নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সেই দুই দল। সেই একই ভেন্যু। ঠিক যেন মাস তিনেক আগের লিগ কাপের ফাইনালের পুনরাবৃত্তি। লিভারপুল দাপট দেখালেও দিক না হারিয়ে পাল্টা আক্রমণে ভীতি ছড়াল চেলসি। পরতে পরতে উত্তেজনায় ঠাসা লড়াই নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় পেরিয়ে গড়াল টাইব্রেকারে। স্নায়ুচাপের রোমাঞ্চকর সেই লড়াইয়ে জিতে এবার এফএ কাপ জয়ের উল্লাসে মাতল ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। গতপরশু রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের শিরোপা লড়াইয়ে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় ছিল গোলশুন্য ড্র। পরে পেনাল্টি শুট আউটে ৬-৫ গোলে জেতে লিভারপুল।
চেলসির দ্বিতীয় শট নিতে এসে পোস্টে মেরে বসেন অধিনায়ক সেসার আসপিলিকুয়েতা। লিভারপুলের প্রথম চার শটের সবগুলোই জালের দেখা পাওয়ায় নির্ধারিত পাঁচ শটেই ম্যাচ শেষ হয়ে যেতে পারত; কিন্তু তাদের শেষ শট নিতে আসা মানের প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে লড়াইয়ে নতুন করে প্রাণ ফেরান চেলসি গোলরক্ষক এদুয়াঁ মঁদি। তবে তার গড়ে দেওয়া ভিতে ইমারত গড়তে পারেনি চেলসি। সাডেন ডেথের দ্বিতীয় শট নিতে গিয়ে ব্যর্থ হন ম্যাসন মাউন্ট, তার শট ঠেকিয়ে দেন আলিসন। আর কস্তাস সিমিকাসের পরের শটটি জাল স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়ে লিভারপুল।
ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় সেরা প্রতিযোগিতাটিতে তারা এই নিয়ে আটবার চ্যাম্পিয়ন হলো, ২০০৬ সালের পর প্রথম। আর চলতি মৌসুমে দ্বিতীয় শিরোপা জিতল দলটি। গত ফেব্রুয়ারিতে টমাস টুখেলের দলকেই টাইব্রেকারে হারিয়ে লিগ কাপ জিতেছিল লিভারপুল। সেই সাথে ১০ বছরের পুরনো ক্ষতে প্রলেপ দিল ‘অল রেড’ নামে পরিচিত দলটি। এর আগে ২০১২ সালে সবশেষ প্রতিযোগিতাটির ফাইনালে উঠেছিল তারা। সেবারও প্রতিপক্ষ ছিল চেলসি; সেই লড়াইয়ে জিতেছিল ‘ব্লজ’ নামের স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের দলটি।
চলতি মৌসুমে এই নিয়ে চারবার দেখা হলো দল দুটির। টাইব্রেকারের জয়-পরাজয় বাদ দিলে প্রতিবারই লড়াই শেষ হলো সমতায়। সেই সাথে কোয়াড্রপল জয়ের আশাও টিকে রইল ক্লপের শিষ্যদের। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠা লিভারপুল অবশ্য প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা লড়াইয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। শেষ দুই ম্যাচে তাদের জিততে তো হবেই, সেই সঙ্গে প্রার্থনা করতে হবে যেন ম্যানচেস্টার সিটি হারে।
চেলসির জন্য ব্যর্থতার গ্লানি অনেক বেশি। দুটি প্রতিযোগিতার শিরোপা জয়ের খুব কাছে গিয়েও ফিরতে হলো খালি হাতে, মৌসুমটাও শেষ হচ্ছে শূন্য হাতে। একই সঙ্গে অপ্রীতিকর একটা রেকর্ড গড়ল তারা; ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে এফএ কাপে টানা তিন বছর ফাইনালে উঠে হারল আটবারের চ্যাম্পিয়নরা (২০২০ সালে আর্সেনালের বিপক্ষে ও গত বছর লেস্টার সিটির বিপক্ষে)।
এই জয়টা দলীয় হলেও একজনের জন্য ‘বিশেষ’ কিছু- ইয়ুর্গেন ক্লপ। ২০১৫ সালের অক্টোবরে লিভারপুলের কোচের দায়িত্ব নেন এই জার্মান। তখন তারা লিগ টেবিলের মাঝামাঝি সারির একটি দল। সঙ্গে অনেক বছরের শিরোপা খরা। সেই দলটি ধীরে ধীরে গোছাতে থাকেন এ কোচ। এরপর জিততে থাকেন একের পর এক শিরোপা। আগের দিন এফএ কাপ জয়ের মাধ্যমে সম্ভাব্য সব শিরোপাই জিতে নিলেন ক্লপ। ইংল্যান্ডে শিরোপা জয়ের একটি বলয় পূরণ করলেন এ জার্মান।
লিভারপুলের হয়ে ক্লপের অর্জনগুলোর মাত্রাও অনন্য। এক ইংলিশ লিগের শিরোপার আক্ষেপ ঘোচান ৩০ বছর পর। আগের দিন ১৬ বছর পর এনে দিলেন এফএ কাপ। এর আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপাও আনেন ১৪ বছর পর। উয়েফা সুপার কাপ চ্যাম্পিয়নও হয় দলটি ১৪ বছর। কিছুদিন আগে পাওয়া কারাবাও কাপটা পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১০ বছর। আর ক্লাব বিশ্বকাপ তো প্রথমবারের মতো এনে দিয়েছেন ক্লপ। সবমিলিয়ে অবিশ্বাস্য।
এ মুহূর্তে তাই লিভারপুলের সবচেয়ে আদুরে মানুষটির নাম ক্লপ। দলে হয়তো দুর্দান্ত কিছু খেলোয়াড় রয়েছে। ২০১৫ সালে যোগ দেওয়ার পর কেবল অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসন, জেমস মিলনার ও ডিভক ওরিগি রয়েছেন পুরনো খেলোয়াড় হিসেবে। আর বাকি সব মাঝারী সারির খেলোয়াড়দের বেছে বেছে দলে টানেন এ জার্মান। তখন তাদের প্রায় কেউই তারকা ছিলেন না। এ জার্মান কোচের অধীনে তারাই এখন তারকা বনে গেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।