শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
চতুর্পদী
আশুতোষ ভৌমিক
১.
নদী তো যায় না সাথে
পানি চলে যায়
করোনারাও চলে যায়
মৃত্যু যায় না
২.
তোমার সাথেই খেলব আমি
তোমার সাথেই চলব
তোমার সাথেই তুুমি হব, ও নদী
পাঠ করব তোমার সরণী
মোহাম্মদ মাসুদ
সরল সমীকরণ
পৃথিবীতে মৃত্যুও কত সহজ হয়।
জীবনকে কত মূল্যাবন করে; কত তুচ্ছও করে!
হিসেব জটিলতায় আবদ্ধ হয়- আধুনিক বিশ্ব।
ভাবতে হবে নতুন করে- করোনার হিসেব তাই শিখায় তার লীলায়।
অথচ, আমার হিসেব হয়- আমার মতো। আমার চাওয়া হয়- মূল্যহীন।
আমার কষ্ট হয়- অধিকারহীন। আমার কষ্ট- আমার থাকে।
নিঃস্তব্ধতায় বাস করে।ভাবনার পুরনো হিসেবে আমাকে বাঁচিয়ে রাখে; আমি বেঁচে থাকি। বেঁচে থাকার শপথবাক্য পাঠ করি।
যুক্তিহীন সবকিছু নিয়ে ভাবতে থাকি।
অবিশ্বাসের কয়েদখানা
এনাম রাজু
বিশ্বাস হারালে মানুষ লাশে পরিণত...
ক্রমেই অবিশ্বাসীর দখলদার হচ্ছি
গতোকাল প্রেমিকার ঠোঁট দেখে কেঁপেছে হৃদয়
দূরত্বে আছি যতোটুকু থাকা যায়।
পাশের কক্ষে শুইয়ে কাঁশি দিচ্ছে মা
তার পাশে শুইয়ে পোষা বিড়াল আমি নেই আমার যাওয়া নিষেধ!
আমি বিশ্বাস করতে পারি না
আমার চোখকে, বিশ্বাস করতে পারি না হাতকে
বন্ধ দরজার হাতলটাকে অবিশ্বাস করে আলো দেখি না
নিরুপায় হয়ে পড়ে থাকি বিছানায়,
বিছানাকে সরিয়ে দেই অবিশ্বাসের দোলনায়।
আমি আমাকে বিশ্বাস করতে পারি না
তাই ছুঁইয়ে দেখি না আমার হৃদয় যেনো অবিশ্বাসে ধোঁকায় বন্দী হয়ে
লাথি মেরেছি ঈশ্বরের কলিজায়!
হায় এতো মহাপাপ! আমি বিশ্বাস করি না আজ
যাবতীয় বস্তুর প্রাচূর্য বৈভব, করুণা, প্রণয়।
তুমি নেই, করোনায় আক্রান্ত এ শহর
অর্ণব আশিক
অতিদ্রুত জনশূন্য হচ্ছে এ শহর
তোমার শরীর আর গোধূলি ছোঁয় না
জেব্রা ক্রোসিয়ের সাদা দাগ পরে আছে হারমোনিয়ামের ঘাটের মত
কোভিড নাইন্টিন এখন বেহালার করুণ সুর
তুমি নাই এ শহর মৃত প্রায়।
ফেরিঘাট শুনশান, গোধূলি লগ্নে অপটু আঙুলে
কেউ তুলেনা সেলফি, আপলোড হয়না সূর্যাস্তের রং
নভেল করোনায় আক্রান্ত সব
তুমি নাই, কি করে বুঝাই
এ শহর যন্ত্রণার
সম্পর্ক এখন দূরত্ব মেপে চলা, নিজের প্রোফাইল
নিজের করে রাখা
ভালোবাসাবাসি পেখম মেলে কিলোবাইট মেগাবাইটে
কফি সপ, রাস্তার পাশে রমিজের টি স্টল
ঝালমুড়িওয়ালা পুরনো ল্যান্ডস্কেপ।
করোনার থাবায় বুটিকের কানামাছি, মনভোলানো সেলোয়ার আসেনা আর বিকেলের ফিকে হওয়া রোদে
শরীরের নম্রতা মেখে স্বরগ্রামের সুর শোনে নিজ ঘরে, ঘর বন্দি চুপচাপ।
করোনার ভয় দাপাদাপি করে বুকের ভিতর
এ শহর কাঁদে তুমি হীন
অশ্রুজলে ভাসে এ শহর।
করোনা তুমি চলে যাও চিরতরে
মিজানুর রহমান তোতা
