নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ম্যাচে না থেকেও প্রবলভাবে ছিল লিভারপুল। ম্যানচেস্টার সিটি পয়েন্ট হারালেই যে হবে তাদের ৩০ বছরের বেদনাদায়ক অপেক্ষার অবসান। হলোও তাই। পেপ গার্দিওলার দলকে হারিয়ে দিল চেলসি। শিরোপা উল্লাসে মেতে উঠল ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। গতপরশু রাতে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে লিগ ম্যাচে শেষ দিকে ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া সিটিকে ২-১ গোলে হারায় চেলসি।
আগের রাতে ঘরের মাঠে ক্রিস্টাল প্যালেসকে উড়িয়ে বিজয়ের মঞ্চ তৈরি করেই রেখেছিল লিভারপুল। অপেক্ষা ছিল কেবল দুটি পয়েন্টের। ম্যাচের শেষদিকে ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া ম্যান সিটিকে চেলসি হারিয়ে দেওয়ায় সেই প্রতীক্ষার ইতি ঘটল। শুরুতে চেলসিকে এগিয়ে দেন ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচ। সিটির হয়ে সমতায় ফেরানো গোলটি কেভিন ডি ব্উইনের। শেষ দিনে পেনাল্টি থেকে গোল করে অল ব্লুজদের জয় নিশ্চিত করেন উইলিয়ান, শিরোপা নিশ্চিত হয় অলরেডদের। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে সবশেষ লিগ জিতেছিল লিভারপুল। এবার শেষ হলো তাদের অপেক্ষা। ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগে ১৯তম এবং প্রিমিয়ার লিগে প্রথম শিরোপার স্বাদ পেল ১২৮ বছরের পুরনো ক্লাবটি।
সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (৭টি) হাতে রেখে ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগের শিরোপা জেতার রেকর্ড এটি। এর আগে চারবার ৫ ম্যাচ বাকি থাকতে শিরোপা জেতার কীর্তি আছে। সেই ১৯০৭-০৮ মৌসুমে প্রথম এই কৃতিত্ব দেখায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ২০০০-০১ মৌসুমে করে এর পুনরাবৃত্তি। মাঝে ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে ৫ ম্যাচ বাকি থাকতে লিগ শিরোপা জেতে এভারটন। ২০১৭-১৮ মৌসুমে তাদের পাশে বসে ম্যানচেস্টার সিটি।
দলটির সামনে সুযোগ আছে আরও তিনটি রেকর্ড গড়ার। প্রিমিয়ার লিগে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ সিটির ১০০ পয়েন্ট। ৩১ ম্যাচে ক্লপের দলের পয়েন্ট ৮৬। শেষ ৭ ম্যাচে ¯্রফে ১৫ পয়েন্ট চাই তাদের। সেই সঙ্গে প্রথম দল হিসেবে কোনো আসরে ঘরের মাঠে সব ম্যাচ জেতার হাতছানি লিভারপুলের সামনে। সঙ্গে সবচেয়ে বেশি ব্যবধান রেখে লিগ শেষ করার সুযোগ। ২০১৭-১৮ মৌসুমে ১৭ পয়েন্টের ব্যবধান রেখে লিগ শেষ করেছিল সিটি। গার্দিওলার দলই লিভারপুলের সবচেয়ে কাছে আছে। চেলসির বিপক্ষে ২-১ গোলে হারা সিটির পয়েন্ট ৬৩। এই মুহূর্তে ২৩ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছে মোহাম্মদ সালাহ-সাদিও মানেদের দল।
যার হাত ধরে ৩০ বছরের অপেক্ষার অবসান হলো লিভারপুলের, সেই ক্লপও গড়লেন ইতিহাস। প্রথম জার্মান কোচ হিসেবে ইংল্যান্ডের শীর্ষ ফুটবল লিগের ১৩১ বছরের ইতিহাসে শিরোপা জিতলেন তিনি। বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ছেড়ে ২০১৫ সালে লিভারপুলের দায়িত্ব নেন ক্লপ। গতবার দলকে জেতান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। এবার এলো প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা। এমন অর্জনে আত্মহারা ক্লপ খুঁজে পাচ্ছেন না অনুভ‚তি প্রকাশের ভাষা। চোখ থেকে আনন্দঅশ্রু হয়ে নেমে এলো যেন তার খুশির জোয়ার। ক্লপ ও লিভারপুলের খেলোয়াড়রা শিরোপা উদযাপন করেছেন হোটেলে বসে। স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অনুভ‚তি জানাতে গিয়ে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি ক্লপ। তবে আবেগের স্রোতের মধ্যেও ক্লাবের কিংবদন্তিদের কথা মনে পড়ল তার, ‘আমি অভিভূত, কখনই ভাবতে পারিনি, এটির অনুভূতি এরকম। কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। এটা অবিশ্বাস্য, যতটা সম্ভব ভেবেছিলাম, তার চেয়েও বেশি কিছু। এই ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে পারা সত্যিই অবিশ্বাস্য। এটা কেনির (ডালগ্লিশ) জন্য, স্টিভির (স্টিভেন জেরার্ড) জন্য, এটা সবার জন্য।’
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে হয়তো লিভারপুলের শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যেত অনেক আগেই। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে তিন মাস খেলা বন্ধ থাকায় বেড়েছে অপেক্ষা। এমনকি মৌসুম বাতিল হয়ে যাওয়ার শঙ্কাও জেগেছিল একটা সময়। সব অনিশ্চয়তা কাটিয়ে শিরোপা নিশ্চিত হওয়ায় লিভারপুল কোচের কণ্ঠে ছিল স্বস্তি, ‘এটা স্বস্তির, কারণ তিন মাসের বিরতির পর কেউ জানত না মৌসুম কীভাবে ফিরবে। এটা (শিরোপা) সব সমর্থকের জন্য। আশা করি, তারা এটা উদযাপন করবে। আমাদের হৃদয় ও মস্তিষ্ক দিয়ে আমরা সবকিছুই করি একসঙ্গে। সমর্থকদের জন্য এমন কিছু করতে পারা দারুণ আনন্দের।’
৩১ ম্যাচে ২৮ জয় ও দুই ড্রয়ে ৮৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে লিভারপুল। ২০ জয় ও তিন ড্রয়ে সিটির পয়েন্ট ৬৩। বাকি ম্যাচগুলোর প্রতিটিতে ক্লপের দল হারলে এবং সবকটিতে ম্যান সিটি জিতলেও দুই পয়েন্টে এগিয়ে থাকবে ক্লপের শিষ্যরা।
তবে এই জয়ে আগামী মৌসুমের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার স্বপ্ন উজ্জ্বল করেছে চেলসি। ৩১ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে চতুর্থ স্থানে। সমান ম্যাচে তিনে থাকা লেস্টার সিটির পয়েন্ট ৫৫। ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। পয়েন্ট সমান হলেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় তালিকার ষষ্ঠ স্থানে উইলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্স।
দিনের আরেক ম্যাচে সাউথ্যাম্পটনকে ২-০ গোলে হারিয়ে জয়ের পথে ফিরেছে আর্সেনাল। ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে আছে তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।