Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘আমরা হৃদয় দিয়ে খেলেছি’

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

গতকাল বিকেলেই সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দেশের বিমানে চড়ে বসে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বিমানবন্দরের প্রবেশমুখে ভক্ত-সমর্থকদের সেলফি-অটোগ্রাফের আবদার মেটাতে হয়েছে মাহদুমউল্লাহ-মুশফিক-মিরাজদের। কিন্তু সেলফি তুলতে মুখে যে জিনিসটা ‘আবশ্যক’ সেই হাসিটাই নেই। রোমাঞ্চের শেষ বিন্দুতে গিয়ে শেষ চার আসরে তৃতীয়বারের মত পরাজয় বরণ করার শোক কি এত সহজেই ভুলে থাকা যায়।

২২২ রানের পুঁজি নিয়েও বিক্রমশালী ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপের সামনে শেষ বল পর্যন্ত লড়ে যাওয়াও তো এক ধরণের প্রাপ্তি। পরাজয়ের পরও তাই ক্রিকেটপ্রেমীদের মন জয় করে নিয়েছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে বড় কথা জয়ের জন্য শেষ বিন্দু দিয়ে যে লড়াইটা করতে হয় সেটাই করেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। এজন্য সতীর্থদের উপর খুশী বাংলাদেশ দলপতি মাশরাফিও। ম্যাচ সেই কথাই শুনিয়েছেন বাংলাদেশ দলের প্রাণভোমরা, ‘আমরা হৃদয় দিয়ে লড়াই করেছি। ম্যাচ জয়ের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুভার্গ্য, আমরা জিততে পারিনি।’

লড়াইয়ের এই মানষিকতায় মুগ্ধ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও। দেশের ফেরার আগে দুবাই বিমানবন্দরে এমনটাই বলেছেন তিনি, ‘এটাই ক্রিকেট। তারপরও মাত্র ২২২ রানের পুঁজি নিয়ে যেভাবে লড়াইটা হয়েছে এবং একটা ফাইনালে এর চেয়ে বেশি মজাদার ফাইনাল তো আর হতে পারে না। যারা ক্রিকেট দেখে তারা বুঝে।’

ম্যাচের সময় ভিভিআইপি গ্যালারীর আবহের কথাও তুলে ধরেন পাপন, ‘আমাদের সাথে সবাই বসে ছিল। ভারতীয় দর্শকরা ছিল, ওদের বোর্ডের কর্মকর্তারা ছিল, আমরা ছিলাম, কেউ কিন্তু একটা সময়ও নিশ্বাস ফেলার সময় পাচ্ছিল না। কি হবে কেউ বুঝতে পারছিল না। তবে আমাদের জন্য সবচেয়ে আশ্চর্য ব্যাপারটা হচ্ছে যে, বারবার ভারতের সাথেই কেন জানি শেষ মুহূর্তে গিয়ে আমরা হেরে যাচ্ছি, শেষ ওভার, শেষ বল। তবে ভালো খেলেছে এটা তো অস্বীকার করার উপায় নাই।’

বিশেষ করে ভারতের বিপক্ষে হারটা মানতেই কষ্ঠ হচ্ছে। এমন লড়াই হৃদয় থেকে এসেছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ দলপতি মাশরাফি, ‘হ্যাঁ, আমাদের হৃদয় দিয়ে খেলেছি। আমরা একদম শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করার চেষ্টা করেছি।’ তবে ম্যাচের ভুলগুলো কিন্তু ঠিকই ধরা পড়েছে তার অভিজ্ঞ চোখে, ‘আমরা ব্যাটিং-বোলিং, উভয়দিকেই ভুল করেছি। আপনি যদি আমাদের বোলিংয়ের দিকে তাকান দেখবেন আগের ম্যাচগুলোতে আমরা ২৪০ এর বেশি রান করে জিততে পেরেছি। ফাইনাল ম্যাচেও ব্যাটসম্যানদের কাছে এটাই চাওয়া ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত অনেক ভালো করেছে বোলাররা।’

শেষ ওভারে মুস্তাফিজকে দিয়ে কেন করানো হলো না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বোলারদের সাথে বারবার কথা বলেছি। তাদের ভালো করতে উৎসাহ দিয়েছি। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা মাঝপথে বড় শট খেলার চেষ্টা করছিলো। তাই আমি পেসারদের দিয়ে তাদের রান আটকানোর চেষ্টা করছিলাম। মুস্তাফিজকে দিয়ে ৪৯তম ওভার করানোর কারন হলো, তাদেরকে চাপে ফেলা। ঐ সময় স্পিনারদের আক্রমনে আনতে চাইনি।’ দলের ব্যাপারে কথা বলার পাশাপাশি ভারতের প্রশংসা করেছেন নড়াইল এক্সপ্রেস, ‘ভারত পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলে জিতেছে।’
এই হার থেকে শিক্ষা নিয়েই দলকে নিতে চান মাশরাফি, ‘হ্যাঁ, ছেলেরা যেভাবে খেলেছে গর্ব করাই যাই। তবে আমাদের আরও অনেক কিছু শিখতে হবে। এই ধরনের টুর্নামেন্টে আমাদের এখনও লড়াই করতে হচ্ছে। টুর্নামেন্ট জুড়ে ব্যাটিং ততটা ভালো হয়নি। আজ এত ভালো শুরুর পর আরও বড় স্কোর গড়া উচিত ছিল। বোলাররা প্রায় সব ম্যাচেই ভালো করেছে। আজও চেষ্টা করেছে। অবশ্যই গর্ব আছে। তবে এখান থেকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে আমাদের।’

‘সেমিফাইনাল’ ও ফাইনাল ম্যাচে দলের অন্যতম প্রধাণ দুই ভরসা সাকিব ও তামিমের অনুপস্তিতি যে দল বুঝতে দেয়নি এর কৃতিত্ত¡ও সতীর্থদের নিয়ে বলেন, ‘সাকিব ও তামিমকে না পাওয়া ছিল অবশ্যই বড় ধাক্কা। ওদেরকে ছাড়াও দল যেভাবে খেলেছে, তাতে ছেলেদের কৃতিত্ব দিতেই হবে। তবে যেটা বললাম, আরেকটু ভালো খেললে আরও ভালো হতে পারত।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