শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
বিভূতিযুক্ত হন্ত্রী
রকি মাহমুদ
অবলীলায় সাবলীল দেশান্তর ছুটে চেলেছে অদৃশ্য হন্ত্রী
যেন বিভূতিযুক্ত হন্ত্রীর আসঙ্গলিপ্সায় মেতেছে তাবৎ মানব কুল।
তস্যাকে নিয়ে ঘরান্তর দারুণ ফিসফাস উহান, চিন, রোম ট্রাম্প খেলা
স্বৈরিণী শতাব্দী যেন পরাগকাতর প্রসন্নে মেলেছে চৌষট্টি কামকলায়।
সময় যেন বিপন্ন নৈরাশ্যে চুরি করে নিচ্ছে নান্দনিক অপমৃত্যু
কারুকার্যখচিত অভিমান আর শৈল্পিক উৎকর্ষে হারাচ্ছি চেনা স্বজন।
মোহাম্মদ মাসুদ
অসহায়ত্ব-দলিল
পৃথিবীর বুকে মহামারী আসে- কোভিড-১৯-ও এসেছে। এক মহাপ্রলয় হয়ে।
পৃথিবীর বুকে এক নতুন পাঠশালা খুলে বসেছে। সকল কিছু ভিন্ন সমীকরণে বুঝাতে।
সামাজিক-মানবিক সকল হিসেব চ‚র্ণবিচ‚র্ণ করে দিয়েছে।
ভ্রাতৃত্ব-আত্মীয় সকল সম্পর্ক এক দাবানলে পুড়ছে।
প্রেমিক-প্রেমিকার ঠোঁট অনির্দিষ্ট দেয়ালে
বিষাদের আলপনা এঁকে চলেছে ।
শিক্ষার্থীর প্রিয় বেঞ্চে বাসা বাঁধছে হাইওয়ের ধুলো।
এর ভেতরও প্রকৃতি নতুন সাজে সজ্জিত হয়।
সমুদ্রের তীরে আধিপত্যের বিজয়-জয়ন্তী
স্থাপন করে- ডলফিনের উচ্ছ্বাস।
সাগরলতা-কাঁকড়ার স্নিগ্ধ বৃষ্টিতে
ভিজতে থাকে সৈকতের তপ্ত বালু।
পৃথিবী আমাদের অসহায়ের খাঁচায়
বন্ধি করে বাঁচিয়ে রাখে, বাঁচিয়ে রাখতে চায়।
আর্তনাদ
আমিন রুদ্র
পৃথক-সঙ্গনিরোধ সতর্কীকরণ!
আশা রাখছি দূরের অনির্দিষ্টতায়
উন্মুক্ত সম্ভাবনা: দু’দিকে নাড়িয়ে চলে
অনির্ণীত গন্তব্য।
বিচ্ছিন্ন দূরত্বেও আমাদের দেখা
হতো না দীর্ঘসময়। অপেক্ষার পর এলো
ছোঁয়াচে ঊনিশ ধাপ। করোনা, আকাল।
ঊনিশ-বিশে যুদ্ধ দুনিয়া নিশ্চল, স্থির
বন্ধ দরজা ঢাল, দূরত্ব অস্ত্র।
জানোই যোদ্ধা কারা আমরা শত্রু র দিকে-
যদি ছুঁয়ে ফেলি চোখ অপেক্ষায় থেকে
যদি খুবই গোপনে ভাইরাস ঢোকে
ফুসফুস ফুলে ওঠে বিঘ্নিত শ্বাসের চাপ
বাড়ে বুক-মাথা-দেহে। শ্বাসকষ্টেও
তোমার আলাদা ছাপ ব্যঞ্জনে যুক্ত রয়-
আকালের কবিতায় মানুষ না বাঁচে যদি
বিধিবদ্ধ নিয়মে বিভ্রাট বন্দীর চোখে
মানবিক আর্তনাদ-
অমানিশা কাল
সুমন আমীন
সরে যাও অমানিশা কাল
সবুজ বসন্ত আসুক পুষ্পের কারুকাজে।
মানুষের চোখ আজ ভয়ের সাম্রাজ্য
বাতাস ছেয়েছে করুন মরণ নেশা
প্রলয়ের সুর পৃথিবীর পথে মাঠে ঘাটে
আজ পাখি ভুলে গেছে গান
ফুল ফোটায় বৃক্ষের শত অলসতা
সবুজের চোখ ধূসর চশমা ঢাকা
পৃথিবীর পুরাণ হারায় শিশুর হাসির দ্যুতি
মারণিক ভয়ে কেঁদে ওঠে
পাহাড়, পর্বত, নদী, ফুল, পাখি সব;
মানুষের এই অসহায়ত্ব দেখেছে কখন কে?
