Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অনন্য উচ্চতায় ক্রিকেটের মহানায়ক

রেজাউর রহমান সোহাগ | প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০১ এএম

১৯৯৬ সালের ২৫ এপ্রিল লাহোরে কিংবদন্তি ক্রিকেটার ও বিশ্বের অন্যতম সফল ও সেরা অধিনায়ক ইমরান খান যখন অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই নতুন দল তেহরিক-ই-ইনসাফ গঠনের মাধ্যমে রাজনীতিতে যোগদান করেন, তখন পাকিস্তানের কোটি কোটি ইমরানভক্ত তার এই নতুন সিদ্ধান্তে ছিলেন একেবারেই হতবাক ও বিস্মিত। স্বভাবতই ইমরান ভক্তদের মনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছিল, ছাত্রজীবনে এবং ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ইমরান খানের যে বিস্ময়কর সাফল্য রয়েছে; তা কি ইমরানের রাজনৈতিক জীবনে আসবে?

ইমরান ভক্তদের মনে এমন প্রশ্ন সৃষ্টি হওয়ার যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণও ছিল। এর প্রধান কারণ, পাকিস্তানের রাজনীতি ছিল সবসময়ই অত্যন্ত জটিল এবং কখানোই শতভাগ স্থিতিশীল অবস্থায় ছিল না। দ্ব›দ্ব-সঙ্ঘাত, অনিশ্চয়তা আর সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ ও হস্তক্ষেপ ছিল পাকিস্তানের রাজনীতির এক নিয়মিত বিষয়। এরকম একটি বিরূপ পরিস্থিতিতে রাজনীতিতে এসে এবং নতুন দল গঠন করে পাকিস্তানের রাজনীতিতে জায়গা করে নেয়া ও সফলতা অর্জনের বিষয়টি ছিল ক্রিকেটার ইমরান খানের জন্য তার জীবনের সবচেয়ে বড় এবং কঠিন চ্যালেঞ্জ। এই কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শুরুতে ইমরানের ছিল না তেমন শক্তিশালী সংগঠনও। কিন্তু এক অপ্রতিদ্ব›দ্বী ক্যারিশম্যাটিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে ইমরান খান তার অসাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলি ও ভিশন দিয়ে পাকিস্তানের জনগণের হৃদয় জয় করে দীর্ঘ ২২ বছরের চেষ্টার পর ক্রিকেটের মতো রাজনীতিতেও তার সর্বোচ্চ সাফল্যের মুকুট পরতে চলেছেন। সদ্য অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ এককভাবে সর্বোচ্চ আসন পাওয়ায় এখন তিনি সরকার গঠনের পথে।
ইমরান খানই যে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন এ বিষয়টি অনেকটাই নিশ্চিত। বাকি এখন কেবল আনুষ্ঠানিকতা। রাজনীতিতে এবং এবারের নির্বাচনে ইমরান খানের সবচেয়ে বড় সফলতা ও প্রাপ্তি হচ্ছে তিনি পাকিস্তানের শিক্ষিত তরুণ প্রজন্মকে প্রায় একচেটিয়াভাবে তার পক্ষে আনতে পেরেছেন। পরিবর্তনের প্রত্যাশায় অপেক্ষারত পাকিস্তানের তরুণ শিক্ষিত সমাজ ইমরান খানের অক্সর্ফোড বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্ল-প্রাপ্ত ছাত্রজীবনের স্মরণীয় কৃতিত্ব ও পাকিস্তানের ক্রিকেটকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার অসামান্য নেতৃত্ব এবং পাকিস্তানকে বদলে দেয়ার ভিশনারি রাজনৈতিক কমিটমেন্টগুলোতে দারুণভাবে আকৃষ্ট ও উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। পাকিস্তানের রাজনীতিতে পাকিস্তান মুসলিম লিগ ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির মতো দুটি জনপ্রিয় ও শক্তিশালী দলকে পরাজিত করে ইমরান খানের ক্ষমতার মসনদে আরোহণ করার পেছনে সবচেয়ে বড় ভ‚মিকা রেখেছে পাকিস্তানের তরুণ সমাজ এবং পাশাপাশি ইমরান খানের অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্বের গুণাবলি। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের একজন সেরা ও সফল অধিনায়ক থেকে পাকিস্তানের রাজনীতিতেও অনন্য উচ্চতায় এখন ক্রিকেটের এই মহানায়ক।
