শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
অর্ণব আশিক
আগমনী
জানালার ওধারে নীল আকাশ
ডানা মেলে উড়ে যায় ভোরের কাক ও শালিক
নিশ্চুপ শহর খুলছে চোখ কাঁচা হলুদ রোদে
শরতের নীল চিঠি উড়ে আসে ভবঘুরে মেঘে।
এই ভোরে আসো হেটে যাই জীবনের মোহর খুঁজে।
ভাদ্রের সকাল শরতের মেঘ শাড়ির আঁচল খুলছে ধীরে
সোনা রঙা কাচুলি ভাঁজে ভাঁজে কামিনির ঘ্রাণ
দূরের গির্জার ঘন্টা সময়ের হিসাব বলে
রাতজাগা বস্ত্র শ্রমিক চুমু খায় স্বামী-পুত্র রেখে অশ্রুগাথা রোদে।
শরত আসছে ধেয়ে বাইজির বেশে হিজলের রক্তাভ কোরকে।
ঠান্ডা হাওয়া ঝিরিঝিরি বৃষ্টির ফোটা আকাশের কোলে সরস্বতী মেঘ
কালো রাস্তার পাশে ঘুম জড়ানো বেহুলা ভিজছে দুঃখক্রমে
কালরাতে লেগেছে স্পর্শ মুহুর্ত অধরার
বোঝেনি সে দু› ঠোঁটে এত মধু এত এত নোনা এত বিষ স্পর্শের
অতল শরীরে লেগে আছে তার আগুনের তাপ
এখন সে জলেভেজা সরস্বতী বিসর্জনের পর।
মেঘ উড়ে যায় বৃষ্টি ঝরঝর
এভাবে জীবন শুরু এভাবে জীবন খোঁজে শরত নির্ভর
আসো শপথ নেই শরতের বৃষ্টিভেজা লিরিকে
আমাদের গভীরতা ভরে দেই ভোরের ডেরায়।
মোহাম্মদ মাসুদ
পবিত্র সকালের পবিত্র গল্প
একটা অসম প্রেমের
কাঁটা বিদ্ধ হতে পারে;
সকল শুদ্ধতায়।
সেখানে বলা হতে পারে-
নিজের ভেতরে জন্ম নেওয়া
হাজার বছরের শান্তিকথা।
প্রাণহীন বাকশক্তিতে
শরীরী-ভাষা প্রাণ পাবে;
সমস্ত হৃৎ-আঁচল জুড়ে, সমস্ত মহাকালে।
তোমার ওষ্ঠাধরে লেখা থাকবে
প্রতিটি পবিত্র সকালের পবিত্র গল্প।
মাহমুদ হায়াত
দুটো বৈদ্যুতিক তার
খুব কাছাকাছি ছিল.....
যতটা কাছাকছি থাকলে দুটো বৈদ্যুতিক তার সর্বনাশের খোলস ছেড়ে
আদিমোৎসবে মেতে ওঠে।
কেবল আকাশ ছোঁয়া হয়না আমার,
আকাশ ছোঁব বলে।
একটা অর্কিডদিন ছুঁয়ে গেলে আলস্য বিকেলের ঘুম,
নড়ে চড়ে বসে বুকের বেসুরো বাঁশি।
গোলাপ আমিন
গোলাপ-ভালোবাসা
আজ শুধুই দিচ্ছি পরিপূর্ণ গোলাপ-ভালোবাসা
গোলাপের পক্ষ থেকে গোলাপের শুভেচ্ছা,
হোক সেটা সাদা, টকটকে লাল অথবা কালো
বুকে বিঁধিয়ে নেবো যত যাবতীয় সূঁচালো কাঁটা।
অনাঘ্রাতা ফুলঘ্রাণ ছড়িয়ে দেবো নির্মল বাতাসে
বুক ভরে নিতে পারো প্রাণে ঘ্রাণসুদ্ধ নিঃশ্বাস।
নীরবে দিতে পারি বুকে পোষা এ অনঙ্গ সৌরভ
রূপ-রস-গন্ধ-সুধা অকাতরে বিলিয়ে দিতে পারি,
আমাকে কি রাখবে মনে ঝরে যাওয়ার পরও?
কেউবা হয়তো রাখবে মনে, কেউবা যাবে ভুলে
কাঁটার আঘাতে আহত আঙুলের চিনচিনে ব্যথা,
মুছে দিতে পারে না কেউ ক্ষুদ্র অতি ফুলের আঘাত।
মজনু মিয়া
বৈতরণী
মানব জনম একটা কূলে এসে স্থিতি পায়
সেই কূলটা এক সময় অকূল হয়ে যায়,
পার্থিব জীবনে চলাচলে কর্মের মাঝে
কূল হারিয়ে অকূলের পথে হাঁটে তখন
কূলের জন্য আবার খোঁজ করতে হয়।
মানুষের এই অকূল জীবনের অংশটাতে
মানুষ একটা বৈতরণীর সন্ধান করে,
যাতে সে আবার কূলে পৌছাতে পারে।
মানুষ জাগতিক এই বৈতরণী পার হতে
সব রকম চেষ্টা করে, আর তাতে কেউ সফল
হয় - কেউ বিফল হয়।
তবুও এই বৈতরণীর আশা করে মানুষ।
মৌ সাহা
শেষ প্রণয়
বিদায়ের বেলায় পথরোধ করবোনা,
জানাবোনা কোন অভিযোগ।
কিংবা প্রশ্নের বাণে জর্জরিত করবোনা তোমায়।
শুধু একটাই অনুরোধ যদি দিতেই হয়,
তবে দাও একগোছা লাল কাঁচের চুড়ি।
সযতনে তুলে রেখেদেবো;
যখন কাঁচের টুকরো ভেঙে,
রক্তাক্ত হবে পুরো হাত।
বুঝে নেবো পেয়েছি ভালোবাসার উপহার।
যখন কেউ শুধোবে আমায়,
এটা কিসের ক্ষতচিহ্ন,
তখন বলবো, এ আমার ভালোবাসার,
নানা রঙের ফুলে ভরা প্রতিদান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।