যে মানুষ জয় করে চাঁদের দূরতা
গ্রহান্তরে খুঁজে জীবনের জয়গান
উঁচু এভারেস্ট থেকে গহীন সমুদ্র
যার পদচারণায় খেলা করে-
অচেনা ভয়ের কাছে সেই শ্রেষ্ঠতা এখন বড় অসহায় দেখো!
স্বচ্ছ কাচে বর্ণালী ভোর হও সচেতন
এনাম রাজু
ঘুমের ভেতর কে আমারে এক মুঠো প্রেম ঢিল ছুড়েছে
কে আমারে প্রেমের গানে মন মাতিয়ে মন কেড়েছে?
সে কি জানে প্রেমের বাতাস আজকে আমার খুব প্রয়োজন
আমার ঘরে প্রেম অভাবে দীর্ঘশ্বাসে উজাড় বন।
আমি তারে বলছি ডেকে এমন সকাল হতো যদি
আমার মতো প্রেমের ঠোঁটে চুমু আঁকতো মরা নদী
চুমু আঁকতো ঝলসে পড়া আকাশচ্যুত নক্ষত্রটাও-
ক্ষরার বুকে শুকিয়ে যাওয়া ডালপালাহীন বৃক্ষটাও।
গাছহারা সেই বেদুঈন পাখি খুব করে তাতে বাঁধতো গান
এ্যাকুরিয়ামের মাছগুলো সব ভুলতো তাতেই অভিমান।
কানে কানে বললো ফের হাসবে মানুষ হাসবে বন
খুব কাছে আজ স্বচ্ছ কাচে বর্ণালী ভোর হও সচেতন।
অভিশাপ
বীথি রহমান
হে পৃথিবী, তোমার বিস্তৃত বুকের জমিনে হরিৎ প্রজাপতির দল
বিমল বাতাসে শালিকের নিশ্চিন্ত ভাতঘুম
জোনাকির কানামাছি খেলায় হাসিতে মত্ত মুক্ত নীলকমল
এদিকে তুমি মেতেছ প্রতিহিংসার মহোৎসবে
শবদেহে ঢেকে গেছে সব...বাতাসে মৃত্যুর তরানা বাজে...অগুণতি কফিনে মোড়ানো ভারী দীর্ঘশ্বাস...হিঙুল অশ্রুজলে ধুয়ে যাচ্ছে জন্মের পাপ
অথচ এইসব মানুষেরা তোমায় তুমুল চাইতো
আজ কার জন্য এতোসব আয়োজন?
অভিশপ্ত নৈবেদ্য নিয়ে কী করে বইবে রক্তের অভিশাপ?
বন্দিজীবন
মজনু মিয়া
আকাশের চাঁদ তারা ও সূর্যেরও বিপদ আসে
পাখি নদী গাছপালা জীবজন্তু
আকাশ পাতাল ডানে বামে উর্ধ্ব নিচে সর্বত্র,
এখন বন্দিজীবন ঘরে ঘরে দীর্ঘশ্বাস
নাক মুখ চোখ কান হাত পায়ের যত বিপদ
অনাদি ভাবনার মাঝে ডুবে আছি
কবে মুক্তি পাব বন্দিত্ব থেকে।
হাহাকার চারদিকে শেষ কোথায় জানা নাই
পথ ঘাট দোকান পাট আলু বেগুন চাউল ডাউল
পটল আদা রসুন পিঁয়াজ মসলারা দুঃখ ভারাক্রান্ত।
কাঁদে আভোগে নিঃশব্দ কান্না শূন্য উনুন জল ফোটে
আগুনে ভেতরে হাহাকার কিছু নাই দেহের ভিতর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।