যে কোনো ক্ষেত্রেই নেতৃত্ব দেয়ার গুণ একটি মানুষের সাফল্য লাভের ব্যাপারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। এ ক্ষেত্রে ইমরান খান সবসময়ই এক অপ্রতিদ্ব›দ্বী অবস্থানে। নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে ইমরান খান সবসময়ই সফল। ১৯৮২ থেকে ৯২, টানা ১০ বছর তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে। ১৯৯২ সালে পাকিস্তান যখন ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়, সেটা সম্ভব হয়েছিল শুধু দলের অধিনায়ক হিসেবে ইমরান খানের অসাধারণ নেতৃত্বের কারণেই। এ কথাটি পরবর্তীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একাধিকার উল্লেখ করেছেন পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্য দুই কিংবদন্তি জাভেদ মিয়াঁদাদ ও ওয়াসিম আকরাম। একজন সফল ক্রিকেটার হিসেবে ইমরান খানের আকশচুম্বী জনপ্রিয়তা পাকিস্তান ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল সারা ক্রিকেট বিশ্বেও। এমনকি পাকিস্তানের চির রাজনৈতিক শত্রু ভারতেও ইমরান খান সমানভাবে জনপ্রিয় ছিলেন তার ক্রিকেট নৈপূণ্য, ব্যক্তিত্ব আর সুদর্শন চেহারার এক অপ্রতিদ্ব›দ্বী নায়ক হিসেবেই। ইংল্যান্ডে লেখাপড়া করা ও সেখানে থাকার কারণে ব্রিটিশ সমাজেও ইমরান খান ছিলেন একজন জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। ইমরান খানের আরেকটি বিরাট অর্জন হচ্ছে- বিশ্বের অনেক নামী-দামি, প্রভাবশালী ও বিভিন্ন রাজপবিরারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ববর্গের সঙ্গে তার দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত সম্পর্ক।
সবদিক মিলিয়েই যোগ্যতার মাপকাঠিতে ইমরান খানের সঙ্গে অন্য যে কারো তুলনা করাটা অত্যন্ত কঠিন। পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ইমরান খান জয়লাভ করায় পাকিস্তানের তরুণ জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি দারুণভাবে আনন্দিত ও উল্লসিত পাকিস্তানের লাখ লাখ ইমরান ভক্তও। ইতোমধ্যেই তারা স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে রাজপথে নেমে বিজয় উল্লাস করে প্রতিক্রিয়ায় ইমরানের প্রতি তাদের সমর্থন ও ভালোবাসা দেখিয়েছেন। পাকিস্তানের ক্রীড়া তারকারাও ইমরানের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন আন্তরিকভাবে। ইতোমধ্যেই পাকিস্তান ক্রিকেটের কিংবদন্তি জাভেদ মিয়াঁদাদ, ওয়াসিম আকরাম ও শহিদ আফ্রিদি ইমারানের বিজয়ে আনন্দিত হয়ে তাকে অভিনন্দন জানিয়ে তার নেতৃত্বে পাকিস্তান বদলে যাবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। জাভেদ মিয়াঁদাদ, ওয়াসিম আকরাম ও শহিদ আফ্রিদিদের মতো জনপ্রিয় ও বিশ্বনন্দিত ক্রিকেট তারকাদের সমর্থন ও সহযোগিতার বিষয়টি পাকিস্তানের রাজনীতিতে জনসমর্থনের ক্ষেত্রে দারুণভাবে প্রভাব ফেলে।
শুধু পাকিস্তানেই নয়, সারা পৃথিবীর ক্রীড়াঙ্গনে ও রাজনৈতিক মহলে এই মুহূর্তে অন্যতম আলোচিত বিষয় হচ্ছে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে ইমরান খানের জয়লাভ ও তার সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি। আর এ ক্ষেত্রে বিষয়টি অতিমাত্রায় আলোচিত হওয়ার একমাত্র কারণই হচ্ছে ব্যক্তিটি কিংবদন্তি ইমরান খান বলেই। এমনকি ইমরান খানের এই বিজয়ে ভারতের কিছু মিডিয়া যখন ইমরান খান আর পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে আঁতাতের বিষয়টি নিয়ে সমালোচনামূখর, ঠিক তখনি ইমরান খানকে অভিনন্দন জানিয়ে দারুণভাবে আলোচনায় এসেছেন ভারতীয় ক্রিকেটার কিংবদন্তি ও বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক কপিল দেব।
