বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নাটোর তেবাড়িয়া এলাকার ওমর ফারুক মিঠু (৪০) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পরকীয়ার কারণে ভাসুরের সঙ্গে মিলে মিঠুকে তার স্ত্রী আম্বিয়া বেগম (৩০) হত্যা করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ খুন রহস্যের তথ্য উন্মোচন করেন পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা। পুলিশের কাছে ও আদালতে রোমহর্ষক এ হত্যাকাÐের বর্ণনা দিয়েছেন আম্বিয়া।
পুলিশ সুপার জানান, গত বুধবার ওমর ফারুক মিঠুর লাশ বাড়ির অদূর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। রাত সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ করে মিঠুর স্ত্রী আম্বিয়া চিৎকার করে ওঠেন এবং বলেন- তার স্বামীকে কে বা করা হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে। এ সময় আম্বিয়া জানান- মিঠুর বউ বাড়ি আছ নাকি বলে অজ্ঞাত লোক ডাকতে থাকে। তিনি দরজা খুলে দেখেন সেখানে কেউ নেই। একটু দূরেই তার স্বামীর লাশ পড়ে রয়েছে।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, এ ঘটনায় মিঠুর বাবা আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ তদন্ত নামে। তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে গোপন অনুসন্ধান, লাশের সুরতহাল রিপোর্ট, লাশের অবস্থান, ঘটনার পারিপার্শিকতা, পারিবারিক বিষয় বিশ্লেষণ ও আম্বিয়ার চারিত্রিক বিষয়টি জানতে পেরে তাকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে রোমহর্ষক এ হত্যকাÐের প্রকৃত চিত্র।
জিজ্ঞাসাবাদে আম্বিয়া জানান, তিনি মিঠুর তৃতীয় স্ত্রী। তাদের চার বছর আগে বিয়ে হয়েছে। কিন্তু মিঠু ছিল শারীরিকভাবে অক্ষম। এ অবস্থায় মিঠুর বড় ভাই ভাসুর আব্দুল কাদেরের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মিঠু ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করায় প্রায়ই বাড়ির বাইরে রাত কাটাতেন। এই সুযোগে আম্বিয়া ও কাদের মিলিত হতেন। তাদের অবৈধ সম্পর্ক প্রায় চার বছর ধরে চলছিল। একপর্যায়ে কাদের আম্বিয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু মিঠু বেঁচে থাকলে তা সম্ভব নয়। এ কারণে দুজন মিলে মিঠুকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রাতে মিঠুকে পান্তা ভাতের সঙ্গে তিনটি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খেতে দেয়া হয়। এরপর মিঠু গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলে রাত দেড়টার দিকে আব্দুল কাদের ঘরে ঢুকে মিঠুর গলায় গামছা দিয়ে ফাঁস দেন। এ সময় আম্বিয়া মিঠুর দুই পা চেপে ধরে থাকে। প্রায় ১০ মিনিটে ঘুমের মধ্যে মিঠু মারা যায়। মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ গুমের জন্য বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত পুকুরে ফেলতে দুজন মিলে লাশ নিয়ে গেটের বাহিরে বের হলে রাস্তায় রাতে চলা একটি গাড়ীর সামনে ভড়কে যান। এ সময় বাড়ির অদূরেই মিঠুর লাশ ফেলে রেখে তারা বাড়িতে ফিরে আসেন। এরপর মিঠুর স্ত্রী চিৎকার করে তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে বলে সকলকে জানান।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, আম্বিয়ার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ আব্দুল কাদেরকে (৪২) গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। অপরদিকে আম্বিয়া হতাকাÐের কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল হাসনাত, নাটোর সদর থানা পুলিশের ওসি জাহাঙ্গীর আলম ও ডিবির ওসি আনোয়ারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।