শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
(১৯০৪-১৯৮৩)
মোরশেদুল ইসলাম অনূদিত
ঢেউ
মৎস্যকন্যাদের মতো ঢেউগুলো ঘিরে ধরে আমাদের;
তাদের দীর্ঘ রুপালি চুল, উজ্জ্বল স্বচ্ছ ত্বক।
তাদের নরম মাথায় আমাদের নৌকো কাঁপায়,
চেঁচিয়ে বলে, ‘যাত্রী, কোথায় সে কূল, যাচ্ছ যেথা?’
না কোনো কূল, না কোনো বাতিঘর,
জলের চেয়েও গভীর, তোমার পথের অন্ধকার।
ঢেউ রে ঢেউ, চলো হাঁটি, খুঁজি একসাথে,
শক্ত শিলা যা হানবে আঘাত আমাদের মাথায়!
প্রত্যাশিত
না কোনো রোগী করে সকালের অপেক্ষা,
না কোনো তাজা মৃত, কোনো কবরের।
না কোনো শয়তান করে কোনো পাপের,
যেমনটা করেছি আমি তোমার অপেক্ষা।
আমি আর চাই না তুমি আসো,
তোমার শূন্যতাতেই পেয়েছি তোমায়;
আমার কল্পনায় ছায়া ফেলো তুমি,
এসো না, কী আর দরকার এখন?
দরজা খোলো
সংবাদ আছে,
দূর দূরান্তের।
ঠোঁটে ঠোঁটে গান,
তোমার স্বাধীনতার গান।
আমরা এসেছি, জানতে দাও।
হৃদয়ে হৃদয়ে সাড়া পড়ুক।
জড়ো হতে দাও জনতাকে,
অনন্তের দিগন্ত থেকে।
জাগো প্রিয়া
জাগো প্রিয়া, জাগো, নিভে গেছে নক্ষত্রেরা;
পাহাড়ের পিছনে জন্ম নিচ্ছে বিষণ্ন দিন।
রোজ সকালে সূর্য দেখা মেয়েরা,
ঘষছে তাদের ঘুম ঘুম চোখ।
জাগো প্রিয়া, শব্দ আসছে ভিতর থেকে,
আঁধার চলে গেছে, গেছে পালিয়ে;
প্রথম আলো, তোমার দুয়ার থেকে,
তাড়িয়ে দিচ্ছে একটা ম্লান ছায়া।
জান, আলো কড়া নাড়ছে আমার দুয়ারে,
টানছে আমার অলস চোখ,
জড়িয়ে ধরেছে ভিতরে, বিচ্ছেদ রয়েই গেল,
এই আলোয় আমার যায় যায় দম।
রাত্রির জন্য কবিতা
আমার হৃদয় একটা ফুল, দিনগুলো মৃত;
আসো, আসো, ফোটো এই রাতে!
যেন সারাটাদিন আমায় ভেবে ভেবে
রাতভর বাজছে আমার কানে।
রাতে আমার জন্য দুঃখ পেয়ো না,
আসো, হৃদয় ঝরুক এ দেহ থেকে;
ছেড়ে যাও দিনের বেলা এ দেহ,
পালায়ে যাও আমার ছায়া নিয়ে এ রাতে!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।