ইমরান খানের আরেকটি ঈর্ষণীয় যোগ্যতা ও দক্ষতা হচ্ছে, বলিষ্ঠভাবে এক ব্যতিক্রমী স্টাইলে মিডিয়ার যে কোনো কঠিন প্রশ্নের সরাসরি স্পষ্টভাবে জবাব দিতে পারা। আর এই অভিজ্ঞতা ইমরান অর্জন করেছেন তার সুদীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ারে সারা পৃথিবীর সেরা সেরা মিডিয়াকে মোকাবেলা করে। সম্প্রতি নির্বাচন পরবর্তী প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসকে ইমরান খান যখন একান্ত সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন তখন, নিউইয়র্ক টাইমসের ওই সাংবাদিক ইমরান খানের প্রতি প্রশ্ন রাখেন যে, ‘আপনার ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে এবারের নির্বাচনে আপনার জয়লাভের পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং আপনি দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন দোসর হিসেবে কাজ করছিলেন। এ ব্যাপারে আপনার সুস্পষ্ট বক্তব্য কি?’ ওই পশ্চিমা সাংবাদিকের এই কঠিন প্রশ্নে ইমরান খান সরাসরি তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে জবাব দিয়ে বলেন, ‘পাকিস্তানের আর্মি তো আমার দেশেরই আর্মি এবং তারা তো কেউ বিদেশ থেকে আসেনি। পাকিস্তান সেনাবাহিনী দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। দেশের স্বার্থে এবং জনগণের কল্যাণে আমাদের সেনাবাহিনী যদি কাউকে সমর্থন ও সহযোগিতা করে থাকে, তাহলে সেখানে দোষটা কোথায়? আসলে একটি মহল পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ইমেজ নষ্ট করার জন্য বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে যদিও তারা জানে এটা করে আর কোনো লাভ হবে না।’ ইমরান খানের মুখ থেকে কঠিন প্রশ্নের এমন জোরালো জবাব পাওয়ার পর এই বিষয় নিয়ে দ্বিতীয় আর কোনো প্রশ্ন আসেনি ওই সাংবাদিকের কাছ থেকে। এ ছাড়াও এখন পর্যন্ত মার্কিন এবং প্রভাবশালী পশ্চিমা মিডিয়াগুলো ইমরান খানের কোনো কঠোর সমালোচনা করেনি, বরং পাকিস্তানকে বদলে দেয়ার ক্ষেত্রে ইমরানের নতুন নেতৃত্বের ব্যপারে তারা দৃঢ়ভাবে আশাবাদই ব্যক্ত করে চলেছেন।
ইমরানের এই বিজয় পাকিস্তানের অর্থনীতিতেও ব্যাপক ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। ইতোমধ্যে মার্কিন ডলারের সাথে বিপরীতে পাকিস্তানের মূদ্রার মান ছয় শতাংশ বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে চাঙ্গা হতে শুরু করেছে পাকিস্তানের পুঁজিবাজারও। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার আগেই পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান বন্ধুরাষ্ট্র চীন পাকিস্তানকে আর্থিক সহায়তা দিতে এগিয়ে এসেছে। ইতোমধ্যেই চীন দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার নতুন ঋণ দেয়ার কথা ঘোষণা করেছে পাকিস্তানকে; যা হবে ইমরানের নেতৃত্বে পাকিস্তানের নতুন সরকারের জন্য অনেক বড় একটি সহায়ক শক্তি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের ক্রীড়ামোদিরাও অত্যন্ত আনন্দিত ইমরান খানের এই নির্বাচনী বিজয়ে। বাংলাদেশের মানুষ ইমরানের এই বিজয়টিকে দেখছে সম্পূর্ণ ক্রীড়াসুলভ দৃষ্টি দিয়ে। বাংলাদেশ ক্রীড়ামোদিদের কাছেও ইমরান খান অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রচুর মানুষ পাকিস্তান দলকে সমর্থন করে থাকেন। উল্লেখ্য, ইমরান খানের নেতৃত্বে ১৯৯২ সালে পাকিস্তান ক্রিকেটে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আনন্দে উল্লসিত হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বাংলাদেশের ক্রীড়ামোদিরা আনন্দ মিছিল করেছিল। স্বভাবতই পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে ইমরান খান জয়লাভ করায় বাংলাদেশের ইমরান ভক্তরাও দারুণ খুশি। বাংলাদেশের রাজনীতি এবং ক্রীড়াঙ্গনেও বিষয়টি এখন অন্যতম আলোচিত। ক্রিকেটের মতো রাজনীতিতেও ইমরান খান সফল হবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন ইমরানভক্ত বাংলাদেশি ক্রীড়ামোদিরা।