তুমি বড় বেয়াড়া করোনা তোমার আগমনে ভেবেছি,
এখন পদে পদে উপলব্ধি করছি, দিনরাত কেঁদেছি,
তুমি এতো ভয়ঙ্কর, সবাই ভীত সন্ত্রস্ত, কাঁপছে দেশ,
বিশ্বের সবখানে সমানতালে করোনা তোমার বিচরণ।
তোমার দানবী আবির্ভাবে মুহূর্তে কেঁপে উঠলো বিশ্ব,
করোনা থেকে রক্ষা পেতে অহঙ্কার দাপুটে বাঘ সিংহ
ছোট বড় উঁচু নীচু হয়েছে একাকার, ধরেছে কাঁপুনি।
পালাও পালাও, বাঁচাও বাঁচাও রব উঠেছে চারিদিকে।
আশ্চর্য ভুগোলপ্যাচে পড়েছি প্রচন্ড এক উল্কাকান্ডে,
বাতাসকেও সন্দেহ রক্তধারায় টান জীবন উপলব্ধি,
দাঁড়াও করোনার ধাক্কা, চোখের ইঙ্গিতে ইচ্ছার মৃত্যু,
সত্যমিথ্যার প্রচার গুজবে উৎকণ্ঠায় রূপ বদলায়।
আড্ডা ফুর্তি স্বপ্ন সাধ উল্কার বিস্ফোরণে সব থমকে,
কেউ কল্পনাও করেনি আকস্মিক করবে দলিতমথিত,
যুদ্ধকালীন তৎপরতা স্বাস্থ্য নিয়ম নীতি সচেতনতায়,
আতঙ্ক ভয়ভীতি চিন্তা মরার আগে মরা বাসা বেঁধেছে।
করোনা দোহাই তোমার চলে যাও, বিদায় চিরতরে,
ময়দানে রেহাই দাও, আর করো না সন্ত্রস্ত প্রাণঘাত,
অনেক হয়েছে আর না, ক্ষ্যান্ত দাও, লেজ গুটাও,
ভয়কে জয় করে বাঁচতে চাই, থাকতে চাই না ঘরবন্দি।
বিদায় স্যালুট, তোমাকে সত্যি মনে রাখবো আজীবন।
প্রত্যাশা একটাই তুমি যাও, রেখে যাও শুদ্ধের ভয়।
জয় সুনিশ্চিত
সুপান্থ মিজান
আমরা মানুষ- আশরাফুল মাখলুকাত
আমাদের সৌর্য-বীর্যে মহিমান্বিত পৃথিবী
ভূলোক দূলোক পরাভূত-অবনত মানুষেরই চরণে
আর বাঙালী? সেতো সাহসের বর পুত্র!
আকাশে বুক রেথকে সূর্যকে ছিনিয়ে এনেছে।
আগুনে ঝাঁপ দিয়ে তুলে এনেছে মুক্তো
স্বাধীনতার কপালে পতাকার টিপ উড়িয়েছে
রক্ত আর লাশের স্রোত....!
ঘূর্ণিঝড় টর্নেডো ভূমিকম্প-ভূমিধ্বস আর
কাল বৈশাখী যে জাতি কে দাবিয়ে রাখতে পারে না,
দেশবিদেশ পাহাড়-পর্বত সাগর মহাসাগর--
পাড়ি দিয়ে আসা ক্লান্ত পথিক
তুমি আর ভয় দেখিও না।
আমি বাঙালি।
বাঙালি কখনও হারতে শিখেনি- হারতে জানেও না
তোমাকে জয় করতে অস্ত্র লাগবে না--
প্রয়োজন সচেতন হওয়া,নিয়ম মাফিক চলা।
আমার আছে সচেতন জনগন-ভূ-সম্পদ
আর অকুতোভয় আত্মবিশ্বাস।
অতএব জয় আমাদের সুনিশ্চিত।
দীর্ঘ হচ্ছে দিন
লুৎফুন নাহার লোপা
অসুস্থ শহর থেকে ভেসে যাচ্ছে সম্মৃদ্ধি
হৃদপিন্ড থেকে সরে যাচ্ছে হৃদপিন্ড,
যুদ্ধের উদ্দীপনায় কেঁদে যাচ্ছে পাখিরা
আর বৃষ্টি চাইছে খুব করে,
এবার বৃষ্টি হওয়া জরুরী।
যারা বাক্স ভর্তি হতাশা ছড়াতে ছড়াতে
গোপন করছে প্রিয় তার সে চোখদুটো,
আর
প্রেমহীন শরীরে ঝরিয়ে নিচ্ছে মৃত্যুকে।
এসব দেখে দেখে দীর্ঘ হচ্ছে দিন
আমরা বেধে নিচ্ছি নিজেদের হাত পা,
শরীর থেকে সময়ের অবয়ব পযন্ত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।