শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
সেই সময় সেই তোমাদের
মনিরুজ্জামান
সেই সময় সেই তোমাদের মনে পড়ে যায়
বার বার অসংখ্য বার রৌদ্রের মত মনে পড়ে যায়
বায়ান্নর সেই স্বপ্নঘন দিনে সূর্যের প্রগাঢ় উষ্ণতায়
তোমরাই তো এক যমুনা রক্ত দিয়ে সেদিন বাঁচিয়েছিলে
আমার কবিতা লেখার সঞ্চয়
সেদিনের মত সূর্য এত লোহিত কখনো দেখেনি বাঙালি
কিশোরীর কালো চোখ লাল হয়েছিল
তোমাদের রক্তের আগুনে
তোমাদের মৃত্যুতে আমরা মৃত্যুকে শিখেছি
দেখেছি মৃত্যুর পরাজয়
তাই আজও এদেশে মিছিল হয় অবিরাম
হাজার হাজার সেøাগানে পদ্মা, মেঘনা, যমুনায়।
আমার একুশ
শাহীন খান
আমার একুশ সে তো বিজয়ের গান
রাখালিয়া মধু বাঁশি, হাসি, কলতান
পাখিদের বাসা সে তো ফুল সুরভি
দখিনা বাতাস আর সুর পূরবি।
আমার একুশ বড় বেদনাগাথা
দ্রোহী কবি, কবিতা, উঁচু গো মাথা
জোছনাতে ভরপুর তার পৃথিবী
শিল্পীর আঁকা সে তো মায়াবি ছবি।
আমার একুশ সে তো ঝাঁঝালো মিছিল
দূরাকাশে হেসে ওঠা তারা ঝিলমিল
সেøাগানে মুখরিত কোনো রাজপথ
তাকে ঘিরে চাওয়া পাওয়া যতো মতামত।
আমার একুশ সে তো দুনিয়াজুড়ে
বুক ঘেঁষে থাকে সে তো থাকে না দূরে
বড্ড আদর মাখা আমারই সে বোন
বলাকার নীড়ে ফেরা গোধূলি লগন।
আমার একুশ সে তো রফিক শফিক
দুখ দুখ চিৎকার শুধু চারদিক
কুসুমে ঘেরা সে তো মন অঙ্গন
ভুলে যাওয়া বন্ধুর ফিরে পাওয়া ফোন।
আমার একুশ সে তো আদুরিনী মা
কারো সাথে মেলে নাকো তার তুলনা
প্রাণের কায়া সে তো শ্যামলিমা দেশ
কোনদিনই হবে নাকো এর জানি শেষ।
দ্রোহ, আগুন, প্রতিবাদ
পঞ্চানন মল্লিক
নগরপৃষ্ঠে ভ্রমণের সময় আমরা যেন দানবের শাপগ্রস্ত হলাম
তারপর দেখি পয়স্তি ভূমিজুড়ে ঘুণেধরা মানুষের ক্রন্দন
অভিশাপের মালার সাথে ওরাও এনেছিল দ্রোহ, আগুন, প্রতিবাদ
আপন স্বজাতি তবু ভাষা হননে সম্মুখে তাক করা রাইফেল
স্বহস্তে আক্রান্ত মানচিত্রে দাঁড়াই
বিচূর্ণ পাঁজরের চাদরে জড়িয়ে রাখি প্রাণের ভাষার প্রাণ
উদ্ধত জল্লাদ ছুটে আসে ছিড়তে ধমণীর টান
আমরাও জল্লাদের মুখোমুখি হই
প্রাণের অস্তিত্ব, আবেগ, ভাষা, বুলেট একাকার হয়
নেচে ওঠে পুঞ্জিভূত ধমনী, শিরা-উপশিরায়
শহীদের রক্ত স্রোতে প্রাণ আসে বুকের হৃৎপি- ভাষায়
জতুগৃহে প্রতিদিন
আনোয়ারুল ইসলাম
ঝরা ফুলে ছেয়ে গেছে মায়া বনতল
হরিণীরা ভীরু পায়ে খুঁজে ফেরে তিথি
আকাশের চারিদিকে মেঘ-ছায়া দোলে
আঁচলে জড়িয়ে থাকে স্মৃতির বিলাপ।
প্রীতিডোরে বাঁধা ছিলো শতেক কাহন
বেহুদা কেটেছে ক্ষণ নীল দোলাচলে
চখাচখি মন্থনে ঢেলেছে গরল
ব্যথার কাঁটারা জাগে চেতনা বিভায়।
এই আছি এই নেই বেদনা কাতর
বুকের চাতালে জ্বলে দাউ দাউ শিখা
জলের ক্ষরণে বাজে কেতকী নূপুর
তাল লয় বোধহীন রজনী অপার।
মাধবী বিলাস বুঝি হৃদয়ের কথা
খুঁড়ে খুঁড়ে টেনে তোলে কোজাগরী রাতে
অমৃত বচন শেষে পিদিম যেমন
কালের কপোলে লেখে আশাহত গান।
কিছু ঋণ শোধ হয় কিছু থাকে বাকি
জীবনের জতুগৃহে সবকিছু ফাঁকি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।