নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে হারের পর দৃড়কন্ঠে একটি কথা বলেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা- ফাইনালের রাস্তা এখনো বন্ধ হয়ে যায়নি। বন্ধুর সেই রাস্তা পেরিয়েই এশিয়া কাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে মাশরাফির বাংলাদেশ। প্রথমে আফগানিস্তানকে এরপর গতকাল পাকিস্তানকে ৩৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে। আগামীকাল অনুষ্ঠেয় ফাইনালের সেই মঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। সেই ভারত, যাদের কাছে হেরে গতবার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের।
আবুধাবির শেখ আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় গতকালের ম্যাচের দিকে ফিরে তাকালে প্রথমেই ভেসে উঠবে মুস্তাফিজ-মিরাজদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের চিত্র। বিষেশ করে মুস্তাফিজ। শুরু আর শেষে তান্ডব জালিয়েছেন কাটার মাস্টার। আর মাঝে তার সঙ্গে অবদান রেখেছেন মিরাজ, রুবেল, মাহমুদউল্লাহ এমনকি সৌম্যও। মাশরাফি কাল উইকেট পাননি। তবে মিড উইকেট থেকে নেয়া তার অবিশ্বাস্য ক্যাচটিকে ম্যাচের প্রতীকি ছবি ধরে নিতে পারেন। মুস্তাফিজ-মিরাজের আঘাতে ১৮ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারালেও শোয়েব-ইমাম জুটি তখন রীতিমত উল্টো চোখ রাঙাচ্ছে। এমন সময় রুবেলের বলে টাইগার দলপতির ওই সুপারম্যানীয় ক্যাচ। দলপতির এমন ক্যাচে আরো উজ্জীবিত হয়ে ওঠে দল। অবশ্য বাংলাদেশের ফাইনালের পথে সবচেয়ে বড় বাধা ছিল ষষ্ঠ উইকেটে ইমাম-আসিফের ৭১ রানের জুটি। সত্যি বলতে ৯৪ রানে পাকিস্তান ৫ উইকেট হারানোর পর কখনো মনে হয়নি এই ম্যাচ বাংলাদেশ হারবে। আসিফকে স্টাম্পিংয়ের ধন্দে ফেলে বড় সেই জুটি ভাঙেন মিরাজ। পরের ওভারে সবচেয়ে বড় বাধা ওপেনার ইমাম-উল-হককে (৮৩) ফেরান মাহমুদউল্লাহ। বাকি সময়ে পাকদের গুটিয়ে যাওয়া ছিল সময়ের ব্যাপার। শেষ উইকেটে শাহেন শাহ আফ্রিদী ও জুনায়েদ খান বাংলাদেশের জয়কে কেবল বিলম্বিতই করেছেন।
বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের দিকে তাকালে চতুর্থ উইকেটে মুশফিক-মিথুনের সেই ১৪৪ রানের জুটি ভেসে উঠবে। যে জুটিই উপর দাঁড়িয়েই ২৩৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় বাংলাদেশ। জবাবে ২০২ রানে আটকে যায় পাকিস্তান।
সাকিবের পরিবর্তে কাল একাদশে সুযোগ পান মুমিনুল হক। কিন্তু এদিনও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তাকে ড্রেসিংরুমের রাস্তা দেখিয়ে যান ব্যর্থতার আবর্তে ঘুরতে থাকার পরও বিসিবির ‘আস্থাভাজন’ হয়ে আবার দলে ফেরা সৌম্য সরকার। একই রানে দাড়িয়ে লাইন মিস করে জুনায়েদের বলো অফ স্টাম হারান লিটন দাশ। স্কোরবোর্ড- ১২ রানে ৩ উইকেট! ঠিক শ্রীলঙ্কা ম্যাচের প্রতিচ্ছ¡বি।
এরপরই আসে মুশফিক-মিথুনের সেই ১৪৪ রানের জুটি। ঠিক শ্রীলঙ্কা ম্যাচের প্রতিচ্ছ¡বি। এদিনও ষাটোর্ধো ইনিংস খেলে গুড লেন্থের বলে একই শট খেলতে গিয়ে আকাশে বল তুলে আউট হন মিথুন (৬০)। সেদিনের মত কেবল মুশফিকের সেঞ্চুরিটাই হয়নি। মাত্র এক রানের আক্ষেপ নিয়েই দারুণ এক বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ‘দ্য ডিপেন্ডেবল’। এর আগে ১১৬ বলে ৯৯ রানের উনিংসটি সাজান ৯ চারে।
এরপর ইনিংসে ত্রিশোর্ধো রান নেই একটিও। ইমরুল কায়েস ফেরেন দ্রুতই। মেহেদি হাসান মিরাজকে (১২) নিয়ে মাহমুদউল্লাহর (২৫) চেষ্টাটাও বেশিক্ষণ টেকেনি। শেষ দিকে ইনিংসের প্রথম ছক্কায় জড়ের আভাস দিয়েও মাশরাফি (১৪) ফিরলে ৭ বল বাকি থাকতে ২৩৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।
ম্যাচ শুরুর আগেই বাংলাদেশ শিবির থেকে ভেসে আসে দুঃসংবাদটি- একাদশে সাকিব নেই। ফাইনালেও খেলতে পারবেন না বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার। খেলবেন কি, গতকালই তো দেশের বিমান ধরেন সাকিব। ইচ্ছা ছিল সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ধরা, সেখানেই ডাক্তার দেখাবেন। এর আগেও নাকি সেই ডাক্তারকে দেখিয়েছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের টিকিট না পাওয়ায় ফিরছেনে দেশে। এখান থেকেই উড়াল দেবেন যুক্তরাষ্ট্রে। তামিম-সাকিবের কষ্ট হয়ত কিছুটা লাঘোব হবে বাংলাদেশের ফাইনালের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ৪৮.৫ ওভারে ২৩৯ (লিটন ৬, সৌম্য ০, মুমিনুল ৫, মুশফিক ৯৯, মিথুন ৬০, ইমরুল ৯, মাহমুদউল্লাহ ২৫, মিরাজ ১২, মাশরাফি ১৩, রুবেল ১, মুস্তাফিজ ০*; জুনায়েদ ৪/১৯, আফ্রিদী ২/৪৭, হাসান ২/৬০, নওয়াজ ০/৩৯, শোয়েব ০/১৪, শাদব ১/৫২)।
পাকিস্তান : ৫০ ওভারে ২০২/৯ (ফখর ১, ইমাম ৮৩, বাবর ১, সরফরাজ ১০, শোয়েব ৩০, শাদব ৪, আসিফ ৩১, নওয়াজ ৮, হাসান ৮, জুনায়েদ ৩*, আফ্রিদী ১৪*; মিরাজ ২/২৮, মুস্তাফিজ ৪/৪৩, মাশরাফি০/৩৩, রুবেল ১/৩৮, মাহমুদউল্লাহ ১/৩৮, সৌম্য ১/৫)।
ফল : বাংলাদেশ ৩৭ রানে জয়ী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।