Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সবকিছু ছাপিয়ে লিটনের আউট

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

গতকাল ফাইনালে বাংলাদেশের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা হয়ত নিশ্চয় জেনে গেছেন। তবে ম্যাচের ফলকে ছাপিয়ে আরো একটা বিষয় আলোচনায় আসতে বাধ্য-লিটন দাসের আউট। টিভি আম্পায়েরর দেয়া সিদ্ধান্তের পর থেকেই লক্ষ-কোটি টাইগার ক্রিকেট প্রেমীদের মনে একটি কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে- আসলেই কি এটা আউট ছিল?
প্রভাবশালী ভারতের বিপক্ষে যখনই সুবিধাজনক অবস্থানে তখনই আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বলি হয়েছে বাংলাদেশ। যার সর্বশেষ সংযোজন এই লিটনের আউট। মেলবোর্নে অনুষ্ঠেয় গত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে এই ভারতের বিপক্ষেই এক ম্যাচে দুই বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বলি হয় বাংলাদেশ। প্রথমে রুবেল হোসেনের বলে রোহিত শর্মার সেই ক্যাচ আউট, যে বলকে ‘নো’ ঘোষণা করেন আম্পায়ার আলিম দার। একই ম্যাচে ঘটে বাউন্ডারি লাইন থেকে শেখর ধাওয়ানের নেয়া মাহমুদউল্লাহর সেই ক্যাচ নেয়ার ঘটনাও। দুটি ঘটনায় যায় বাংলাদেশের বিপক্ষে। আম্পায়ারের এই বিতর্কিত সিদ্ধান্তের জল গড়ায় অনেক দূর। পুরো বাংলাদেশ তো ক্ষোভে ফেটে পড়েই একই সঙ্গে এই ঘটনার জের ধরে আইসিসির প্রেসিডেন্টের পদ থেকে তখন সরে দাঁড়ান আ.হ.ম মুস্তফা কামাল। সেই ভারতের বিপক্ষেই আবার বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বলি হলেন লিটন।
অথচ দুর্দান্ত শুরুর পর হঠাৎ যখন বাংলাদেশ পথহারা তখন এই লিটনের ব্যাটেই বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। ঘটনাটা দলীয় ৪১ ও কুলদীপ জাদবের করা শেষ ওভারের শেষ বলের। ডান হাতি স্পিনারের গুগলি পড়তে না পেরে লাইন মিস করেন লিটন। ক্রিজ ছেড়ে আসায় পিছন থেকে স্ট্যাম ভেঙে দেন এমএস ধোনি। ধোনির অঙ্গভঙ্গি বলছিল আউট হয়নি। কিন্তু অজি টিভি আম্পায়ার রোড টাকার অনেক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে আউট ঘোষণা করেন। অথচ রিপ্লেতে দেখা যায় সময় মতই ক্রিজে পৌঁছে গেছেন লিটন। ১১৭ বলে ১২টি চার ও ২ ছক্কায় ১২১ রান করে লিটন আউট হওয়ার পর বাংলাদেশ আর ৩২ রান যোগ করতে পারে। শেষ পর্যন্ত ৪৮.৩ ওভারে গুটিয়ে ভারতকে ২২৩ রানের লক্ষ্য দেয় মাশরাফি বাহিনী। অবশ্য লিটন ছাড়া এদিন আর কেউই নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। আট ব্যাটসম্যান দুই অঙ্ক ছুঁতে ব্যর্থ। ত্রিশের ইনিংস খেলেছেন মাত্র দুজন- মিরাজ ও সৌম্য।
আগের দিনই মাশরাফি ওপেনিংয়ে চমকের কথা বলেন। সেই চমক ছিলেন মিরাজ। লিটনের সঙ্গে ক্যারিয়ারে প্রথম ওপেন করতে নেমে ৫৯ বলে ৩২ করে মিরাজ যখন কেদার যাবদকে উইকেট বিলিয়ে আসেন বাংলাদেশের রাত তখন ১২০ এবং সেটা ২০ ওভারেই। ভারতের বিপক্ষে যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ।
এরপরই নামে ধস। ৩১ রানের মধ্যে মিরাজ ছাড়াও ফেরেন ইমরুল (২), মুশফিক (৫), মিঠুন (২) ও মাহমুদউল্লাহ। এর মধ্যে দুটি উইকেট নেন কেদার যাদব। একটি করে উইকেট নিয়েছেন চাহাল ও কুলদীপ। মিঠুন রানআউট। বিনা উইকেটে ১২০ থেকে ৫ উইকেটে ১৫১!
অপর প্রান্তে তখনও অবিচল লিটন। ৩৩ বলে করা ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফকে সেঞ্চুরিতে রূপ দেন ৮৭ বলে। ৫২ রানে তাঁর ক্যাচ ফেলেন যুজবেন্দ্র চাহাল। ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটিকে সেঞ্চুরিতে নিয়ে যাওয়া দ্বিতীয় বাংলাদেশি লিটন। টুর্নামেন্ট ফাইনালে সেঞ্চুুরি করা প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানও তিনি।
তার ব্যাটে শুরুটা ছিল স্বপ্নের। ১১ ইনিংস পর উদ্বোধনী জুটিতে ৫০ পেরোয় বাংলাদেশ। ২৬ ইনিংস পর ১০০। সর্বশেষ ২০১৬ সালে শতরানের উদ্বোধনী জুটি হয়েছিল। বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডেতে এটি ১৬তম শতরানের জুটি। এতে হয়ত বাংলাদেশ একটু বেশিই আত্মতুষ্টিতে ভুগে থাকবে। রোহিত শর্মার দল যখন দিশেহারা ঠিক তখনই বাজে শটে আউট হন মিরাজ। আত্মহত্যার সেই মিছিলে ছিলেন দলের দুই প্রধান ভরসা মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহও। এর মাঝে রান অউট হন মিথুন। শেষ দিকে আরো দুটি রান আউট ইনিংসকে লম্বা হতে দেয়নি।
শক্তিশালী ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপের সামনে প্রথমবারের মত কোন আন্তর্জাতিজ শিরোপার জন্য মুস্তাফিজদের ভালো কিছুই করতে হত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