পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ কে এম ফজলুর রহমান মুনশী
রোজার জন্য জান্নাতের দরজা নির্ধারিত
জান্নাতের একটি দরজার নাম ‘রাইয়্যান’। এর ধাতুগত অর্থ যা পিপাসার বিপরীত। রোজাদার যেহেতু নিজেকে পানি থেকে বিরত রাখে, যা মানুষের খুবই প্রয়োজন, সেহেতু তার যথাযথ প্রতিদান হিসেবে আখেরাতে তাকে পান করানো হবে। যার পর কখনো সে তৃষ্ণার্ত হবে না। এ প্রসঙ্গে হযরত সাহাল ইবনে সা’দ থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সা: বলেন : জান্নাতে আটটি দরজা রয়েছে। এর একটি দরজাকে রাইয়্যান বলা হয়। তা দিয়ে রোজাদার ব্যতীত কেউ প্রবেশ করবে না। (সহীহ বুখারী) : হাদীস নং-৩০৮৪; সহীহ মুসলিম : হাদীস নং-১১৫৫; জামে তিরমিজী; হাদীস নং-৭৬৫; সুনানে নাসাঈ : খ--৪, পৃষ্ঠা-১৬৮, সুনানে ইবনে মাজাহ: হাদীস নং- ১৬৪০; মুসনাদে আহমাদ : খ--৫, পৃষ্ঠা-৩৩৫)
সহীহ বুখারীর অপর বর্ণনায় আছে : নিশ্চয়ই জান্নাতে একটি দরজা আছে। যাকে বলা হয় রাইয়্যান। কেয়ামতের দিন রোজাদার তা দিয়ে প্রবেশ করবে। তাদের ব্যতীত কেউ সেখান দিয়ে প্রবেশ করবে না। বলা হবে : রোজাদারগণ কোথায়? ফলে, তারা দাঁড়াবে। তাদের ব্যতীত কেউ তা দিয়ে প্রবেশ করবে না। যখন অন্যরা প্রবেশ করতে চাইবে, বন্ধ করে দেয়া হবে। অতঃপর কেউ তা দিয়ে প্রবেশ করবে না। (সহীহ বুখারী : হাদীস নং- ১৭৯৭)।
হযরত আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন : আল্লাহর রাস্তায় যে দু’টি জিনিস খরচ করল, তাকে জান্নাতের দরজাসমূহ থেকে ডাকা হবে, হে আল্লাহর বান্দাহ। এটা কল্যাণ। যে সালাত আদায়কারী তাকে সালাতের দরজা থেকে ডাকা হবে। যে মুজাহিদ তাকে জিহাদের দরজা থেকে ডাকা হবে, যে রোজাদার তাকে রাইয়্যান দরজা দিয়ে ডাকা হবে। যে দানশীল তাকে সদকার দরজা থেকে ডাকা হবে। আবু বকর (রা:) বললেন : হে আল্লাহর রাসূল। আমার মাতা-পিতা আপনার ওপর উৎসর্গ। যাকে এক দরজা থেকে ডাকা হবে, তার বিষয়টি পরিষ্কার। কিন্তু কাউকে কি সব দরজা থেকে ডাকা হবে? তিনি বললেন : হ্যাঁ, আমি আশা করছি তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত। (সহীহ বুখারী : হাদীস নং-১৭৯৮; সহীহ মুসলিম : হাদীস নং-১০২৭)।
সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের অন্য শব্দে এসেছে; জান্নাতের প্রহরী তাকে ডাকবে, প্রত্যেক দরজায় প্রহরী বলবে : হে অমুক! আস। (সহীহ বুখারী : হাদীস নং-২৬৮৬; সহীহ মুসলিম : হাদীস নং-১০২৭)।
ইমাম আহমাদের বর্ণিত শব্দ এই : প্রত্যেক আমলের লোকের জন্য জান্নাতে একটি করে দরজা আছে। তাদেরকে সে আমল দ্বারা ডাকা হবে। রোজাদারদের একটি দরজা রয়েছে, তাদেরকে সেখান থেকে ডাকা হবেÑ যাকে বলা হয় রাইয়্যান। আবু বকর (রা:) বললেন : হে আল্লাহর রাসূল! কাউকে কি সব দরজা থেকে ডাকা হবে? তিনি বললেন : হ্যাঁ, আমি আশা করছি তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হে আবু বকর। (মুসনাদে আহমাদ : খ--২, পৃষ্ঠা ৪৪৯); হযরত আবু বকর (রা:)-এর উদ্দেশ্য থাকে জান্নাতের এক দরজা দিয়ে ডাকা হলো, তার জন্য এটাই যথেষ্ট। প্রত্যেক দরজা থেকে ডাকার প্রয়োজন নেই। কারণ মূল উদ্দেশ্য জান্নাতে প্রবেশ করা। যা এক দরজা দিয়েই সম্পন্ন হয়। তারপরও কি সব দরজা থেকে ডাকা হবে? পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা: তাঁকে হ্যাঁ বলে উত্তর প্রদান করলেন। মূলত রোজার ফজিলত এই যে, উহার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা থেকে ‘রাইয়্যান’ নামক দরজাটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। বস্তুত, জান্নাতের দরজায় ফেরেশতাদের থেকে প্রহরী নিযুক্ত রয়েছে। তারা প্রত্যেক আমলকারীকে তার আমল অনুসারে তার জন্য নির্দিষ্ট দরজা থেকে ডাকবে। (ফাতহুল বারী : খ--৭, পৃষ্ঠা-২৯)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।