১৯৮৬ সালে ইমরান খানের সঙ্গে আমার একটি স্মরণীয় স্মৃতির কথা অত্যন্ত গর্বিত চিত্তে এখানে প্রসঙ্গত উল্লেখ করছি। ওই সময় ইমরান খানের নেতৃত্বে পাকিস্তান ছিল পৃথিবীর অন্যতম সেরা ক্রিকেট দল। ইমরানের সাথে তখন দলে ছিলেন সরফরাজ নেওয়াজ, জাভেদ মিয়াঁদাদ, আবদুল কাদির, মহসিন খান, তৌসিফ আহমেদ, ওয়াসিম বারি, মুদাসসর নজর, ওয়াসিম রাজা, সেলিম মালিক, সোয়েব মোহাম্মদ, রমিজ রাজা, ওয়াসিম অকরাম, সিকান্দার বখত প্রমুখ বিশ্বখ্যাত ক্রিকেট তারকারা। পৃথিবীর অন্যতম ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার পাকিস্তানের ওমর কোরেশীর সম্মানে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাথে একটি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলার জন্য ১৯৮৬ সালে ইমরান খানের নেতৃত্বে পাকিস্তান ক্রিকেট দল ঢাকায় এসেছিল। সেই দলের ম্যানেজারও ছিলেন ওমর কোরেশী। বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে ওই ম্যাচে পাকিস্তান অংশ নিয়েছিল ওমর কোরেশী একাদশ নামে। কলেজ ছাত্রাবস্থায় আমি তখন পাক্ষিক তারকালোক পত্রিকায় শিক্ষানবীশ ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত। ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ওই ক্রিকেট ম্যাচ কাভার করার জন্য অ্যাক্রেডিটেশন কার্ডও পেলাম। স্টেডিয়ামের ভিআইপি গ্যালারিতে বসে ইমরান খানসহ পাকিস্তানের সব বিশ্বখ্যাত ক্রিকেট তারকাকে একেবারে পাশে বসেই নিজের চোখে দেখলাম। নিজের চোখকেই তখন বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। খেলাটি ছিল তিন দিনের। প্রথম দিনের খেলার ফাঁকেই আমি পাকিস্তান দলের সহকারী ম্যানেজার সিদ্দিক আহমেদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে তার কাছে ইমরান খানের একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণের ইচ্ছা ব্যক্ত করলাম। তিনিও আমাকে পরের দিন খেলার পর হোটেলে (সোনারগাঁও) যোগাযোগ করতে বললেন। যথারীতি পরের দিন আমি খেলার পর সন্ধ্যা থেকে দীর্ঘক্ষণ হোটেল লবিতে অপেক্ষা করার পর রাত ৯টায় সহকারী ম্যানেজার সিদ্দিক আহমেদ আমাকে সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন ইমরান খানের রুমে এবং ইমরান খান ১৫ মিনিট সময় দিয়েছিলেন আমাকে তার সাক্ষাৎকারটি নেয়ার জন্য। ইমরান খানের ওই সাক্ষাৎকারটি পাক্ষিক তারকালোকের পরবর্তী সংখ্যায় প্রচ্ছদ আকারে ছাপা হয়েছিল আমার সাক্ষাৎকার গ্রহণের ছবিসহ। ইমরান খানের নেয়া ওই সাক্ষাৎকারটি এখনো আমার কাছে আমার এই সুদীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনের অন্যতম সেরা কৃতিত্ব ও স্মরণীয় স্মৃতি হিসেবে জায়গা করে আছে।

কাজী সালাউদ্দিনের প্রতিক্রিয়া
