জমিনে রাব্বির শুরুর পরিস্থিতিটা অনুকূলেই বলা চলে। ঘরের মাঠ, চেনা পরিবেশে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাচ্ছেন জিম্বাবুয়েকে। এই কন্ডিশনে নামেভারে যারা ঠিক বাংলাদেশের সঙ্গে তাল মেলানোর মতো নয়। তবু প্রতিপক্ষকে হালকা করে রাব্বি এক্ষেত্রেও চাপটা নিজের কাঁধে নিতে চাইলেন না, ‘আমার একদমই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা নেই। আমি জানি না জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া বা অন্য কোন দলের সঙ্গে খেলা কেমন। আমি আমার মতই খেলব, যদি সুযোগ পাই। আমি কার সঙ্গে খেলছি এটা বড় না। কি খেলছি এটাই বড়।’

৩০ বছর বয়সে জাতীয় দলে এসেছেন। দুদিন আগে নির্বাচক হাবিবুল বাশার রাব্বির ফিটনেসের প্রশংসা করেছেন। জাতীয় দলের বাইরে থাকা খেলোয়াড়দের উন্নত সুযোগ-সুবিধা পাওয়া কঠিন বলে ফিটনেস নিয়ে কাজ করাও কঠিন। রাব্বি তবুও ফিটনেস ঠিক রেখেছেন, সেটির রহস্য বললেন গতকাল, ‘এবারের প্রিমিয়ার লিগ বেশ ভালো গেছে আমার। আমার মনে হয়েছে ফিটনেসটা যদি আরেকটু ভালো থাকত, তাহলে আমার রান ৭০০ থেকে ৮০০-৮৫০ রান হতে পারত। তখন আমার মাথায় আসছে, যে করেই হোক নিজের ফিটনেসে উন্নতি করতে হবে। আমার সৌভাগ্য, তখন আমাকে বাংলাদেশ “এ” দলে ডাকা হয়েছিল। সেখানে দুই আড়াই মাসের মতো একটা ফিটনেস ক্যাম্প হয়েছে। ওই ক্যাম্পটা আমার খুব কাজে এসেছে। খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছি। ওজন কমিয়েছি। বয়স নিয়ে যে কথাটা হচ্ছে, এসব নিয়ে ভাবি না। যদি ফিট থাকি আর আমার পারফরম্যান্স যদি ভালো থাকে, তাহলে বয়স কোনো বিষয় না।’

চিন্তা করেন না বলেই রাব্বিকে ভীষণ আত্মবিশ্বাসী মনে হলো। প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের প্রতিনিধি হয়ে কথা বলতে এসেছেন সংবাদমাধ্যমের সামনে অথচ কোনো জড়তা নেই। ড্রেসিংরুমের পরিবেশ, কোচের সঙ্গে কাজ করা কিংবা প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে- কিছুই তাকে আলাদাভাবে আলোড়িত করছে না। বরং উপভোগ করছেন সব। রাব্বি এভাবেই উপভোগ করতে চান জিম্বাবুয়ে সিরিজটাও।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