Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কলেজছাত্রকে হত্যা খন্ডিত লাশ মেঘনায় ফেলে খুনী মহিলা

অপহরণের ১১ দিন পর আদালতে স্বীকারোক্তি

| প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : নরসিংদীতে রাবু নামে এক ব্যবাসায়ী মহিলার হাতে বীভৎসভাবে খুন হয়েছে নরসিংদী সরকারী কলেজের ছাত্র মাহফুজ সরকার। রাবেয়া ইসলাম রাবু নামে এই মহিলা ও তার ভাগিনা রাজু, মাহফুজকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ৬/৭ টুকরা করে ট্রলি ব্যাগে ভর্তি করে মেঘনার পানিতে ফেলে দিয়েছে। নিখোঁজের ১১ দিন পর গত মঙ্গলবার রাবেয়া আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দীতে এই বীভৎস খুনের কথা স্বীকার করেছে। রাবেয়ার স্বীকারোক্তির পথ ধরে নরসিংদী থানা পুলিশ মাহফুজকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি ও তার ব্যবহৃত কাপড় চোপড় উদ্ধার করেছে।   
নিহত মাহফুজের বড় ভাই এড. মোস্তফা সরকার রাসেল জানিয়েছেন, নিহত মাহফুজ সরকার নরসিংদী সরকারী কলেজের বি.এ দ্বিতীয় বর্ষের নিয়মিত ছাত্র। গত ২৬ মে শুক্রবার বিকেলে মাহফুজ বাড়ী থেকে প্রতিদিনের মত বেরিয়ে যায়। এরপর সেদিন রাতে আর সে বাড়ী ফিরেনি। তার পিতা আ: মান্নান সরকার ও বড় ভাই রাসেলসহ অন্যান্য আত্মীয়রা তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে না পেয়ে ২৭ মে নরসিংদী সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে। পরদিন মাহফুজের মোবাইল থেকে একটি কল আসে তার বড় ভাই এড. রাসেলের মোবাইল ফোনে। এই ফোন নাম্বার থেকে রাসেলকে জানানো হয় যে, মাহফুজ বর্তমানে তাদের হেফাজতে রয়েছে। এই নাম্বার থেকে এটাই তাদের শেষ কল। পরে অন্য নাম্বার থেকে কল দেয়া হবে। মাহফুজকে ফিরে পেতে হলে তাদেরকে ১ লাখ টাকা মুক্তিপন দিতে হবে। নতুবা তাকে হত্যা করা হবে। এ কথা বলে রাসেলকে ৪টি বিকাশ ও ৩টি রকেট নাম্বার দেয়। এরপর রাসেল ও তার পিতা আ: মান্নান সরকার অনন্যোপায় হয়ে মাহফুজকে বাঁচানোর জন্য ৩টি রকেট নাম্বারে ১ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে।
সোমবার রাতে পুলিশ তাকে নরসিংদী পুলিশ অফিসে নিয়ে পুলিশ সুপার আমেনা বেগমের সামনে উপস্থাপন করে। পুলিশ সুপার আমেনা বেগম তার সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বার্তা বলার পর তার মনে সন্দেহ আরো ঘনীভূত হয়। এক পর্যায়ে তিনি তাকে গভীরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে মাহফুজকে খুনের কথা স্বীকার করে। পরে গত মঙ্গলবার পুলিশ তাকে নরসিংদীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফেরদৌস ওয়াহিদের নিকট ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। এতে সে স্বীকার করে যে, ২৬ মে রাতে বাড়ী থেকে বের হবার পর সে মাহফুজকে ডেকে তার বাড়ীতে নেয়। সেখানে ঘরে ঢোকার সাথে সাথেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রাবু তাকে জড়িয়ে ধরে। এসময় তার রাবুর ভাগিনা শাহাদাৎ হোসেন রাজু তাকে পিছনদিক থেকে এলোপাতারি ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। তার মৃত্যু নিশ্চিত হবার পর রাবু ও তার ভাগিনা শাহাদাৎ হোসেন রাজু মিলে তার লাশ ৬/৭টি খন্ডে খন্ডিত করে ঘরে থাকা ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখে। পর দিন ফ্রিজ থেকে খন্ডিত দেহটি একটি ট্রলি ব্যাগে ঢুকিয়ে নৌকা ঘাটে গিয়ে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে ট্রলিব্যাগে ভর্তি লাশটি নিয়ে পাশ্ববর্তী বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মরিচাকান্দী এলাকায় মেঘনা নদীর গভীর পানিতে ফেলে দেয়। স্বীকারোক্তির পর পুলিশ মাহফুজকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি ও মাহফুজের গায়ে থাকা কাপড় চোপড় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে পুলিশ এখনো লাশের তল্লাশী অভিযান শুরু করেনি।  
এব্যাপারে নরসিংদী সদর মডেল থানার ওসি গোলাম মোস্তফা সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল শনাক্ত করার পর ডুবুরী দল নিয়ে তল্লাশী চালানো হবে।



 

Show all comments
  • লাবনী ৮ জুন, ২০১৭, ১২:১৬ পিএম says : 0
    ওই মহিলার কঠোর শাস্তি দাবি করছি
    Total Reply(0) Reply
  • Mahedi Hasan ৮ জুন, ২০১৭, ১২:৩৬ পিএম says : 0
    মানুষ এত অমানুষ হয় কিভাবে ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুন

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