ইমরান খান পাকস্তানের জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করায় এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলাম বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, কিংবদন্তি ফুটবলার ও ক্রিকেটার এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট কাজী সালাউদ্দিনের কাছে। সালাউদ্দিন ইমরান খানের ভ‚য়সী প্রসংশা করে এ ব্যপারে তার প্রতিক্রিয়ায় দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ইমরান খান ক্রিকেটের মতো রাজনীতিতেও সফল হবেন। কারণ ইমরান খানের রয়েছে জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই দারুণ অভিজ্ঞতা। ইমরানের সবচেয়ে বড় অ্যাডভান্টেজ হচ্ছে- সে অক্সফোর্ড গ্র্যাজুয়েট। যে কোনো মানুষের জীবনে যা এক অনন্য যোগ্যতা। এ ছাড়াও পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্যায়ে ক্রিকেট খেলে ইমরান সারা পৃথিবীকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। যে কারণে ভালো-মন্দের বিচার করাটা তার অভিজ্ঞতায় খুবই সহজ। পাশাপাশি ইমরান খানের রয়েছে অসাধারণ নেতৃত্ব দেয়ার কোয়ালিটি। ইমরান খান শুধু একজন ক্রিকেট সুপারস্টারই নন, হি ইজ এ গ্রেট ভিশনারি পার্সোনালিটি। ইমরানের মতো ব্যক্তিত্বরা শতবছরে একবারই জন্মায়। ইমরান খানের সাথে আমারও রয়েছে ব্যক্তিগত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। লন্ডনে তার বাসায় ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাদের একাধিকবার দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ইমরান খান যদি সম্পূর্ণ তার নিজস্ব চিন্তা-চেতনা দিয়ে স্বাধীনভাবে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দিতে পারেন তাহলে পাকিস্তান অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে ইমরান যদি সবাইকে খুশি করার জন্য অন্যদের পরামর্শ বেশি গ্রহণ করতে যায়, তাহলে তার জন্য সমস্যাও হতে পারে। তবে আমি ইমরানকে যতটা চিনি তাতে মনে হয় না ইমরান এই ভুল করে তার ব্যক্তিত্বের সাথে সঙ্ঘাতে জড়াবে। আমি রাজনীতিতে ইমরানের সাফল্য কামনা করছি।’



 

Show all comments
  • Rahman Sadman ২ আগস্ট, ২০১৮, ৩:০৫ এএম says : 0
    ইমরান খান একজন দেশ প্রেমিকই নন শুধু তিনি একজন কৌশলী রাজনীতি বিদ ও। ক্রিকেটের পরিসরে হলেও তার পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • কবিতা ২ আগস্ট, ২০১৮, ৩:০৬ এএম says : 0
    আশা করা যায় ইমরান খান রাজনৈতিক অঙ্গনে একের পর এক সেঞ্চুরি করে পাকিস্তানকে উন্নয়নের মহাসাগরে ভাসাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Shahin Hasan ২ আগস্ট, ২০১৮, ৩:০৭ এএম says : 0
    তার নেতৃত্বে পাকিস্তান ক্রিকেট টিম জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। তিনি পাকিস্তান রাষ্ট্রকে একটি ভাল ইমেজ এনে দেবেন এ প্রত্যাশায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Chan Mia Hosen ২ আগস্ট, ২০১৮, ৩:০৯ এএম says : 0
    ওয়েলকাম,ইমরান খান।
    Total Reply(0) Reply
  • Samira Binte Hossain ২ আগস্ট, ২০১৮, ৩:১২ এএম says : 0
    আশা করি ইমরান খান একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হবেন এবং সকল দেশের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখবেন।
    Total Reply(0) Reply
  • nurrasel ২৫ আগস্ট, ২০১৮, ৪:৫৭ পিএম says : 0
    আমি নুতুন সদস্য
    Total Reply(0) Reply
  • nurrasel ২৫ আগস্ট, ২০১৮, ৪:৫৯ পিএম says : 0
    good
    Total Reply(0) Reply
  • nurrasel ২৫ আগস্ট, ২০১৮, ৫:০৫ পিএম says : 0
    আমি আপনাদের নতুন বন্ধু
    Total Reply(0) Reply
  • nur ২৫ আগস্ট, ২০১৮, ৫:৩০ পিএম says : 0
    yesq
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্রিকেট


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